হাসপাতালের বেডে উঠে বসলেন, এভাবে চললে বাড়ি ফেরা শুধু সময়ের অপেক্ষা সৌমিত্রর

সঙ্কট মুক্ত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চিকিৎসকদের দাবি, আর ভয়ের কারণ নেই। অনেকটাই সুস্থ বর্ষীয়ান অভিনেতা। শারীরিক ভাবে ক্রমশ উন্নতি করছেন। নতুন করে আর কোনও সমস্যা আর হয়নি তাঁর। জ্বরও অনেকে আগেই কমে গিয়েছে। শরীরের তাপমাত্রা গত ৪৮ ঘন্টায় একেবারে স্বাভাবিক।

তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপার, আজ রবিবার বিছানায় উঠে বসেছেন সৌমিত্রবাবু। তাঁর স্টেরয়েড-এর হাই ডোজ দেওয়ার প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে হাসপাতাল সূত্রে।
শরীরে বাড়তি অক্সিজেন চাহিদা নেই। শুরু হয়েছে নর্মাল ফিজিও থেরাপি শুরু। এভাবে চলতে থাকলে হাঁটানোর চেষ্টাও করা হবে জানা যাচ্ছে।

এদিন আরও কিছু টেস্ট রিপোর্ট এসেছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। যেখানে সব রিপোর্টই স্বাভাবিক। দিন কয়েক হল করোনাকে জয় করেছেন বাংলা সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় ও সেরা অভিনেতা। সঙ্কট কাটলেও এখন তাঁর শরীরের সঙ্গে মনের জোর বাড়ানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা। মিউজিক থেরাপি খুব কাজ দিয়েছে। এখন সৌমিত্রবাবু গান-গল্প শুনেছেন। মেয়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন। এমনটাই দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

প্রসঙ্গত, বোধহয় একেই বলে ফেলুদার লড়াই! মারণ ভাইরাস ও কঠিন ব্যাধির সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। গত কয়েকদিন আগে পর্যন্ত যে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেই জায়গা থেকে এখন অনেকটাই ভালো আছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা।

হাসপাতাল সূত্রে এদিন সকালেই জানা গিয়েছিল, সৌমিত্রবাবুর শরীরে আর জ্বর নেই। তাপমাত্রা এখন স্বাভাবিক। ফুসফুসে যে সমস্যা তৈরি হয়ে সেটাও কমেছে। কেউ ডাকলে তিনি চোখ খুলছেন। কথা বলারও চেষ্টা করছেন। সবাইকে চিনতেও পারছেন অভিনেতা। কমে গিয়েছে অস্থিরতা। কেটে গিয়েছে অসংলগ্ন ভাব। যদিও এখনও কিছুটা আচ্ছন্ন ভাব রয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে। বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন মেয়ে। সব মিলিয়ে চিকিৎসকদের নিরলস প্রচেষ্টায় এখন আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো আছেন ৮৫ বছর বয়সী অভিনেতা।

সপ্তাহদুয়েক আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তারপর থেকে ক্রমাগত তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। একটা সময়ে তাঁকে ভেন্টিলেশনে দিয়ে হয়েছিল লাইফ সাপোর্টের জন্য। একদিকে করোনার থাবা, অন্যদিকে বার্ধক্যজনিত একাধিক রোগ গ্রাস করেছিল অভিনেতাকে। তাঁকে সেই জায়গা থেকে ফিরিয়ে আনা ছিল চিকিৎসকদের কাছে চ্যালেঞ্জ। সেই কাজে তাঁরা অনেকটাই সফল বলা চলে। ইতিমধ্যেই কোভিড জয় করেছেন সৌমিত্রবাবু। অন্যান্য শারীরিক সমস্যাগুলিও ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছেন।

হাসপাতাল রাইলস টিউবে প্রতি ২ ঘণ্টায় তাঁকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। ৪ লিটার করে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে বর্ষীয়ান অভিনেতাকে। সিরিঞ্জ পাম্প দিয়ে পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করা হচ্ছে। চলছে মিউজিক থেরাপি। যেখানে রবীন্দ্র সঙ্গীত থেকে শুরু করে তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রের গান ও আবৃত্তি শোনানো হচ্ছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে। এবং তা কাজে দিচ্ছে বলে দাবি চিকিৎসকদের।

আরও পড়ুন- কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনেই দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী

Previous articleকোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনেই দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী
Next articleদোরাইস্বামীকে মোমেন; সড়ক-রেলপথ খুলে দিলে খুশি হব