আশ্চর্য সমাপতন! ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুদিনেই প্রয়াত মারাদোনা

জয়িতা মৌলিক

কী আশ্চর্য সমাপতন! সেই ২৫ নভেম্বর- প্রিয় বন্ধু ফিদেল কাস্ত্রোর কাছে না ফেরার দেশে চলে গেলেন দিয়েগো মারাদোনা। ২০১৬-তে একই দিনে মারা গিয়েছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো। মাঝে ব্যবধান শুধু চার বছরের। দুই হাজার কুড়ির কঠিন সময়ে সেই ২৫ তারিখ চলে গেলেন মারাদোনাও। যাঁর পায়ের যাদুতে মুগ্ধ ছিল সারা বিশ্বের ফুটবল প্রেমী মানুষ, তিনি একসময় তলিয়ে গেছিলেন অন্ধকারে। স্পনসরাও হাত গুটিয়ে নিয়েছে। পাশে নেই কেউ। আর এই পরিস্থিতিতে ঘিরে ধরল ড্রাগের নেশা। অতলে ডুবে যাচ্ছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনা। সালটা ২০০৪। তার ৩০ আর্জেন্টিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে। সেই সময় তার পাশে এসে দাঁড়ান কিউবার নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। রাজধানী হাভানাতেই শুরু হয় মারাদোনার রিহ্যাব বা পুর্নবাসন।

সেই সময় আর্থিক টানাপোড়েনে জর্জরিত মারাদোনা। নেশা করে নিজেকে যেন আরও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছিলেন তিনি। আর্থিক সাহায্য তো দূর পাশে দাঁড়ানোর লোক পাওয়া যেত না। এরকম পরিস্থিতিতে মারাদোনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন কাস্ত্রো। কিন্তু প্রতিদানে কিছুই চাননি তিনি। এমনকী, কিউবার জাতীয় দলের কোচ হওয়ার জন্যেও অনুরোধ করেননি মারাদোনাকে। কিউবাকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে ব্যবহার করেননি মারাদোনার জনপ্রিয়তা।

শুধুই ছিল বন্ধুত্ব। হতে পারে অসম। কিন্তু তার টান ছিল অমোঘ। ২০১৬-তে ফিদেল কাস্ত্রোর মারা যাওয়ার পরে মারাদোনা কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, “আমার দ্বিতীয় বাবাও চলে গেলেন, এবার কার কাছে যাব?”

কাস্ত্রোর শেষকৃত্যের জন্য কিউবায় পৌঁছে মারাদোনা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, বিশ্ব তার প্রকৃত নেতাকে হারিয়েছে।” আমিও নিজেকে একজন কিউবান মনে করছি”। এই থেকে বোঝা যায় তাঁর হৃদয়ের কতখানি জুড়ে ছিলেন কাস্ত্রো।

মারাদোনা যখন শেষবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। সবে সুস্থ হচ্ছেন। সেই সময়েও তাঁকে চিকিৎসার কিউবায় নিয়ে যাওয়ার কথা উঠেছিল। তাঁর আইনজীবী মাতিয়াস মোরলা বলেছিলেন, “দিয়াগো খুবই ভাল আছেন” তারসঙ্গে আরো জানিয়েছিলেন, কিউবাকে অত্যন্ত ভালবাসেন মারাদোনা। এমনকী চিকিৎসার ব্যাপারে কিউবা যাওয়ার বিষয় নিয়ে ফিদেল কাস্ত্রোর ছিলেন সঙ্গে মাতিয়াস কথাও বলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি দিয়েগোকে। কিউবায় আর যাওয়া হল না ফুটবলের রাজপুত্রর। প্রিয় কমরেড যেদিন মারা গিয়েছিলেন সেই একই দিনে আর্জেন্টিনায় শেষ নিঃশ্বাস ফেললেন মারাদোনা।

আরও পড়ুন- একত্রে বসবাসের শর্তসাপেক্ষে একদিনে ৪৭ দম্পতির মামলা নিষ্পত্তি 

Previous articleএকত্রে বসবাসের শর্তসাপেক্ষে একদিনে ৪৭ দম্পতির মামলা নিষ্পত্তি 
Next article৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ