পদ্মা সেতু: বাকি আর মাত্র চারটি স্প্যান

খায়রুল আলম, ঢাকা

পদ্মা সেতুর ৩৭তম স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেতুর এক প্রান্তে পিয়ার-৯ ও পিয়ার-১০ এর ওপর ৩৭তম স্প্যান স্থাপন করা হয়। এতে সেতুর সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দৃশ্যমান হলো। এখন বাকি আছে মাত্র চারটি স্প্যান।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এ খবর নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে স্প্যান ২-সি পিয়ারে বসানো হয়। বৃহস্পতিবার স্প্যানটি লৌহজংয়ের মাওয়ার কুমারভোগে অবস্থিত কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টিল ট্রাস জেটি থেকে তিয়ান-ই ক্রেনে করে পিয়ারের উদ্দেশে রওনা দেয়। ৩০ মিনিট পরেই সেটা নির্দিষ্ট পিয়ারের কাছে পৌঁছে যায়।

সফলভাবে ২-সি স্প্যান বসানোর পর সেতুর মোট পাঁচ হাজার ৫৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো। আর বাকি আছে মাত্র চারটি স্প্যান। এই চারটি স্প্যানের মধ্যে দুই স্প্যানের রঙ করা শেষ হয়েছে। বাকি দুই স্প্যানের রঙ করার কাজ শেষের পথে। ৩৬তম স্প্যান বসানোর ছয় দিনের মাথায় বসলো ৩৭তম স্প্যান। গত অক্টোবরে চারটি স্প্যান বসানো হয়েছে।

অন্যদিকে, ১৬ নভেম্বর পিয়ার ১ ও ২ নম্বরে ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’, আগামী ২৩ নভেম্বর পিয়ার ১০ ও ১১ নম্বরে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর পিয়ার ১১ ও ১২ নম্বরে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ এবং ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান ‘২-এফ’ বসবে ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারের ওপর।

পদ্মা সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। এই স্প্যানের ছোট ছোট অংশগুলো প্রথমে তৈরি করা হয়েছে চিনে। পরে জাহাজে করে দীর্ঘ সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে আনা হয় বাংলাদেশের কন্সট্রাকশন এলাকায়। সেখানে ছোট অংশগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি ঝালাই দিয়ে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রত্যেকটি স্প্যান তৈরি করা হয়। তারপরে প্রতিটি স্প্যান ধূসর রঙে রাঙিয়ে পিয়ারে তোলা হয়। তবে, তার আগে কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টিল ট্রাস জেটি থেকে তিয়ান-ই ক্রেনে করে পিয়ারের উদ্দেশে রওনা দেয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও কারিগরি জটিলতা না থাকলে একদিনেই একটি স্প্যান পিয়ারের ওপর স্থাপন করা হয়। তবে আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলে, আলোক স্বল্পতা দেখা দিলে, নদীতে তীব্র স্রোত বা নাব্য সংকট থাকলে কখনও কখনও স্প্যান বসাতে দুই দিন লেগে যায়।

মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আব্দুল মোমেন লিমিটেড।

এদিকে, স্প্যান বসানোর পাশাপাশি সেতুর অন্যান্য কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। সেতুর মাসিক অগ্রগতির রিপোর্ট অনুসারে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ২৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে বসানো হয়েছে ১১৬৬টি এবং ২৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১৬৪৬টির বেশি বসানো হয়ে গেছে। সেতুর উভয় প্রান্তে ভায়াডাক্টের ৪৮৪টি সুপার-টি গার্ডারের মধ্যে স্থাপন হয়েছে ২৫৮টি। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের ৯০ শতাংশ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে এবং শেষ হওয়ার সংশোধিত শিডিউল ২০২১ সালের জুন মাসে। যদিও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন কাজ শেষ হতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।

আরও পড়ুন:নির্বাচনের এক সপ্তাহ পর ভোট দেওয়ার আর্জি জানিয়ে টুইট ট্রাম্প-পুত্রের, হাসির রোল নেট দুনিয়ায়

Previous articleঊর্ধ্বমুখী রুপো, জেনে নিন ধনতেরাসে সোনার দাম কত
Next articleসর্বধর্মসমন্বয়ে উদ্বোধন হল সুকিয়া স্ট্রিটের কালীপুজোর