কৃষকদের আস্থা ফেরাতে সাময়িকভাবে আইন প্রত্যাহার করুক কেন্দ্র, মত নোবেলজয়ী অভিজিতের

কৃষকরা সরকারের কথায় আস্থা রাখতে পারছেন না। তাই যতদিন না সেই আস্থা অর্জন করা যায় ততদিন পর্যন্ত সাময়িকভাবে নতুন কৃষি আইন (new farm law) প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। এমনই মত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhijit Vinayak Bandyopadhay)। তিনি মনে করেন, সংসদে যতদিন পর্যন্ত এই আইনের ভালো-মন্দের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা শেষ না হয়, ততদিনের জন্য অন্তত সাময়িকভাবে হলেও নয়া আইন প্রত্যাহার করা উচিত। কৃষি আইনের প্রতিবাদে দিল্লিতে চলা লাগাতার কৃষক বিক্ষোভ (farmers protest) নিয়ে সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।

নতুন কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রের একবগ্গা মানসিকতার সমালোচনা করেন অভিজিৎ। তিনি বলেন, এখনও দেশে অতিমারি চলছে। ঠিক এই সময়ে এই আইন কার্যকর করা উচিত নয় বলে মনে করি। এই সময় অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। আর্থিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কৃষকরা বুঝতে পারছেন না, নয়া আইন কার্যকর হলে তাঁদের উৎপাদিত ফসলের দাম কীভাবে নির্ধারিত হবে। মূলত প্রবল অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, নয়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকরা অনড়। কেন্দ্রীয় সরকার আইনে সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিলেও তাতে সায় নেই কৃষক সংগঠনগুলির। তাদের দাবি, নতুন তিনটি আইন সংসদে দাঁড়িয়ে প্রত্যাহার করতে হবে। এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, সরকারের উপর কৃষকদের আস্থার জায়গায় চিড় ধরেছে। সেই কারণেই বারবার কেন্দ্র-কৃষক বৈঠক হলেও তাতে সমাধানসূত্র বেরোয়নি। কৃষকরা ভাবছেন এই আইনের জেরে কর্পোরেট সংস্থা তাঁদের ঠকিয়ে মুনাফা লুটবে। সরকার কর্পোরেটদের স্বার্থে আইন এনেছে এমন ধারণা তৈরি হয়েছে। হতে পারে সরকার মানুষের ভাল চাইছেন। কিন্তু সেটা কৃষকদের বোঝানো সরকারেরই দায়িত্ব। যতদিন না আস্থা অর্জন করা যায় ততদিনের জন্য আইনটি প্রত্যাহার (withdraw) করে সংসদে এনিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করুক কেন্দ্রীয় সরকার।

আরও পড়ুন – কৃষি আইনকে সমর্থন জানিয়ে মোদি সরকারের পাশে দেশের ১০ কৃষক সংগঠন

এদিকে মঙ্গলবার কুড়ি দিনে পড়ল কৃষি আইনের বিরোধিতায় প্রতিবাদী কৃষকদের আন্দোলন (farmers protest)। দিল্লি সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি আটকে হাজার হাজার কৃষক অনির্দিষ্টকালের অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন। এই সময়ের মধ্যে পালিত হয়েছে ভারত বনধ ও প্রতীকী অনশন। একদিকে আইন বাতিলের দাবিতে অনড় কৃষকরা, অন্যদিকে আইন বদলে নারাজ কেন্দ্র। কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে এই অচলাবস্থার পরিস্থিতিতে অস্বস্তি বাড়ছে সরকারের।

Previous articleশুভেন্দুর জন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা,১০ কম্যান্ডো- বুলেটপ্রুফ গাড়ি
Next articleআগাম নির্বাচনবিধি চেয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোটের দাবি বিজেপির