দিলীপ ঘোষকে অপমান করলেন মুকুলের ছায়াসঙ্গী!

‘দুদিনের যোগী, ভাতেরে কয় অন্ন!’ সৌমিত্র খাঁয়ের বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি পদ থেকে ‘বেসরকারি পদত্যাগ’-এর জেরে মুখ খুলেছেন মুকুল রায়ের ছায়া সঙ্গী শঙ্কুদেব পণ্ডা। যুবর সমস্যা মেটাতে রাজ্য সভাপতির কী করা উচিত ছিল তারও পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি! যা দেখেশুনে দলের নেতারা বলছেন এতো সাহস হয় কী করে শঙ্কুদেবের? দলের সভাপতির কী করা উচিত সেটা ও বলে দেবে। দু’দিনের যোগী, ভাতেরে কয় অন্ন!

সৌমিত্র এদিন সকাল ৯টা ৪মিনিটে ‘বিজেওয়াইএম ওয়েস্টবেঙ্গল অফিসিয়াল গ্রুপ’- থেকে ক্যুইট করেন। তার আগে তিনি লেখেন, ” শুভ মহাষ্টমী। সকলে ভাল থাকবেন। আপনাদের খুবই সহযোগিতা পেয়েছি। আমি চাই বিজেপিকে সরকারে আনতেই হবে। তাই হয়তো আমার অনেক ভুল ছিল যাতে দলের অনেক ক্ষতি হচ্ছিল। তাই আমি ইস্তফা দেব আর সকলে ভাল থাকবেন। যুব মোর্চা জিন্দাবাদ, বিজেপি জিন্দাবাদ, মোদিজি জিন্দাবাদ।”

আর এই বক্তব্যের পরেই ২৪ ঘন্টা আগে দলের পদ পাওয়া শঙ্কুদেব তাঁর সভাপতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। একটি মহলের খবর শঙ্কু নাকি বলেছেন, সৌমিত্র অপরিণত রাজনীতি করছেন। সামনে ভোট। তাই দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা তাঁর কাজ। জেলা কমিটি তৈরিতে তাঁর নাকি আরও যত্নবান হওয়া উচিত ছিল। পুরনোদের আরও মর্যাদা দেওয়া উচিত ছিল! কে বলছেন? যে কিনা ২৪ ঘন্টাও হয়নি যুব মোর্চায় এসেছেন? শঙ্কুর এই কথায় ব্যাপক চটেছেন দলের নেতারা। তাঁরা বলছেন, সমস্যা মেটানোর চাইতে দলে সমস্যা বাড়াতে চাইছেন এই নব্য বিজেপি নেতা।

এখানেই থেমে গেলে এক ব্যাপার হতো। শঙ্কু এরপর রাজ্য বিজেপি সভাপতির কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি নাকি বলেছেন, সমস্যা অন্যভাবেও মেটানো যেত। দলের ভিতরে বসেই কথা বলা যেত। যুব মোর্চার সব জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে যুব রাজ্য সভাপতিকে দিলীপদা অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন! এই বক্তব্যে বেজায় চটেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দিলীপ শিবির দলের কেন্দ্রীয় নেতার ছায়াসঙ্গীর এই মন্তব্য অপমান বলেই মনে করছে। দলের এক নেতার সাফ কথা, এসব ভুঁইফোঁড়দের দলে দয়া করে থাকতে দেওয়া হয়েছে। নারদার ফুটেজে যাকে শেয়ার চাইতে দেখা গিয়েছে, তাকে যে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি, সেটাই তার পক্ষে যথেষ্ট।

রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলছেন, কার প্রশ্রয়ে এসব মন্তব্য করছেন? এখনই মুখ বন্ধ করুন এইসব পরিযায়ী নেতারা। সমস্যা মেটাতে ওদের পরামর্শ না দিলেও চলবে। তিনি যদি ভেবে থাকেন দলের কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর দৌলতে এসব কথা বলার লাইসেন্স পেয়ে গিয়েছেন, তাহলে ভুল করছেন। বাড়াবাড়ি করলে দল তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না।

আরও পড়ুন: ‘Save Bengal from Bjp’, সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনব ক্যাম্পেনিং তৃণমূলের

তবে যুব মোর্চার জেলা কমিটি ভেঙে দেওয়া নিয়ে বিজেপিতে যে অশান্তি বাড়ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যে কোনও সময়ে সমস্যা গভীর থেকে গভীরতর হতে পারে। দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, দলের শৃঙখলা না মানলে দল ব্যবস্থা নেবে। সেখানে কাউকে রেয়াত করা হবে না। লক্ষ্য যে শঙ্কুদেব কিংবা তার মদতদাতারা, তা বলা নিষ্প্রয়োজন।