ঢাকায় লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

খায়রুল আলম, (ঢাকা) : বাংলাদেশের বিভিন্ন পাইকারি আড়তগুলিতে বেড়ে গিয়েছে পেঁয়াজের দাম। এর ফলে বাজারে ফের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। যদিও বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। কিন্তু তারপরও এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম হু হু করে বাড়ায় ব্যবসায়ীদের ওপর ক্ষিপ্ত সাধারণ ক্রেতারা।

শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর, রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজার, কাপ্তনবাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গিয়েছে। পেঁয়াজের এই মূল্যবৃদ্ধির পিছনে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এক মাস আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০ টাকা। এখন সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। আর একই সময়ে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। অর্থাৎ এক মাস আগের আমদানি করা যে পেঁয়াজের দাম ছিল ২৫ টাকা কেজি, সেই পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকারও বেশি দরে।

এদিকে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবিও বলছে, গত এক মাসে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সংস্থাটির হিসাবে গত এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৭২ শতাংশ। করোনার কারণে অনেকেরই আয় কমে গিয়েছে। এই সময়ে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিকে বাড়তি চাপ হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ।

রাজধানীর কমলাপুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, বাজারে পেঁয়াজের লাগামছাড়া দামবৃদ্ধির বিষয়টা সম্ভবয় কেউ দেখার নেই।কোরবানির সময়ও ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছি। এখন সেই পেঁয়াজ ৬৬ টাকা কেজি দরে কিনতে হলো। তিনি বলেন, গত বছরের মতো আবারও পেঁয়াজের দাম বেড়ে ২৫০-৩০০ টাকা যাতে না হয়, সে ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ থাকা উচিত।

গত বছর এই সেপ্টেম্বর মাস থেকেই ৩০ টাকা কেজি দরের পেঁয়াজের দাম কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়ে তিনশো টাকা ছাড়িয়ে যায়। রাজধানীর মানিক নগরের সবজি বিক্রেতা আবুল কাসেম বলেন, মোকামে এখন পেঁয়াজের দাম বেশি। সেখান থেকে ৬০ টাকা দরে এনে ৬৫ টাকা দরে খুচরা বিক্রি করছেন তিনি। একই বাজারের ব্যবসায়ী ইউসুফ আলি বলেন, ‘ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশেও পেঁয়াজের দাম এখন বেড়ে চলেছে। এদিকে বাজারে পেঁয়াজ ছাড়াও সব ধরনের সবজি, আলু, ব্রয়লার মুরগি, আদা ও দারুচিনির দামও ক্রমশ বাড়ছে। গত দু’ সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪৫ টাকা— যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১২৫ টাকা। তার আগের সপ্তাহে ছিল ১১০-১১৫ টাকার মধ্যে।

এছাড়া বেড়েছে আলুর দামও। গত বছরের ২০ টাকা কেজি আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। তবে দাম কমার তালিকাতে রয়েছে ৫টি পণ্য। এগুলো হলো— আটা, ময়দা, ছোট দানার মশুর ডাল, সয়াবিন তেল ও শুকনো লঙ্কা।

এদিকে শীতের আগাম সবজি বাজারে আসতে শুরু করলেও দাম রয়েছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তবে গত সপ্তাহের চেয়ে দাম কিছুটা কম। শুক্রবার শিমের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২২০ টাকা। বেগুন ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা পিস। ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। ছোট আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপির প্রতি পিসের দাম গত সপ্তাহের মতোই ৫০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। গাজর ৮০ টাকা কেজি। উসতা ৭০ টাকা কেজি। বরবটি ৬০ টাকা কেজি। পটল ৪০ টাকা, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি ।

আরও পড়ুন : নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে আর মসজিদ নির্মাণ নয় : হাসিনা

Previous articleফেসবুক লাইভ করতে করতে আত্মঘাতী শিক্ষক! তারপর?
Next articleঅর্ণব গোস্বামীকে ‘পুরস্কার’ দিতে গিয়েও পারলেন না অনুরাগ কাশ্যপ, কুণাল কামরা