৮০ টাকা কেজি হলেও পেট্রাপোলে ট্রাকেই পচে নষ্ট হচ্ছে পেঁয়াজ

খায়রুল আলম (ঢাকা) : গত ১১ দিন ধরে বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করায় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা বেশকিছু পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক এখনও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকার বিভিন্ন বেসরকারি পার্কিং আর সড়কে দাঁড়িয়ে আছে। এসব পেঁয়াজের প্রায় ৫০ ভাগ ট্রাকেই পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

এদিকে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা তাদের ভারতীয় রফতানিকারক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পুরোনো এলসির আটকে পড়া পেঁয়াজ ছাড়করণে আবেদন জানালেও এখন পর্যন্ত কোনও সাড়া মেলেনি।

বেনাপোল বন্দরের স্থানীয় বাজারে সংকট দেখা দেওয়ায় পেঁয়াজের দাম আবারও বাড়ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পাইকারি বাজারে ৬০-৬৫ টাকা আর খুচরা বাজারে ৭৫-৮০ টাকা দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ অর্ধেক নষ্ট হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

পেঁয়াজ আমদানিকারক শেখ ট্রেডার্সের শেখ মাহাবুব জানান, প্রতি বছর পেঁয়াজ নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড হয়। ভারত কখনও উৎপাদন সংকট দেখিয়ে, কখনও রফতানি মূল্য তিনগুণ বাড়িয়ে আমদানি বন্ধ করে দেয়। এ ক্ষেত্রে সংকট মোকাবিলায় ভারত ছাড়াও বাইরের কিছু দেশের সঙ্গে সরকারের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা দরকার।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, তারা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখন ও পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে এ পথে পেঁয়াজ আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ওপারের বিভিন্ন পার্কিংয়ে তাদের বেশ কিছু পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনেক ট্রাকের পেঁয়াজে পচন ধরেছে। নিষেধাজ্ঞার আগেই এসব ট্রাক বন্দর এলাকায় পৌঁছেছিল। দ্রুত এসব ট্রাক না ছাড়লে আবারও নতুন করে তারা লোকসানের মুখে পড়বেন। বাইরে থেকে আমদানি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাজার অস্থিতিশীল থাকবে বলে মনে হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দরের সাব-ম্যানেজার মামুন কবীর তরফদার জানান, কোনও পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সংকট দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। এ পর্যন্ত কোনও পেঁয়াজের ট্রাক দেয়নি ভারত। দেবে কিনা তাও নিশ্চিত জানাতে পারেনি।

তবে স্থানীয়রা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, ভারত থেকে গত ১১ দিনে তেমন একটা পেঁয়াজ না এলেও দেশে এখন উৎপাদিত এবং আমদানি করা বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আছে। ফলে ব্যবসায়ীদের এই সংকট সংকট ভাবটা পুরোটাই কৃত্রিম। তাদের প্রত্যেকের গুদামে আগে থেকে আনা বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ রয়েছে। তারা দাম বাড়ানোর জন্য ভারতীয় পক্ষকে আধা পচা পেঁয়াজগুলো দেওয়ার আবেদন জানিয়েই যাচ্ছে। এর মাধ্যমে নতুন সামান্য পচা পেঁয়াজ ঢুকলে তাদের আগে আনা পেঁয়াজগুলোর দাম বাড়ানো সহজ হবে।

আরও পড়ুন-অনুমতি নেই, তাই বাংলাদেশে আটকে আছে অ্যান্টিজেন টেস্টের উদ্যোগ

Previous articleবেনজির! ময়দান ছেড়ে দুই আম্পায়ারের বিবাদ পৌঁছালো থানা পর্যন্ত
Next article৫ সেপ্টেম্বর নয়, বিদ্যাসাগরের জন্মদিনটিই হোক ‘রাষ্ট্রীয় শিক্ষক দিবস’, চিঠি মোদি-মমতার কাছে