ধন্দে সরকারি কর্মীরা, ডিএ মিলবে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে?

তবে কি সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা প্রাপ্তি হবে না? ডিএ মেটানোর জন্য আর সপ্তাহ দুয়েক বাকি ছিল। তার আগে রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ফলে আবারও বকেয়া ডিএ নিয়ে তৈরি হল আইনি জট। সরকারি কর্মচারীদের তরফে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “২৩ সেপ্টেম্বর, রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দেয় স্যাট। বলা হয়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ দিতেই হবে। এখন করোনা পরিস্থিতির জন্য ডিএ দেওয়া সমস্যা বলে রাজ্যের পক্ষে জানানো হলে স্যাট জানায় এনিয়ে ভাবনাচিন্তা করে দেখা হবে।”

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্যাট জানিয়েছিল, মহার্ঘ ভাতা দেওয়া বা না দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারের উপর নির্ভর করছে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের দুটি সংগঠন। এরপর ২০১৮ সালের অগাস্টে স্যাটের রায় খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বেঞ্চ জানায়, রাজ্যের মর্জির উপর নির্ভর করে না ডিএ। মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মচারীদের অধিকার। গত বছর ২৬ জুলাই স্যাট নির্দেশ দেয়, ক্রেতা মূল্যসূচকের উপর ভিত্তি করে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দিতে রাজ্য সরকারকে। তার ভিত্তিতে কত ডিএ বকেয়া আছে, তা তিন মাসের মধ্যেই ঠিক করতে হবে। তারপর ছ’মাসের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে। অর্থাৎ উপযুক্ত হিসেব কষে ছ’মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দিয়েছিল, যে পরিমাণ ডিএ বকেয়া আছে, তা এক বছরের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ ২০০৯ সালের ১ জুলাই থেকে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার আগে পর্যন্ত যে পরিমাণ বকেয়া মহার্ঘ ভাতা আছে, তা মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। তারইমধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি দাখিল করে রাজ্য সরকার।

২০২০-র জুলাইয়ে রাজ্যের পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দেয় স্যাট। এরপর নবান্ন সূত্রে খবর মিলেছিল, স্যাটের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়া হতে পারে। বিশেষত রাজ্যের হাতে টাকা না থাকায় সেই পথে হাঁটা হতে পারে বলে জানা যাচ্ছিল।

কেন্দ্রীয় হারে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতার দাবি তুলে স্যাটে মামলা করেছিল কংগ্রেস সমর্থিত ‘কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্মেন্ট এমপ্লয়িজ’ছাড়াও আরও দুটি সরকারি কর্মীদের সংগঠন। সেই মামলায় স্যাট নির্দেশ দিয়েছিল, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারকে বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। এরমধ্যেই বদল হয় মুখ্যসচিবের। রাজীব সিনহার বদলে নতুন মুখ্যসচিব হন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মচারী সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়েছিল, সংশোধিত আবেদন জমা দিতে। স্যাটের পরিষদে দায়ের করা মামলাটি ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছিল। তার আগেই কলকাতা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটানোর জন্য রাজ্যের কাছে এখনও দু’সপ্তাহের বেশি সময় আছে।

আরও পড়ুন-উৎসবের মরশুম শেষ হতেই ফের দাম বাড়ল পেট্রোল ডিজেলের

Previous article৪৩৪ দিন পর বল হাতে হার্দিক, নিলেন একটি উইকেটও
Next articleবিশ্বাসঘাতক! শুভেন্দুর নাম না করে সাতগাছিয়ার সভায় তুলোধনা করলেন অভিষেক