Monday, December 1, 2025

রাজ্যপালের সফরে গুরুংয়ের দল ভাঙানোর চেষ্টা করবে বিজেপি, আশঙ্কা অনুগামীদের

Date:

Share post:

তিনি মানে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, দার্জিলিঙে এক মাসের সফরে এলাকার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, মানুষের সমস্যা ও নানা সম্ভাবনার ব্যাপারে জানার চেষ্টা করবেন। বোঝার চেষ্টাও করবেন। তার পরে সেই অনুযায়ী যা করণীয় তা করবেন তিনি।

আরও পড়ুন : দিল্লিতে বিস্ফোরক রাজ্যপাল, কিসের ইঙ্গিত দিলেন ধনকড়
কিন্তু, পাহাড়ের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই তা শুনে হাসছেন। কারণ, তাঁরা ইতিমধ্যেই জেনেছেন, রাজ্যপালের সফর পুরোপুরি অরাজনৈতিক হলেও সেই সময়ে গুরুংয়ের ঘরের লোকদের মধ্যে যাঁরা প্রভাবশালী তাঁদের ভাঙিয়ে বিজেপিতে যোগদান করানোর চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে। ইতিমধ্যেই প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে গুরুং শিবিরের একাংশের দাবি। গুরুং অনুগামী এক নেত্রী জানান, তাঁকে বিজেপিতে যোগদানের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, তাঁকে বলা হয়েছে, গুরুং যে ভাবে আত্মসমর্পণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাতে আগামী দিনে তাঁর পাহাড়ে জনসমর্থন থাকবে না। সে জন্য বিজেপির সঙ্গে তাঁকে থাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই নেত্রী জানান, গুরুং যদি আগামী দিনে প্রভাবহীন হয়ে পড়েন তা হলে কেন বিজেপি এত তোড়জোর করছে! এর পরেই তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে যিনি তিন বছর ঘরদোর ছেড়ে আত্মগোপন করে থাকতে পারেন, তাঁর পাশে আরও কয়েক বছর তাঁরা থাকতে চান।

আরও পড়ুন : রাজ্যপাল বিজেপির ‘লাউডস্পিকার’, কটাক্ষ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের

তিনবছর আগে গুরুং পাহাড় ছেড়ে আত্মগোপন করার পরে তাঁর দার্জিলিঙের সিংমারিতে বিমলের বাড়ি পুলিশ আদালতের নির্দেশ নিয়ে বাজেয়াপ্ত করেছে। বিমলের ভোটার কার্ডও বাতিল হয়েছে। অথচ, বিমলকে যে দার্জিলিং পাহাড়ের অনেকেই বাতিল করেননি তা ফের স্পষ্ট হয়েছে। শুধু তাই নয়, সুবাস ঘিসিং মূলত পাহাড়ের গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকলেও গুরুং গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন তরাই ও ডুয়ার্সে ছড়িয়ে দার্জিলিঙের বিস্তীর্ণ এলাকা তো বটেই, সমতলের নেপালিভাষীদের একাংশের হিরো হয়ে ওঠেন। সেই নায়কোচিত গুরুং পাহাড়-সমতলের নেপালিভাষীদের একাংশের মধ্যে আরও প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন গত তিন বছর ধরে আত্মগোপন করে থাকার সুবাদে।

নানা সূত্রে এই তথ্য রয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির কাছেও। তাই এক মাস ধরে রাজ্যপালের উত্তরবঙ্গে ঘাঁটি গাড়ার আড়ালে বিজেপির মরিয়া চেষ্টাও দেখছেন অনেকে। যেমন, বিজেপি বিরোধী পাহারের অনেকেই দাবি করছেন, রাজ্যপালের দীর্ঘ সফরের সময়ে গুরুংয়ের সমর্থক পাহাড়-সমতলের নেপালিভাষী বুদ্ধিজীবীদের বিজেপির দিকে সামিল করানোর চেষ্টা হবে। একইসঙ্গে গুরুংপন্থী নেতাদের মধ্যে কয়েকজনকে বাছাই করে বিজেপির তরফে নানা সরকারি ও দলীয় পদ দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হতে পারে বলেও পাহাড়ের রাজনীতিতে জোর চর্চা চলছে।

বিমল-রোশন গিরিদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন আইনজীবী জানান, রাজ্যপালের সফরে যা হবে তা সবই যে অরাজনৈতিক তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু, সেই সফরকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি যদি পাহাড়ে সংগঠন চাঙ্গা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে তাতে বিমল গুরুং এখনও পাহাড়ে কতটা প্রভাবশালী সেটাই স্পষ্ট হবে। সে দিক থেকে দেখলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পাহাড়ের কর্তৃত্ব স্থাপনে এখনও এগিয়ে বলে অনেকেই মনে করছেন।

spot_img

Related articles

এখানে স্লোগান নয়: শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই বিরোধীদের কণ্ঠরোধের ‘হুমকি’ মোদির!

বিহার নির্বাচনের অজুহাত দিয়ে বিরোধী দলগুলির মুখবন্ধ করার পন্থা যে স্বৈরাচারী মোদি সরকার বরাবর নিয়ে আসে, তার ব্যতিক্রম...

কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বঞ্চনার নজির, রাজ্যে বন্ধ ১ কোটি জনধন অ্যাকাউন্ট

ঘটা করে দেশে ব্যাপক ব্যাঙ্কিং পরিষেবার উদাহরণ তুলে ধরতে দেশজুড়ে জনধন অ্যাকাউন্ট খুলেছিল মোদি সরকার। আবার ১০ বছর...

বিয়ে তো হল, হানিমুন কবে? এবার উত্তর দিলেন দিলীপ ঘোষ

ঘটা করে সকলের নজর কেড়েই বিয়েটা হয়েছিল। সেই সময়ই অপকটে বলেছিলেন - বিয়ে হল। হানিমুনও (honeymoon) যথা সময়ে...

পিছোল এসআইআর-এর সময়সীমা! ‘তাড়াহুড়ো’র বিরোধীতা করে কমিশনকে আক্রমণ চন্দ্রিমা–পার্থর

এসআইআর প্রক্রিয়ার নির্ঘণ্ট নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক চাপানৌতনের মধ্যে অবশেষে এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেল খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ-সহ গোটা...