দলবিরোধী কথা লেখায় সুশান্ত ঘোষকে ৩ মাস সাসপেন্ড করলো আলিমুদ্দিন

দলবিরোধী কথা বলা এবং হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার মতো গুরুতর অভিযোগ এনেও অভিযুক্তকে কড়া শাস্তি দেওয়ার সাহস দেখাতে ব্যর্থ হলো আলিমুদ্দিন ৷

দলীয় কমিশনের নজরে দোষী প্রাক্তন দাপুটে মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ৷ এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে মাত্র ৩ মাসের জন্য তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করল সিপিএম। শুক্রবার সিপিএম রাজ্য কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সুশান্ত ঘোষ এদিনই বলেছেন, দলের তরফে তাঁকে কিছুই জানানো হয়নি৷

অতীতে একই ধরনের অভিযোগে সিপিএম অনেক হেভিওয়েটকে দল থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত করেছে৷ কিন্তু সুশান্ত ঘোষের ক্ষেত্রে নামমাত্র ‘শাস্তি’ দিয়ে কোনওক্রমে মান বাঁচালো রাজ্য সিপিএম৷ দলেরই একাংশের বক্তব্য, সুশান্ত ঘোষের জনভিত্তি থাকায় তাঁকে বহিষ্কার করার মতো কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস দেখাতেই পারলো না সিপিএম৷

সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর লেখা ‘বামফ্রন্ট জমানার শেষ দশ বছর’ বইয়ে সরাসরি দলবিরোধী কথা বলা হয়েছে৷ একইসঙ্গে হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার অভিযোগও আনা হয়৷ দলবিরোধী কথা বলার অভিযোগে ২০১৯-এর আগস্ট মাসে সুশান্ত ঘোষকে শো-কজ করা হয়েছিলো৷ শো-কজে বলা হয়েছিলো, একটি পোর্টালে সুশান্তের ধারাবাহিক লেখায় নেতৃত্বের প্রতি বিষোদগার করা হয়েছে৷ এছাড়া সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে ‘ ‘উপদলীয় কার্যকলাপ’-এর অভিযোগও করা হয়েছিলো৷ যথাসময়ে ওই শো-কজের উত্তর দেন সুশান্ত ঘোষ৷ তাঁকে শো-কজ করার সময় সুশান্ত-অনুগামীরা বলেছিলেন, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে৷

আরও পড়ুন- একুশের ভোটের আগেই রাজ্যে ‘ওয়ার্ম আপ’ ম্যাচ! কণাদ দাশগুপ্তর কলম

সিপিএম ক্ষমতায় থাকার সময় থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সুশান্ত ঘোষ৷ বামফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডে গ্রেপ্তার হন তিনি৷ ছাড়া পাওয়ার পর দলের সঙ্গে একপ্রকার বিচ্ছেদই ঘটান তিনি। বই লিখতে শুরু করেন৷ ‘বামফ্রন্ট জমানার শেষ দশ বছর’ নামে তাঁর লেখা বইয়ে পার্টির অন্দরের নানা কথা প্রকাশ্যে আনেন৷ বিতর্ক তৈরি হয়৷ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএম তাঁর বিরুদ্ধে দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ আনে। জেলা কমিটি তাঁকে দল থেকে তাড়ানোর সুপারিশও করেছিলো। কেন্দ্রীয় কমিটির দুই সদস্য রামচন্দ্র ডোম ও আভাস রায়চৌধুরিকে সুশান্তের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগের তদন্তের ভার দেওয়া হয়। কমিশনও গঠিত হয়। ওই কমিশনই সুশান্ত ঘোষকে দোষী সাব্যস্ত করে৷

আরও পড়ুন- BREAKING: জল্পনার অবসান, ইচ্ছার বিরুদ্ধেই বার্সাতে থাকছেন মেসি

শুক্রবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে কমিশনের সেই রিপোর্ট পেশ করা হয়। বৈঠকেই সুশান্ত ঘোষকে ৩ মাসের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, এত বড়মাপের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন দল সুশান্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারলো না ?

সূত্রের খবর, রাজ্যে গোটা দল যখন বিলীন হতে চলেছে, তখন প্রকৃত জনভিত্তি থাকা এই নেতাকে বহিষ্কার করা হলে দল আরও বেকায়দায় পড়বে৷ তাছাড়া সুশান্ত ঘোষ দলীয় কর্মীদের কাছেও অসম্ভব জনপ্রিয়৷ এই কারনেই কঠোর সিদ্ধান্ত থেকে অনেকটাই পিছিয়ে হাস্যকর এক শাস্তি ঘোষণা করেছে দলের রাজ্য কমিটি। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাধারন সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও।

ওদিকে দলে এদিন গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্যর। সিপিএম রাজ্য কমিটির বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে তাঁকে৷

আরও পড়ুন- কাঁকড়া ধরতে গিয়ে ফের বাঘের হামলায় প্রাণ হারালেন মৎস্যজীবী

Previous articleকাঁকড়া ধরতে গিয়ে ফের বাঘের হামলায় প্রাণ হারালেন মৎস্যজীবী
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ