করোনা মোকাবিলায় দীর্ঘ লকডাউন চলাকালীন শহরের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বেতন দেওয়া নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলার রায়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, ৩১জুলাই পর্যন্ত যে বকেয়া পড়ে রয়েছে তার সমস্ত মিটিয়ে দিতে হবে ১৫ অগস্টের মধ্যে। কমপক্ষে ৮০ শতাংশ বকেয়া বেতন দিতে অভিভাবকদের। আর যাঁরা পারবেন তাঁদের ১০০ শতাংশই মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি সঞ্জীব ব্যানার্জি ও মৌসুমি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টে যায় বেশ কয়েকটি স্কুল।

সেই মামলাতেই এবার নয়া নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলিতে ফি-বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলা ফিরল কলকাতা হাইকোর্টেই। ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের গঠন করা দুই সদস্যের কমিটি ও তার কার্যকলাপের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। জানানো হয়েছে, বেসরকারি স্কুলের আয়-ব্যায়ের হিসাব খতিয়ে দেখবে না সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, আবারও নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানাতে পারেন মামলাকারী স্কুলগুলো। হাইকোর্ট ফের শুনানি করে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকরী হবে না কমিটি।


আরও পড়ুন : জঙ্গিদের সঙ্গে এনকাউন্টার চলছে ভোর থেকে, অশান্ত বারামুল্লা

উল্লেখ্য, করোনা মহামারি আবহে চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে বেসরকারি স্কুলগুলিতে টিউশন ফি ছাড়াও অন্য বিভিন্ন খাতে যে বিপুল অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়, সেই বাড়তি টাকা নেওয়া বন্ধ হোক। এমনই দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রায় ১৫ হাজার অভিভাবক। সেই মামলায় রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিলের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলায় দুই সদস্যের কমিটি গড়ার নির্দেশও দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।


এর প্রেক্ষিতে স্কুলগুলিকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। বেসরকারি স্কুল-গুলির হিসাব খতিয়ে দেখতে গত ১৮ অগাস্ট সুরঞ্জন দাসের নেতৃত্বে ২ সদস্যের কমিটি গড়ে দেয় বিচারপতি সঞ্জীব ব্যানার্জীর ডিভিশন বেঞ্চ। সেই সঙ্গে ১৫ আগস্টের মধ্যে অভিভাবকদের বকেয়া ফি-র ৮০ শতাংশ মেটাতে বলেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। যা নিয়ে বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে ছিলেন অভিভাবকরা।

লকডাউন পর্বের শুরু থেকেই শহরের প্রায় প্রতিটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অভিভাবকদের দায় ছিল, স্কুল হচ্ছে না। শুধুমাত্র টিউশন ফি নেওয়া হোক। বাকি ফি তাঁরা দেবেন না। এই আর্জি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি স্কুলগুলোর সামনে অভিভাবকরা লাগাতার বিক্ষোভ-আন্দোলন করেন। সেই পরিপ্রক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন বিনীত রুইয়া নামে এক অভিভাবক। তার প্রেক্ষিতেই মামলা এতদূর গড়ায়।

আরও পড়ুন : জটিল হচ্ছে মেট্রো-যাত্রা, লাগবে ই-বোর্ডিং পাস
