Wednesday, November 5, 2025

‘আলোর শহরে’ নেই আলোর বাহার, চন্দননগরে এবছর অন্য পুজো

Date:

Share post:

জগদ্ধাত্রী পুজো বলতেই জনসাধারণের মনে ভেসে ওঠে চন্দননগরের কথা। আলোয় ঝলমলে চারিদিক। কিন্তু করোনা আবহে এবছর সবই ফিকে। ‘আলোর শহরে’ নেই সেই আলোর বাহার। বাড়তি প্রায় কিছুই নেই। না উপচে পড়া ভিড়, না থিমের বাহার, না আলোর চমক, না নিজস্বী তোলার ধুম, না রেস্তোরাঁয় লম্বা লাইন। তার মধ্যেই এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন বারোয়ারীতে শুরু হয়েছে নবমী পুজো।

আরও পড়ুন : করোনা আবহে দুর্গাপুজোর মতোই অনলাইনে ইউটিউবে জগদ্ধাত্রী পুজো দেখাবে বেলুড় মঠ

অন্যান্য বছরের মত পুজোর নিয়ম একই রয়েছে। বিশেষ ভোগ, আরতি, কুমারী পুজোর মত বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে, যা সারাদিন ধরে চলবে বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। রীতি অনুযায়ী নবমীতে অঞ্জলি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও, সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখার কারনে এবার অনেক বারোয়ারী পুজোই তা বন্ধ রেখেছে। অনেক এলাকাতেই বহুদূর পর্যন্ত মাইক লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে বাসিন্দারা বাড়িতে বসেই অঞ্জলি দিতে পারেন। যদিও এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন মন্ডপের সামনে পুজো দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের ভিড় চোখে পড়ছে। লাইন করে সেই দূরত্ব বজায় রাখার জন্য চেষ্টা করছেন উদ্যোক্তারা।

চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি’র অধীনে এ বার মোট ১৭১টি (ভদ্রেশ্বরের পুজো মিলিয়ে) পূজো হচ্ছে। এর মধ্যে ১৩টি পুজো কমিটি আজ, মহানবমীতে ঘটপুজো করবে। বিশেষ জয়ন্তী বর্ষ রয়েছে ১০টি পুজো কমিটির। সাধারণত, জয়ন্তী বর্ষের পুজোতে এবং তার বিসর্জনে বাড়তি আয়োজন থাকে। এ বার সব কমিটিই তা বাদ দিয়েছে। পুজো উদ্যোক্তারা জানালেন, এবছর নমো নমো করেই হবে পুজো।

অন্যান্য বার পঞ্চমীর বিকেল থেকেই দুই রাস্তায় গিজগিজ করে কালো মাথা। এ বার অষ্টমীর রাতেও সেই ভিড় নেই। এইভাবে পুজো দেখতে অভ্যস্ত নয় আট থেকে আশি। স্বভাবতই মন খারাপ চন্দননগরবাসীর। কলকাতায় যেমন দুর্গাপুজো, চন্দননগরে তেমন আড়ম্বরে পালিত হয় জগদ্ধাত্রী পুজো। বাসিন্দারা জানালেন, সারা বছর অপেক্ষা থাকে এই চারটে দিনের। এ বার এমন রোগ এল, সব ওলটপালট করে দিল। এটা মেনে নিতেই হবে, কিছু করার নেই।

আরও পড়ুন : জগদ্ধাত্রী রূপে মা তারার পুজো তারাপীঠে

এবছর দুর্গাপুজো নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরেই জগদ্ধাত্রী পুজো কী ভাবে হবে, তা নিয়ে আগাম আশঙ্কায় নড়েচড়ে বসেছিল চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি এবং পুলিশ প্রশাসন। শেষমেশ পুজোতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। বাদ যায় নবমীর ভোগ বিলি, দশমীর দেবীবরণ এবং বিসর্জনের শোভাযাত্রা। পুষ্পাঞ্জলিতে নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়। মাস্কহীন অবস্থায় রাস্তায় ঘুরলে গ্রেফতারিরও নির্দেশ দেয় প্রশাসন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় পুজো কমিটিও দফায় দফায় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। সব মিলিয়ে এবছর করোনা আবহে এক অন্য জগদ্ধাত্রী পুজো উদ্‌যাপন করছে চন্দননগর।

spot_img

Related articles

অনলাইন গেমিং বাতিল কেন, কেন্দ্রের হলফনামা চায় সুপ্রিম কোর্ট 

অনলাইনে কোনও টুর্নামেন্ট বা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে যদি কেউ টাকা রোজগার করতে পারে তাহলে সেটাকে কেন জুয়া হিসেবে...

বিলাসপুরের ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ৮: মৃত চালকের উপরই দায় চাপানোর চেষ্টা!

বরাবর যেভাবে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ট্রেনের চালকের উপর দায় চাপিয়ে অব্যবস্থা ও পরিকাঠামোর অভাবকে ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে...

ঠাকুরবাড়িতে প্রকাশ্যে ঘরোয়া কোন্দল! শান্তনুর সঙ্গ ছাড়লেন দাদা সুব্রত 

মতুয়া সংগঠন ঘিরে দীর্ঘদিনের অন্দরের টানাপোড়েন এবার প্রকাশ্যে। পারিবারিক অশান্তি এবং সংগঠনের ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে ঠাকুরবাড়িতে দেখা দিল...

বিরোধীদের কুৎসায় কালি: রাজ্যে SIR প্রক্রিয়ার প্রথমদিন শান্তিপূর্ণ, তথ্য পেশ কমিশনের

নির্বাচন কমিশনের তরফে বিএলও। রাজনৈতিক দলের তরফে বিএলএ। রাজ্যের নাগরিক ভোটার। এই তিনের সমন্বয়ে মঙ্গলবার থেকে গোটা রাজ্যে...