‘কী কথা তাহার সাথে?’ পাহাড়ে ধনকড়ের সঙ্গে হঠাৎ বৈঠক মান্নানের

বাংলার রাজ্যপালের আসনে বসলেও জগদীপ ধনকড় শুরু থেকেই বিরোধী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। শাসক দলের তরফে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে বারবার। রবিবার সকালে এহেন জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে দার্জিলিংয়ের হঠাৎ বৈঠক করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। এদিন প্রাতরাশ করতে করতে দীর্ঘক্ষন দু’জনের আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও দীর্ঘ বৈঠকে দুজনের কি নিয়ে কথা হয়েছে সে বিষয়ে মুখ খোলেননি কেউই। মান্নান অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি দলের কাজে দার্জিলিং এসেছিলেন। রাজ্যপাল এখানেই আছেন তাই সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে বিরোধী দলনেতা হিসেবে দেখা করেছেন। এ ছাড়া কিছুই নয়।

তবে মান্নান বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও সন্দেহ কাটছে না কোনওভাবেই। তার অন্যতম বড় কারণ শুরু থেকেই রাজ্যের রাজ্যপালের ‘বিরোধী’র ভূমিকা পালন করা। ফলস্বরূপ বিরোধী দলনেতা মান্নানের সঙ্গে রাজ্যপালের এই সাক্ষাতে ভ্রূকুঞ্চিত হয়েছে রাজনৈতিক মহলের। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বার টুইট করে রাজ্য প্রশাসনকে আক্রমণে গিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তার আক্রমণের তীরে সরাসরি বিদ্ধ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য প্রশাসন। ফলস্বরূপ রাজ্যপালের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূলের শীর্ষস্তরের নেতৃত্বরা।সেই তালিকায় বাদ যাননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এমনকি মহুয়া মিত্রও। তবে থামতে নারাজ রাজ্যপাল বিরোধিতা চালিয়ে গিয়েছেন লাগাতারভাবে। আর ঠিক এই জায়গা থেকেই বিচার করলে দেখা যাবে রাজ্যের রাজ্যপাল ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের আক্রমণের তীরের ফলা একদিকেই তাক করে রয়েছে। তা হল শাসকদল ও রাজ্য প্রশাসন। বিরোধী দলনেতা হিসেবে মান্নান যে সমস্ত ইস্যু তুলে রাজ্য প্রশাসনকে আক্রমণ করছেন রাজ্যপালও সেই ধারা অনুসরণ করেছেন বেশ কিছু ক্ষেত্রে। ফলস্বরূপ মান্নান ও রাজ্যপালের এই সাক্ষাতে বঙ্গ রাজনীতির জল আরও ঘোলাটে হতে শুরু করেছে।

এদিকে কংগ্রেস সূত্রে জানা যাচ্ছে, আব্দুল মান্নানের পাহাড় সফরে বিশেষ কিছু গুরুত্ব রয়েছে। জানা যাচ্ছে এই সফরে পাহাড়ে বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতার সঙ্গে কথা বলবেন মান্নান। তার উদ্দেশ্য বিজেপি ও তৃণমূলের বাইরে বেরিয়ে পাহাড়ে তৃতীয় কোনো বিকল্প তৈরি করা। একটা সময়ে দার্জিলিঙে কংগ্রেস ও সিপিএমের প্রভাব থাকলেও সম্প্রতি পাহাড় তো বটেই সমতলেও কোণঠাসা এই দুই দল। বর্তমান সময়ে পাহাড়ের জনপ্রিয় নেতা বিমল গুরুং তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন। পাশাপাশি একটা সময় বিজেপি ঘনিষ্ঠ থাকা গুরুং পাহাড় ছাড়া হওয়ার পর সেখানে ক্ষমতার রাস এখন বিনয় তামাংয়ের হাতে। ফলে এই দুই শিবির কার্যত বিভক্ত। ঠিক এখান থেকেই পাহাড়ে তৃতীয় কোনও ফ্রন্ট করা যায় কিনা সে অনুসন্ধান চালাতে পাহাড় সফরে আব্দুল মান্নান।

Previous articleঅধীরের ‘মুখ’ হওয়া নিয়ে বিতর্কের মাঝে ১৬ দলের বৈঠক
Next articleএকবালপুরে তরুণীর রহস্যমৃত্যু, গ্রেফতার প্রেমিক ও তার স্ত্রী