সমস্যা মিটেও যেন মিটতে চাইছে না ইস্টবেঙ্গলে। শ্রী সিমেন্টের নামে আইএসএল খেলার জন্য কোম্পানী গঠন করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, মারাত্মক জট। এএফসিতে ‘ব্যাকডোর’ দিয়ে শ্রী সিমেন্টকে না ঢোকালে আইএসএল খেলতে হলে শ্রী সিমেন্টকে এই মরশুমে স্পনসর হয়ে থাকতে হবে। ইনভেস্টর হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। আর এই ‘ব্যাকডোর’ শব্দটাতেই মারাত্মক আপত্তি ভারতীয় ফুটবলের অন্যান্য ক্লাবগুলোর। এরজন্য কেউ যদি আদালতেও চলে যায় অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

আরও পড়ুনঃইস্টবেঙ্গলের নতুন মুখ কিংবদন্তি ফুটবলার! বিদেশি কোচ খোঁজাও শুরু কর্তাদের

এই মুহূর্তে বারবার করে ক্লাবের এনটিটি বদলানোর ব্যপারে ভীষণ আপত্তি এএফসির। কোয়েসের আগে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নামে লাইসেন্স ছিল এএফসিতে। তারপর তা বদলে হল ‘কোয়েস ইস্টবেঙ্গল’ এফসি। এবার তা বদলে ফের নতুন কোম্পানী গঠন করে এএফসির লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হয়েছে ‘ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেডের’ নামে। আর এখানেই মূল সমস্যা।

আরও পড়ুনঃআইএসএলে ইস্টবেঙ্গল: অসম্ভবকে সম্ভব করায় মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা লাল-হলুদ কর্তাদের
ক্লাবের তরফ থেকে শ্রী সিমেন্টকে বোঝানো হয়েছে, আইএসএলে দলের নামে শ্রী সিমেন্ট না থাকলেও নতুন কোম্পানী গঠন হবে শ্রী সিমেন্টের নামে। আর সেই নামেই আইএসএল খেলার জন্য বিডের আবেদন করা হবে। কিন্তু তার আগে এএফসিতে শ্রীসিমেন্টকে সঙ্গী করে নতুন কোম্পানীর নামে লাইসেন্স করতে হবে।

আরও পড়ুনঃইস্টবেঙ্গলকে শতবর্ষের উপহার দিলেন দিদি: মেহেতাব

নতুন কোম্পানীর নামে লাইসেন্সের পেপার তৈরি করতে গিয়ে শ্রী সিমেন্টের কর্তারা দেখছেন, নতুন করে এনটিটি নিয়ে এএফিসিতে লাইসেন্স করার দিন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে ইস্টবেঙ্গেলর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ কোনও ফুটবলারের চুক্তিপত্র নতুন কোন্পানীতে ট্রান্সফার করা সম্ভব নয়। ফুটবলারদের যাবতীয় পেমেন্ট করতে হবে ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেডের অ্যাকাউন্ট থেকে। এমনকী আইএসএল খেলার জন্য যে বিড পেপারের আবেদন করা হবে, সেখানেও নিজেদের নাম রাখতে পারবে না শ্রী সিমেন্ট। ফলে এখন যে প্রশ্নটা বড় করে দেখা দিয়েছে, তাহলে কি এই মরশুমে শুধু স্পনসর হিসেবেই ইস্টবেঙ্গলকে আইএসএল খেলার জন্য বিশাল পরিমান টাকা দিয়ে সাহায্য করবে শ্রী সিমেন্ট? যা নিয়ে আলেচনা প্রবল।

আরও পড়ুনঃBreaking: মমতার আর্জি মানলেন মুকেশ, ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে?

তবে পাশাপাশি একটা প্রশ্ন উঠছে, আইএসএল খেলার কথা আলোচনার সময় কেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা লাইসেন্স সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শ্রী সিমেন্টের কাছে চেপে গিয়েছিলেন?
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর আবেগ দিয়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে সাহায্য করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে ইনভেস্টর যোগাড় করে দিয়েছেন। কিন্তু ফুটবলের এত আইন কানুন তাঁর পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু কেন আগের থেকে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা এই সব তথ্য তুলে ধরেননি, তা নিয়েই সর্বত্র আলোচনা।

আরও পড়ুনঃদুঃস্থ মানুষদের মাস্ক, স্যানিটাইজার বিলি কসবা ইস্টবেঙ্গল ফ্যানস ফোরামের

তবে আইএসএল যেহেতু চালায় এফএসডিএল , এবং শ্রী সিমেন্টকে খুঁজে দেওয়ার পিছনে হাত রয়েছে রিলায়েন্সের, তাই ইস্টবেঙ্গল কর্তারা ভাবছেন, নিয়ম কানুন তুড়ি মেরেই আইএসএল খেলবে তারা। রিলায়েন্স কর্তারা নিশ্চয়ই কিছু না কিছু পথ ইস্টবেঙ্গলের জন্য বের করে ফেলবেন।আর এখানেই অন্য ক্লাবগুলির আপত্তি। ব্যাকডোর দিয়ে খেলানো হলে আইএসএল নিয়ে মানুষের মনে যাবতীয় বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হবে। মনে হবে সব কিছুই যেন ব্যাকডোর দিয়ে হয়। আর এএফসি যদি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্য নিয়ম ভাঙে তাহলে অন্য ক্লাবগুলিও এই নিয়ম ভাঙার রাস্তায় হাঁটবে। ইস্টবেঙ্গলের সূত্র বলছে, তাঁরা এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী আর আম্বানিদের উপর নির্ভর করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সম্মানটা যেহেতু জড়িয়ে দেওয়া গিয়েছে, তাই আশা করা যায় এই জটও তিনি কাটাবেন। ফোন করবেন প্রফুল প্যাটেলকে। অথবা শ্রী সিমেন্টকে এই বারের জন্য 85%-এর বদলে শুধু স্পনসর হিসেবে টাকা দিতে রাজি করানো হবে। সবটাই নবান্নকেন্দ্রিক অঙ্ক।
