জাতীয় সঙ্গীত বদলাতে চান স্বামী ! কী বললেন সুখেন্দুশেখর?

এতদিন বিভিন্ন জায়গার নাম নিয়ে আপত্তি করে এসেছে বিজেপি। সেই অনুযায়ী বদলানো হয়েছে নামও। পুরসভা নির্বাচনের সময় হায়দরাবাদের নাম পরিবর্তনের দাবি তুলেছিল তারা। ইলাহাবাদের নাম ইতিমধ্যেই পাল্টে ফেলেছে। সম্প্রতি তিরুঅনন্তপুরমের রাজীব গাঁধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি (আরজিসিবি) (RGCB)-র দ্বিতীয় ক্যাম্পাসটির নাম পাল্টে সঙ্ঘ ‘গুরুজি’ গোলওয়ালকরের নামে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্কও।

কিন্তু এবার জাতীয় সঙ্গীত জন গন মন (JANA GANA MANA)-র দিকে চোখ পড়েছে তাদের। আপত্তি তুললেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী (Subramanian Swamy)। বিজেপি সাংসদের আপত্তির অন্যতম শব্দটি হল জাতীয় সঙ্গীতে ‘সিন্ধু’ শব্দটির ব্যবহার। তাঁর মতে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে, সিন্ধু ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এই ধরণের শব্দ অনাবশ্যক বিতর্কের সৃষ্টি করে। তাই এটি বদলে ফেলা উচিৎ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) লেখা জনগণমন বদলে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhas Chandra Bose)-র আজাদ হিন্দ ফৌজের(Azad Hind Fauz) লেখা জাতীয় সঙ্গীত ব্যবহার করা হোক। এই দাবি তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)কে চিঠি লিখেছেন বিজেপি নেতা তথা রাজ্যসভা সাংসদ।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৩-এ রবীন্দ্রনাথের ‘জন গণ মন’-র কিছু শব্দ বদলে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (INA)-র গেয়েছিল ‘জন গণ মন’। সুভাষ বসুর নির্দেশে আইএনএ-র দুই সদস্য মুমতাজ হোসেন এবং কর্নেল আবিদ হাসান সাফরানি গানটি লিখেছিলেন। সুর দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রাম সিংহ ঠাকুর। স্বামীর দাবি, সেই গানের আদলে লেখা অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় সঙ্গীত ‘কাওয়ামি তারানা’ (Qaumi Tarana)-র প্রথম পংক্তি ‘শুভ সুখ চ্যান’ (Subh Sukh Chain) গানটি অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। রবীন্দ্রনাথের ‘জন গণ মন’-র প্রথম পংক্তিটি জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হয় এবং তাতে ৫২ সেকেন্ড সময় লাগে। পক্ষান্তরে আইএনএ-র ‘কাওয়ামি তারানা’র প্রথম পংক্তিটি গাইতে সময় লাগে ৫৫ সেকেন্ড।

আরও পড়ুন : অমিত শাহের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ, আপ বিধায়ককে আটক করল পুলিশ

উল্লেখ্য, গত দু’বছরে বিভিন্ন সময়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের নানা কবিতা আবৃত্তি করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দলের নেতারাও, বাংলায় এলে সেই রবীন্দ্রনাথকেই উদ্ধৃত করেন। সামনেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর এই টুইট বিতর্ক উস্কে দিল।

এই প্রসঙ্গে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল সংসদীয় দলের জাতীয় মুখপাত্র ও মুখ্য সচেতক, সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy)। তাঁর কথায়, ” উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে ভিডিও বৈঠকের ছবির পেছনে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ছবি! রাম মন্দিরের ছবি দিলেই তো পারতেন। সারা পৃথিবীর কাছে হিন্দু রাষ্ট্রের প্রতীক তুলে ধরা যেত। এখন ওরা এবার দাবী তুলছে, রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সঙ্গীত বাতিল করতে হবে। ঐতিহাসিকদের মতে, ভারতীয় সমাজব্যবস্থা তো সিন্ধু সভ্যতারই অবদান। আসলে নানাভাবে বাংলার ওপর হামলা শুরু হয়েছে। জাতীয় সঙ্গীতের ওপর আক্রমণ মানে বাঙালী গৌরব ও জাতীয় চেতনার মূলে কঠোরতম আঘাত বলেই মন্তব্য করেছেন সুখেন্দু শেখর।

Previous articleকেন্দ্রীয় নেতৃত্বের গুঁতোয় আজ গণভোটের সিদ্ধান্ত থেকে পিছোলেন বিপ্লব, ত্রিপুরা জটে জেরবার বিজেপি
Next article‘মমতাকে খুনও করতে পারে বিজেপি’, বিস্ফোরক অভিযোগ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের