দলের ভার্চুয়াল সভায় বিস্ফোরক তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিষ্কার ভাষায় জানালেন কেউ কেউ আমার মৃত্যু কামনা করছে। চাইছে আমি মারা যাই! লক্ষ্য যে দলের বিদ্রোহী নেতা শুভেন্দু অধিকারী, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর সে নিয়ে দলীয় মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য।

নেত্রীর মুখে এমন কথা শুনে কেঁদে ফেলেন দলের বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত বক্সি। বলেন, কেন তুমি বারবার এ কথা বলছ? বলেই চোখ ছলছল সুব্রতর। তাঁকে স্বান্তনা দিতে এবার নেত্রী মাইক ধরে বলেন, জানি এরকম লোকজন হাতে গোনা কয়েকজন। কিন্তু কী করব আমি চাইলেই তো মারা যাব না! এবার ভিডিও সভা ক্রমশ ভারী হয়ে ওঠে। আর তা বুঝেই নেত্রী ফিরে আসেন মেজাজে। বলেন, অনেকে সিবিআই-ইডির ভয়ে বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছে। আমার স্পষ্ট কথা, যাদের এমন মেরুদণ্ড তারা চলে যাক। তারপরই অভয়বাণী, ভয় নেই, মাথার উপর আমি আছি।
আর এ কথা বলেই নেত্রীর কড়া বার্তা দলের নেতা শিশির অধিকারীকে। বলেন, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে একের পর এক দল বিরোধী কাজের অভিযোগ আসছে। কাঁথি, নন্দীগ্রাম থেকে বেশি। এখনই এদের সরিয়ে দিন। কোনও দলবিরোধী কাজ বরদাস্ত করব না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা দলের কর্মীদের, সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। সভায় বা টিভিতে কোনও দল বিরোধী কথা নয়। এরপর নেত্রী কিছুটা ঠাট্টার ছলে বলেন, দরকারে ক্ষোভের কথা জানানোর জন্য পার্টি অফিসে কমপ্লেন বক্স করে দেব।

আরও পড়ুন : কৃষকদের সমর্থনে এবার অবস্থান-বিক্ষোভে তৃণমূল, সূচি ঘোষণা মমতার

বৈঠকের মাঝেই নেত্রী আজকের সভার ৫হাজার নেতা-কর্মীর তালিকা তুলে ধরেন। বলেন, সেই তৃণমূল আর নেই। পাঁচটা জেনারেশন তৈরি করে দিয়েছি। সিপিএম-কংগ্রেস তা পারেনি বলেই দলটা উঠে গেল।

কখনও কড়া বার্তা, কখনও আবেগ আবার কখনও সাংগঠনিক কর্মসূচির কথা বলেছেন মমতা। বলেছেন, জানি দলের বেশিরভাগ কর্মী সম্পদ। তারা দলের জন্য জীবন দিতে পারে, বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে, রক্ত ঝরাতে পারে। এর ফাঁকেই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ হলো বঙ্গধ্বনি কর্মসূচি। ১১-২১ ডিসেম্বর বাড়ি-বাড়ি, গ্রামে গ্রামে কর্মসূচি।

তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেন সুব্রত বক্সি। তিনি জানান, আগামী ভোটে জিতব জানি। কিন্তু মোটেই কঠিন নয় ভোট। তবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সারা দেশ এই ভোটের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। বাংলার ভোটে কী হবে। তাই আমাদের আরও পরিকল্পিতভাবে, সংগঠিতভাবে, জোরালোভাবে এগোতে হবে।
