Thursday, December 25, 2025

কাল কি ঝাড়খণ্ডের পথেই হাঁটবে বিহার?

Date:

Share post:

করোনা মহামারির মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক যুদ্ধের ফল কাল। বিহার বিধানসভার ২৪৩ আসনে তিনদফায় ভোট হয়েছে। প্রধান প্রতিপক্ষ এনডিএ বনাম মহাজোট। মুখ্যমন্ত্রী পদে নীতীশের বিরুদ্ধে মুখ মহাজোটের নেতা তেজস্বী যাদব। চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি আলাদা লড়ছে। মূল দুই জোটেই একাধিক স্থানীয় দল সামিল হয়েছে। তবে লড়াই মূলত জেডিইউ- বিজেপি জোটের সঙ্গে আরজেডি, কংগ্রেস, বাম জোটের।

প্রায় সব বুথফেরত সমীক্ষাতেই বিহারে নীতীশকুমারের নেতৃত্বাধীন বিজেপি- জেডিইউ জোটের ভরাডুবির ইঙ্গিত। লালুপুত্র তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে আরজেডি, কংগ্রেস, বামেদের মহাজোট বিহারে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে সবকটি বুথফেরত সমীক্ষা। কোনও কারণে ত্রিশঙ্কু হলে চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি ও অন্য ছোট দলগুলির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। যদিও চিরাগ পাসোয়ানের নেতৃত্বে এলজেপি খুব ভাল করছে এমন কোনও পূর্বাভাস নেই।

বুথফেরত সমীক্ষা সঠিক প্রমাণিত হলে পূর্ব ভারতে ঝাড়খণ্ডের পর আর একটা হিন্দিভাষী রাজ্য যাবে অবিজেপি জোটের দখলে। ঝাড়খণ্ডের মত বিহারেও বিজেপি জোটকে হারিয়ে বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক শক্তির উত্থানের ইঙ্গিত। অর্থাৎ কংগ্রেসের গুরুত্ব যে ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে তা মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের পর আবার দেখা যেতে পারে বিহারে। এতে আর একটা বিষয় স্পষ্ট। বিজেপির প্রতিপক্ষ হিসাবে একাধিক রাজ্যেই কংগ্রেস পিছনের সারিতে চলে যাচ্ছে। কোথাও শিবসেনা, কোথাও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা বা কোথাও আরজেডির শরিক হিসাবে প্রাসঙ্গিক থাকতে হচ্ছে কংগ্রেসকে।

আরও পড়ুন:সুশান্ত মৃত্যু: সংবাদমাধ্যম, অ্যাঙ্করদের জবাব তলব দিল্লি হাইকোর্টের

বিহারের ভোটে এনডিএর পরাজয় হলে তা হবে নীতীশের হার, মোদির নয়; এমন একটি প্রচার পরিকল্পিতভাবে বিজেপি করতে চাইবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছিল তার পিছনে কেন্দ্রের ভূমিকাই প্রধান, রাজ্যের ভূমিকা নগণ্য। একইসঙ্গে এবারের বিহার ভোটে সিএএ ইস্যুও নজর কেড়েছে। এক্ষেত্রে বিজেপির উল্টো বক্তব্য ছিল নীতীশের। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রচারে এসে সিএএ নিয়ে যা বলেছেন, তা প্রকাশ্য সভায় খারিজ করে সম্পূর্ণ উল্টো কথা বলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। নীতিগত বিষয়ে দুই শরিকের দুই মতে ভোটাররা বিভ্রান্ত হয়েছেন। আবার তেজস্বীর প্রচারে ১০ লক্ষ কর্মসংস্থানের ঘোষণা এই ভোটে বড় ফ্যাক্টর হয়েছে। এই দাবির বাস্তবতা যাই হোক, করোনা এবং অর্থনৈতিক সংকটের পরিস্থিতিতে কাজের শ্লোগানই সবচেয়ে ক্লিক করেছে। এনডিএ যতই লালু জমানার গুণ্ডারাজ বা আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা প্রচার করুক, দুটি বিষয়ের জন্য এই প্রচার দাগ কাটেনি। ১) লালু নিজেই গোটা ভোটপর্বে অনুপস্থিত। তেজস্বীর মত একদম নতুন প্রজন্ম সামনের সারিতে। ২) নতুন ভোটার বা কমবয়সী ভোটারদের কাছে লালু জমানার স্মৃতি নেই। বরং তারা টানা ১৫ বছর নীতীশের শাসন পর্ব দেখছেন। তাই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তীব্র। শেষ পর্যন্ত কী হয় তার জানতে আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা।

spot_img

Related articles

সময়ের দেরিতেই বাঁধা প্রেমের গল্প-২৫ দিনের মাইলস্টোন ছুঁয়ে হলে ‘দেরি হয়ে গেছে’

সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নস্টালজিয়া, আবেগ আর রহস্যের মিশেলে দর্শকদের মন জয় করে প্রেক্ষাগৃহে টানা ২৫ দিনের বেশি সময় ধরে সফলভাবে...

নতুন তিন বিমান সংস্থা: ইন্ডিগোর একচেটিয়া দখল ভাঙছে দেশের আকাশে 

দেশের আকাশপথে একচেটিয়া দখল ভাঙতে যাচ্ছে। ইন্ডিগোর বিমান বাতিল ও যাত্রী অসুবিধার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন তিনটি সংস্থাকে...

ক্রিসমাস ইভে পর্তুগিজ চার্চে সকলের মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা মুখ্যমন্ত্রীর

ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এই মতাদর্শে বিশ্বাসী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যতটা শ্রদ্ধা ও গুরুত্বের...

শালবনিতে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হুগলিতে ওয়্যারহাউস! সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার 

কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে...