মাস্ক না পরলেই এবার হাসিনা সরকার ‘অ্যাকশন’ নেবে

খায়রুল আলম (ঢাকা) : অতিমারি ঠেকাতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে শেখ হাসিনা সরকার। কিন্তু বর্তমানে অনেকের মাঝে মাস্ক পরতে অনীহা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন মার্কেট এবং শপিংমলগুলিতে কোভিড প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাই মাস্ক পরায় অনীহা দেখা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে মার্কেট ও শপিং মলগুলোতে অ্যাকশনে যাচ্ছে সরকার। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে আকস্মিক অভিযান হবে ওইসব স্থানে।

সোমবার রাজধানী ঢাকার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মাস্ক না পরা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথা জানান। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বৈঠকে যুক্ত হন।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রিসভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অনেক দেশেই বিশেষত শীতপ্রধান দেশে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নভেম্বরের শেষ থেকে সেকেন্ড ওয়েভ আসে কি-না সেই প্রিপারেশন রাখতে হবে। ম্যাসিভ যেন প্রিপারেশন থাকে। মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আহ্বান করেছি।

প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন আমাদের যেন প্রস্তুতি থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, সেকেন্ড ওয়েভ এলে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যদি সচেতন হওয়া যায়, তাহলে আমাদের জন্য এটা সুবিধা হবে। পাশাপাশি উনি নির্দেশ দিয়েছেন, অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ঠাণ্ডার প্রকোপ বাড়তে পারে, সেক্ষেত্রে আমাদের লোকজনের নিউমোনিয়া, সর্দি, জ্বর বা অ্যাজমাটিক সমস্যা থাকে, সবাই যাতে প্রস্তুতি নেয়।
এসবে আক্রান্ত হলে যেন চিকিৎসা করান। কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভ এলে মাঠ পর্যায়ে সেটাকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে সেটার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। কাল বসে বিস্তারিত কর্মসূচি নেব।’

সকলের মাস্ক ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে ঠিকভাবে মাস্ক যদি ব্যবহার না করি তাহলে কিন্তু মুশকিল। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই তরফ থেকে যদি মাস্ক পরা থাকে তাহলে ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ নিরাপদ। আর এক তরফ থেকে মাস্ক থাকলে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ নিরাপদ। মাস্ক যদি না পরে তাহলে কিন্তু কোনও কিছুই সফল হবে না। এজন্য সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ঠান্ডা থেকে প্রোটেকশন নিতে হবে। উপসর্গ দেখা গেলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

খন্দকার আনোয়ার বলেন, সম্প্রতি একটি কাজে এক মার্কেটে গিয়েছিলাম, আমি সেখানে অধিকাংশ লোককে মাস্ক পরতে দেখিনি। পরে নির্দেশ দিয়েছি- আমরা ক্রস চেক করব যেকোনও দিন। সেই মার্কেটে যদি সকলকে মাস্ক পড়তে না দেখা যায় তাহলে উই উইল টেক অ্যাকশন। ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সব মসজিদে জোহর ও মাগরিবের নামাজের সময় যেন ঘোষণা দেওয়া হয়, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, এটা রাষ্ট্রীয় কল্যাণকর নির্দেশ। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অভিযান অব্যাহত আছে। মোবাইল কোর্ট চলছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

করোনার দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হলে সরকার আগের মতো আবার শাটডাউনে যাবে কিনা- জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যাওয়া হবে কিনা, মাত্রাটা কেমন হবে আমরা তো জানি না। আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে।

আরও পড়ুন-ইলিশ মিলবে সারা বছর! হাসিনা সরকারের আড়াইশো কোটির প্রকল্প

Previous articleযৌন হেনস্থায় অভিযোগ অনুরাগের বিরুদ্ধে, মুখ খুললেন পরিচালকের প্রাক্তন দুই স্ত্রী
Next articleস্বেচ্ছা ঋণখেলাপিদের থেকে টাকা ফিরবে কী করে প্রশ্ন মন্ত্রীকে!