কথা দিলেও ডিসেম্বরে বাড়ি ফেরা হবে না সুবোধের, দীপাবলিতে অন্ধকার তেহট্ট

ছেলের মৃত্যুতে শোকাহত পরিবার (ইনসেটে শহিদ সুবোধ ঘোষ)

ডিসেম্বরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিবেশী দেশের ছোঁড়া গুলিতে সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারলেন না। শুক্রবার রাতে শহিদ হলেন ভারতীয় সেনায় কর্মরত সুবোধ ঘোষ। শহিদ জওয়ানের কফিনবন্দি দেহ ফেরার অপেক্ষায় এখন বসে আছেন নদীয়ার তেহট্টের রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দারা।

পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরোধী লঙ্ঘনে সুবোধ সহ ৪ জওয়ান এবং ৬ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তেহট্টর বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মেধাবী ছাত্র না হলেও ছোটবেলা থেকে পড়াশোনায় ভালো ছিলেন সুবোধ। নিজের যোগ্যতাতেই যোগ দিয়েছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। গত বছর বিয়ে করেন যুবক। বাড়িতে আছে তিন মাসের এক কন্যা সন্তান। করোনা আবহে জুলাই মাসে এক মাসের জন্য বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু আতঙ্কের জেরে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন বেশিদিন। পরিজনদের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় কথা দিয়ে গিয়েছিলেন ডিসেম্বরেই বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু তা আর হলো না। বছর ২৪ তরতাজা প্রাণ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল।

ঘরের ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে থমথমে গোটা গ্রাম। সুবোধের পরিবার জানিয়েছে, যত কাজের চাপ থাকুক না কেন প্রতিদিন নিয়ম করে বাড়িতে ফোন করতেন তিনি। মেয়ের শরীর গত কয়েকদিন ধরে ভালো যাচ্ছে না। দূর থেকেও প্রতিদিন খবর নিতেন বাবা। কিন্তু শুক্রবার কোনও যোগাযোগ করেনি তিনি। বাড়ির সবাই যোগাযোগ করলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তখনই উদ্বেগ বাড়ে পরিবারের সদস্যদের।

সুবোধের মা বাসন্তী ঘোষ বলেন, ” শুক্রবার একটা ফোন আসে। অপরিচিত এক কন্ঠ জানায় আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। পাকিস্তানের দিক থেকে ধেয়ে আসা গুলিতে শহিদ হয়েছে সে।” স্বামীর অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না সুবোধের স্ত্রী অনিন্দিতা ঘোষ। তিনি বলেন, ” গত কয়েকদিন ধরেই মেয়ের খুব শরীর খারাপ। বৃহস্পতিবার ওকে ডাক্তার দেখাতে যাই। আমার স্বামী বার বার ফোন করে খোঁজ নিয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে কোনও ফোন পাইনি। ওকে ফোন করা হলেও ফোন বন্ধ পাই। বিকেল নাগাদ ওঁর মৃত্যু সংবাদ জানতে পারি।”

আরও পড়ুন:উধাও দেশপ্রেম, চায়না আলোয় ডুবেছে শহর 

Previous articleসকাল থেকে দক্ষিণেশ্বরে ভক্তদের ভিড়, পিপিই পরেই মায়ের আরাধনা পুরোহিতদের
Next articleসচেতনতার বার্তা দিয়ে রাজ্যবাসীকে কালীপুজো-দীপাবলির শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর