আই লিগ ট্রফি ছোঁয়ার পর মোহনবাগানকে বাংলায় শুভেচ্ছা কৈলাশের

আই লিগ ট্রফিতে চুম্বন দিয়ে ফুটবলপ্রেমী বাঙালির শারদ উৎসবের সূচনা করল শতাব্দী-প্রাচীন মোহনবাগান ক্লাব।

শারদ উৎসবের প্রাক্কালে জয়ের উৎসবে মেতেছিল মোহনবাগান সদস্য-সমর্থনকরা। দুর্গাপুজোর ঠিক আগেই করোনা আবহের মধ্যেই আই লিগ ট্রফি ছোঁয়ার স্বাদ পেয়েছে মোহনবাগান। যা সবুজ-মেরুন সমর্থকদের কাছে পুজো উপহার। রবিবার দ্বিতীয়বার দিন মোহনবাগান ক্লাবকে ২০১৯-২০ মরসুমের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করে তাদের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। বাগানের এই সাফল্যের জন্য দিনভর প্রচুর শুভেচ্ছা বার্তা পেয়েছে মোহনবাগান। ক্রীড়াপ্রেমী সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন জগতের সেলিব্রেটিরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আর একদম রাতের দিকে শুভেচ্ছা জানালেন বিজেপির জাতীয়স্তরের নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। এবং সেটাও গোটা গোটা বাংলায়। যা রাজনৈতিকভাবে খুব তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ, এদিন মোহনবাগান আই লিগ ট্রফি হাতে পাওয়ার পর রোড শো-তে যে ভিড় হয়েছে, তা ইতিহাস।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর মধ্যে এবছর গোটা বিশ্বের মতই এ দেশেও বিভিন্ন খেলাধুলার পাশাপাশি ফুটবল স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। শেষ করা যায়নি দেশের অন্যতম বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট আই লিগ। প্রতিটি দলেরই বাকি ছিল ৪-৫টি ম্যাচ। যদিও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টবেঙ্গলের থেকে সমসংখ্যক ম্যাচ (১৬) খেলে ১৬ পয়েন্টে এগিয়ে ছিল মোহনবাগান। সবুজ-মেরুন ছিল কার্যত ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাই মোহনবাগানকেই ঘোষণা করা হয় আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হিসাবে। লিগ জয় হলেও ট্রফি এত দিন হাতে পায়নি সবুজ-মেরুন। রবিবার বাইপাসের ধারে এক পাঁচতারা হোটেলে আনুষ্ঠানিক ভাবে মোহনবাগানের হাতে ট্রফি তুলে দিল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। আর প্রায় ৮ মাস পর ঐতিহাসিক ট্রফি হাতে পেয়ে আবেগে ভাসলেন মোহনবাগান কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সমর্থকরা।

এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহনবাগান টিমের বর্তমানে কলকাতা শহরে থাকা সমস্ত ফুটবলাররা। উপস্থিত ছিলেন ক্লাব সভাপতি স্বপনসাধন (টুটু) বসু। ছিলেন ক্লাব সচিব সৃঞ্জয় বসু-সহ পরিচালন সমিতির সদস্যরা। এছাড়াও ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং ফেডারেশনের তরফে আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর ও আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়।

বিজয়ী দলের বেশির ভাগ সদস্যই কলকাতায় না থাকায় ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অতিমারির জন্য সমস্ত সমর্থকরা যেহেতু এই জয়ের উৎসবে থাকতে পারছেন না তাই পুরো অনুষ্ঠানটি দেখানো হয়েছে মোহনবাগানের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।

এদিকে বাইপাস সংলোগ্ন পাঁচতারা হোটেলের বাইরে কয়েক হাজার সমর্থক ভিড় করেছিলেন। একটি সুসজ্জিত গাড়িতে ট্রফি রাস্তায় আসার পরই বাঁধভাঙা আবেগ- উচ্ছ্বাসে ভাসছেন তাঁরা। হোটেলের অনুষ্ঠানের পর ট্রফি নিয়ে যাওয়া হয় ক্লাব তাঁবুতে। রোড-শো করে উল্টোডাঙা, শ্যামবাজার, মোহনবাগান লেন, হেদুয়া, গিরিশ পার্ক, ধর্মতলা হয়ে ট্রফি আসে ময়দানে মোহনবাগান ক্লাবে। ২ থেকে ৫ নভেম্বর অবধি ক্লাব তাঁবুতে সমর্থকদের জন্য রাখা থাকবে ট্রফি।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের পর ফের একবার আই লিগ জয়ের স্বাদ পেলো সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। এটাই হয়তো শেষবারের মতো আই লিগ জয় মোহনবাগানের। কারণ, ইতিমধ্যেই এটিকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আইএসএলে নামতে চলেছে এটিকে-মোহনবাগান। আই লিগ জয়ের উচ্ছ্বাসে কিছুটা বাধ সাধল অতিমারি। দেরিতে হলেও আই লিগ ট্রফি এলো মোহনবাগানে। পুজোর আগে এরচেয়ে বড় শারদ উপহার আর কী-বা হতে পারে মোহনবাগান সমর্থকদের জন্য! অন্যদিকে, ব্যান্ড, আবির, আতশবাজি আর সবুজ-মেরুন আলোর রোশনাই-এর মধ্যে দিয়ে বাঙালির দুর্গাপুজোর সূচনা করেদিল ঐতিহ্যবাহী মোহনবাগান ক্লাব।

আরও পড়ুন- দিলীপ ঘোষের দ্রুত আরোগ্য কামনায় দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে সোমবার মহাযজ্ঞ বিজেপি যুবমোর্চার

Previous articleদিলীপ ঘোষের দ্রুত আরোগ্য কামনায় দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে সোমবার মহাযজ্ঞ বিজেপি যুবমোর্চার
Next articleসুস্থ হয়ে বাড়ির পথে “করোনা যোদ্ধা” বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা