বাবরি ধ্বংস মামলার রায় শোনার আগে যা জানা দরকার

বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার কিছুক্ষণ আগের ছবি৷ ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯২, অযোধ্যায় সমাবেশে বিজেপি নেতা মুরলী মনোহর যোশী, এল কে আডবাণী এবং বিজয়রাজে সিন্ধিয়া। এদিনই বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়।

CBI-এর বিশেষ আদালত আজ, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায় ঘোষণা করবে। এই মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপি’র দুই “মার্গদর্শক” লালকৃষ্ণ আদবানি এবং মুরলি মনোহর যোশী।

১৯৯২-র ৬ ডিসেম্বর, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার ২৭ বছর পর লখনউয়ের বিশেষ CBI আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করবে৷ এই মামলায় লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতীর মত বিশিষ্ট বিজেপি নেতারা মূল অভিযুক্ত হিসেবে রয়েছেন। বিশেষ আদালত সিদ্ধান্ত নেবে, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর, করসেবকদের হাতে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ক্ষেত্রে আদবানি যোশীদের হাত কতখানি ছিলো।

◾বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায় ঘোষণা করবেন লখনউয়ের বিশেষ CBI আদালতের
বিচারক এসকে যাদব৷

◾৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাবরি-মামলার রায় ঘোষণার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

◾বিশেষ CBI আদালতে বাবরি- রায় ঘোষণার জন্য সুপ্রিম কোর্টের আগের সময়সীমা আগস্ট মাসে শেষ হয়েছে৷ গত ২২ আগস্ট তা বাড়িয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর করা হয়৷

আরও পড়ুন- পিপিই পরেই করোনা আক্রান্ত রোগীর মাথায় অস্ত্রোপচার করলেন কলকাতার চিকিৎসকরা

◾গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিচারক যাদব ৩২ জন অভিযুক্তকে বিশেষ আদালতে ৩০ সেপ্টেম্বর, হাজির থাকার নির্দেশ দেন।

◾বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশের বেশ কয়েকজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ৷ আছেন দেশের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুরলী মনোহর যোশী, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং, বিনয় কাটিয়ার, সাধ্বী ঋতম্ভরার মতো নেতানেত্রীরা।

◾এই মামলার শুনানি গত ১ সেপ্টেম্বর শেষ হয়৷ তারপর বিচারক এসকে যাদব রায় লিখতে শুরু করেন।

◾অভিযুক্তদের কিছু চূড়ান্ত আর্জি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়, কারণ দেশজুড়ে মহামারির কারণে তাঁরা আদালতে আসতে পারেননি৷

◾মামলার তদন্ত করেছে CBI বা সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন৷ CBI আদালতে চার্জশিট
প্রমাণ করতে প্রায় ৩৫০ জন সাক্ষী এবং প্রায় ৬০০ নথি পেশ করেছে।

◾প্রাথমিকভাবে ৪৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়, কিন্তু তাদের মধ্যে ১৬ জন মারা গিয়েছেন।

◾অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে CBI-এর প্রধান যুক্তি ছিলো, এনারাই অযোধ্যায় ষোড়শ শতাব্দীর বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছেন।

◾অন্যদিকে, অভিযুক্তদের সাফাই, তাঁরা যে দোষী, এমন কোনও প্রমান নেই। দাবি করেছেন, তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার এই মামলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে৷

◾গত ২৪ জুলাই, বিজেপির প্রবীণ নেতা আদবানি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করেন৷ মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন। তিনি জানান, এই মামলায় তাঁকে অযথা টেনে আনা হয়েছে৷ আদবানি দাবি করেন, রাজনৈতিক চাপের মুখে তদন্ত চালিত হয়েছে এবং মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে চার্জশিট তৈরি হয়েছে।

◾১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে একদল উন্মত্ত করসেবক৷ করসেবকদের বক্তব্য, প্রভু রামের জন্মস্থানে প্রথম মুঘল শাসক বাবরের আমলে বাবরি মসজিদ নির্মিত হয়েছিল।

◾২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট রাম মন্দির নির্মাণের জন্য অযােধ্যায় বিতর্কিত স্থান বরাদ্দ করে। ওই রায়ে শীরপখষ আদালত বলে, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে আইনের শাসনের লঙ্ঘন করে৷ একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য শহরে বিকল্প ৫ একর জমি দিতেও সরকারকে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট ৷

আরও পড়ুন- হবে না দুর্গাপুজো! ঐতিহ্য রক্ষায় যোগীকে চিঠি বাংলা পক্ষ’র