এই সিপিএমকে ধাক্কা মেরে পানা পুকুরে ফেলতে ইচ্ছে হয়! অভিজিৎ ঘোষের কলম

অভিজিৎ ঘোষ

সিপিএমের অবস্থা দেখে মনে হয়, ওদের এক ধাক্কা দিয়ে পানা পুকুরে ফেলে দিই।

কেন?

কলকাতা জেলা কমিটির সেই দাপুটে নেতার বক্তব্য, পানা পুকুরে কেউ ডুববে না, কিন্তু নোংরা জলে মাখামাখি হবে আর নাকে-মুখে সব ঢুকবে। জোর শিক্ষা হবে।

ফের প্রশ্ন কেন?

দলটা ছোট হতে হতে হাড়-মাস বেড়িয়ে পড়েছে। এই বাংলায় ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর একা লড়ার মুরোদ নেই। যে কংগ্রেসকে বলা হতো ৭২-৭৭ এর কালো দিনগুলোর নায়ক, তাদেরই ভরসায় দিন গুনতে হচ্ছে। আর দলের কর্মী প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছে বলে তাকে বহিষ্কার?

সুশান্ত ঘোষকে নিয়ে জেলা সিপিএম নেতা আর সংবাদিকের কথোপকথন, আমি তার শ্রোতা। এই নেতা সুশান্ত ঘোষের ভক্ত নন মোটেই। তবে যুক্তিবাদী। বিরোধী দলের সমালোচনা করলেও নিজের দলের সমালোচনা করতে ভুল করেন না। ফলে সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁর খোলামেলা কথাও হয়।

দলের সমালোচনা? এবার সিপিএম জেলা নেতা বলছেন, আচ্ছা আপনারাই বলুন সুশান্তর বহিষ্কারকে কেন সিপিএমের সোনার পাথরবাটি সিদ্ধান্ত বলব না! যুক্তিতে আসুন…
আমার প্রশ্ন, কী যুক্তি? তিনি বলছেন, তিনটি উদাহরণ দিচ্ছি, বলুন তাদের কেন দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি…

১. সর্বপ্রথমে বিনয় চৌধুরী। আশির দশকেই তিতিবিরক্ত তৎকালীন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব মন্ত্রী বিনয়বাবু বলেছিলেন, সরকারটা ঠিকাদারদের দালাল হয়ে গিয়েছে! বিনয়বাবু তারপরেও মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় ব্যক্তিই ছিলেন।

২. দ্বিতীয় নাম জ্যোতি বসু। ১৯৯৬ সালে কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় সিপিএম। সেই ঘটনা প্রসঙ্গে বসু বলেছিলেন, সরকারে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত সিপিএমের ঐতিহাসিক ভুল। জ্যোতি বসু দলের সিদ্ধান্তের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে আরও পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার আগে পর্যন্ত।

৩. তৃতীয় ব্যক্তি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। চোরেদের মন্ত্রিসভায় থাকব না বলে ১৯৯৩ সালে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রাইটার্স থেকে। দু’বছর পর মন্ত্রিসভায় ফেরেন। পরে মুখ্যমন্ত্রীও। কে শাস্তি দিয়েছিলেন বুদ্ধবাবুকে? কিংবা ‘দুঃসময়’ নাটক লেখার জন্য বুদ্ধবাবুকে কোন ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়েছিল? যে নাটকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সকলেই জানত, এটা আসলে রাজ্য সরকারের সমালোচনা, বাম সরকারই টার্গেট। তাহলে?

জেলা নেতা বলছেন, আসলে জানেন তো নরম মাটিতে বিড়াল…। শুনতে এটা কমিউনিস্ট পার্টি। কিন্তু ব্যক্তি বিশেষে সিদ্ধান্ত হয় এই দলে। আর তাই যদি না হয় তাহলে ২০০১ বিধানসভা ভোটে কোন ম্যাজিকে নন্দরানি ডল ১ লক্ষ ৮ হাজার ভোটে জিতেছিলেন? কীভাবে জিতেছিলেন, তা সকলেই জানতেন। কিন্তু তা খুঁজে বের করতে ক’টা কমিশন হয়েছিল? অবাধ রিগিংয়ের জন্য ক’জন শাস্তি পেয়েছিল? কেউ পায়নি। তখন জবাব ছিল মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধীদের। আর এখন হারলে শাসক দলের একই কথায় গায়ে শূলের মতো কথাগুলো বিঁধে কেন?

এবার সিরিয়াস ভঙ্গিতে সেই সিপিএম নেতা বললেন, সরে যান দাদা সরে যান। পানা পুকুর খুঁজছি। আমি না হেসে পারলাম না।

আরও পড়ুন : চাকরি দেওয়ার নামে প্রতিবন্ধী যুবকের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে

Previous articleBREAKING: চাম্পাহাটিতে ভয়ঙ্কর ব্যাঙ্ক ডাকাতি, লুট ২৫ লক্ষ টাকা
Next articleBig Breaking:  লাভপুর হত্যাকাণ্ডে মুকুলের নাম নিলেন ধৃত আনারুল