ভারত-চিন সীমান্ত সংঘাতে ফের মধ্যস্থতার বার্তা দিলেন ট্রাম্প  

ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত সংঘাত নিয়ে ফের মধ্যস্থতার বার্তা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের সীমান্তে তৈরি হওয়া উত্তেজনার পরিস্থিতির জন্য চিনকেই দায়ী করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের দাবি, চিনের আগ্রাসন নীতির জন্যই পরিস্থিতি খারাপ দিকে এগোচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে সাহায্য করতে পারলে তিনি খুশি হবেন। হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। সবাই দেখতে পাচ্ছে যে, চিন ও ভারতের মধ্যে সীমান্তে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এটা খুবই খারাপ দিকে এগোচ্ছে। ট্রাম্পের দাবি, এই বিষয়ে চিন ও ভারত, দু’দেশের সঙ্গেই তাঁর কথা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এই বিষয়ে ভারত ও চিন দু’দেশকেই সাহায্যের বার্তা দিয়েছি। যদি আমরা কিছু করতে পারি, সমস্যা মেটাতে সাহায্য করতে পারি, তাহলে আমরা আনন্দের সঙ্গে তা করব। আমরা এই বিষয়ে দু’দেশের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছি। তবে ভারত ও চিন দু’দেশের কথা বললেও সীমান্তে চিনের আগ্রাসন যে সমস্যার মূলে তাও মনে করান ট্রাম্প। তিনি বলেন, আমার মনে হয় চিনের আগ্রাসন বেশি। অনেকে অনুমানও করতে পারবে না যে চিন কতটা আগ্রাসী হতে পারে।

আরও পড়ুনঃভারতীয় আমেরিকানদের ভোট পেতে মোদিকে প্রশংসায় ভরালেন ট্রাম্প
লাদাখ সীমান্ত সমস্যার আগেও একাধিকবার কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সমস্যা মেটাতে মধ্যস্থতার বার্তা দিয়েছেন ট্রাম্প। এমনকি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিজেও ট্রাম্পের কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছিলেন। যদিও ভারত সটান সেই মধ্যস্থতার আর্জি উড়িয়ে দেয়। তখন নয়াদিল্লি বলেছিল, কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই এই এলাকা নিয়ে কোনও সমস্যা হলে সেখানে তৃতীয় পক্ষের উপস্থিত থাকার দরকার নেই। সমস্যা নিজেই মিটিয়ে নেবে ভারত। লাদাখ নিয়েও চিনের ক্ষেত্রে একই মনোভাব পোষণ করে নয়াদিল্লি। অর্থাৎ বাইরের কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা নয়, বরং বিবদমান দুপক্ষের মধ্যেই আলোচনা চালিয়ে সমস্যা মেটাতে হবে।

আরও পড়ুনঃভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনও উদ্যোগে যোগ দেবে না আমেরিকা

এদিকে সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে মস্কোতে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর বার্ষিক সম্মেলনে মুখোমুখি আলোচনায় বসেছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল উই ফেঙ্গে। প্রথমে দুই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যে আলাদা করে বৈঠকের কথা ছিল না। কিন্তু চিনই রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ইচ্ছা প্রকাশ করে, যা চলতি সীমান্ত সমস্যার পরিস্থিতিতে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। সীমান্তে সংঘর্ষের বাতাবরণ থাকলেও সমস্যার শান্তিপূর্ণ মীমাংসার জন্য আলোচনা চলছে দু’তরফেই। মস্কোর বৈঠকে চিনকে বার্তা দিয়ে রাজনাথ বলেছেন, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে গেলে সবচেয়ে আগে দরকার দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাসের সম্পর্ক। বিশ্বাসে ঘাটতি থাকলে তা শান্তি স্থাপনের পথে অন্তরায় হয়। দুই দেশ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে তখনই আসবে যখন বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা হবে। স্পষ্টতই ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইঙ্গিত করেছেন, চিনের কথার খেলাপ করার করার প্রবণতাকে। শান্তি বৈঠকের মাঝেই চিনা লাল ফৌজ অশান্তি পাকাচ্ছে, জোর করে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। রাজনাথ তাই বলেন, আগ্রাসন দেখিয়ে লাভ নেই। জবরদস্তি অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক নিয়ম নীতিকে মানতে হবে। তাহলেই পারস্পরিক বিশ্বাস রেখে দুই দেশ শান্তির পথে এগোতে পারবে। অন্যদিকে চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, সীমান্তে শান্তি রক্ষার দায়িত্ব ভারতের।