“জাগো তুমি জাগো মা”, জাগো বাংলার পুজো সংখ্যায় অশুভ শক্তিকে বিনাশের ডাক মমতার

মায়ের বোধনের বাকি আরও কিছুদিন। তার আগেই করোনা আবহের মধ্যেই উৎসবের ঢাকে কাঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল, নজরুল মঞ্চে দলীয় পত্রিকা “জাগো বাংলা”র পুজো সংখ্যার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

“জাগো বাংলা”র পুজো সংখ্যার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মায়ের কাছে প্রার্থনা করব সব বিপদ থেকে আমাদের মুক্ত করে দাও। করোনাকে দূর করে দাও। সবাইকে ভালো রাখো মা। সব পরিবারকে ভালো রাখো”

একইসঙ্গে তিনি বিজেপিকে নিশানা করেন। জাগো বাংলার শারদ সংখ্যাতেও তার প্রতিফলন ঘটেছে। করোনা আবহে অশুভের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এবার তাঁর লেখা “জাগো তুমি জাগো মা”-শিরোনামে অশুভকে হারানোর বার্তা দিয়েছেন মমতা।

জাগো বাংলা শারদীয়া সংখ্যায় তৃণমূল নেত্রী যেমন করোনা আবহ ও আমফান পরবর্তী বাংলায় মানুষের দুঃখের কথা তুলে ধরেছেন। দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন, ঠিক একইভাবে বিজেপিকে নিশানা করেছেন। তাঁর লেখার পরতে পরতে তা ফুটে উঠেছে।

জাগো বাংলা শারদীয়া সংখ্যায় একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে, একুশের নির্বাচন, বিজেপি ও কেন্দ্র সরকারের জনবিরোধী কার্যকলাপ তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্যুর মূল হাতিয়ার হতে চলেছে।

শুধু দলনেত্রী নন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী যেরকম লিখেছেন, “একুশের নির্বাচন কঠিন নয় তাৎপর্যপূর্ণ”। যেখানে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, ভারতবর্ষের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার মাটিকে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে কলুষিত করছে বিজেপি।

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব জাগো বাংলার পুজো সংখ্যায় বিজেপিকে নিশানা করেছেন। পার্থবাবুর লেখায় ফুটে উঠেছে, কেন্দ্রের শিক্ষানীতি ও শিক্ষায় গৈরিকীকরণ-এর বিষয়টি।

এছাড়াও জাগো বাংলার পুজো সংখ্যায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের অন্য নেতা-নেত্রীরা নিজেদের লেখায় করোনার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর লড়াই থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ-এর পাশাপাশি কেন্দ্রের বঞ্চনা ও মূলত বিজেপিকে তোপ দেগেছেন।

উল্লেখ্য, জাগো বাংলার পুজো সংখ্যার উদ্বোধনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে তোপ দেগে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “একদিকে করোনা। একদিকে ডেঙ্গু। একদিকে ম্যালেরিয়া। আর একদিকে ভয়ানক বিজেপি। বাপ-রে বাপ, এতবড় মহামারি আমি আর কোথাও দেখিনি। বাংলায় রাজনীতি করতে গেলে একটু ভদ্রতা। একটু সভ্যতা। একটু সংস্কৃতি। একটু গণতন্ত্র। একটু পরম্পরা মেনে চলতে হয়। আমরা আজেবাজে কথা বলি না। এখানকার সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত বাংলাকে অপমান হতে দেয় না। তারা বাজে কথা লেখে না। এটা। বিজেপি বুঝবে না। তাদের বোঝার ক্ষমতাও নেই। কিন্তু বিজেপি যেভাবেই হোক ক্ষমতায় আসতে চাইছে। তাতে করোনায় সবাই মরে গেলে যাক , ওদের ক্ষমতায় আসতেই হবে। আমি বলি অতো সহজ নয়। বিজেপি মনে রাখবে, তোমাদের মত অসুরদের বধ করতেই মা পৃথিবীতে আসেন।”

একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে আবেদন করে বলেন, “পুজো করুন। কিন্তু সাবধানতা অবলম্বন করে পুজো করুন। সচেতন থাকুন। মাস্ক পরুন। ভিড় এড়িয়ে চলুন। এবছর আমিও ভার্চুয়ালি পুজোর উদ্বোধন করব। বিজয়া দশমীও সচেতনতার সঙ্গে পালন করুন।”

একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমের কাছে আবেদন করেন, যে পুজোগুলি খুব সুন্দর ভাবে কোভিড সুরক্ষা বিধি মেনে হবে, তাদের খবর মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য। এই বছরটা উত্তর-দক্ষিণে পুজোর লড়াইয়ের একটু বাইরেই থাকতে বলেন তিনি।

আরও পড়ুন-উত্তরবঙ্গে অভিষেক-পিকে, চলছে ক্ষত মেরামত, চাঙ্গা হচ্ছে তৃণমূল

Previous article‘অটল টানেল’ থেকে গায়েব সোনিয়ার নামাঙ্কিত ফলক! তীব্র প্রতিবাদ কংগ্রেসের
Next articleবাড়ির অমতে সম্পর্ক, মৃত প্রেমিকার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে আত্মঘাতী যুবক