শুভেন্দু হারিয়ে দিলেন মুকুলকে, তৎকাল বিজেপির ঠেলায় ব্যাক বেঞ্চে আদি বিজেপিরা

শুভেন্দু অধিকারীর ( Suvendu Adhikari) বিজেপিতে আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু তার আগেই বিজেপি (BJP) মহলে আলোচনা শুভেন্দু হারিয়ে দিলেন মুকুল রায় (Mukul Roy) আর দিলীপ ঘোষকে।

কেন এই আলোচনা? বিজেপির একটি মহল বলছে, শুভেন্দু বিজেপিতে এলে তাঁর সঙ্গে আসবেন দলের বেশ কয়েকজন নেতা বা পদাধিকারী। আগামী বেশ কয়েকটা দিন তাঁকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে দল। দিল্লির নেতারা সরাসরি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। জেলা সফরে অমিত শাহ ( Amit Shah) কিংবা নাড্ডা ( J P Nadda) তাঁকে নিয়ে ঝড় তোলার চেষ্টা করবেন। ফলে আগামী দিন শুভেন্দু-স্রোতে ভাসবে বিজেপি।

শুভেন্দু যেটা পেরেছেন, সেটা পারেননি মুকুল রায়। তিনি একজন অনুগামী, বা পদাধিকারীকেও দলে আনতে পারেননি। মুকুল রায় যাদের অনুগামী বলতে চেয়েছেন, তারা সরাসরি দিলীপ ঘোষ কিংবা দিল্লির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দলে এসেছেন। রাজ্যের প্রতি বুথে তাঁর অন্তত দু’জন অনুগামী থাকার দাবিও যে ফাঁকা আওয়াজ সেটা দেখেছে, বুঝেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতার তকমা পেয়েও মুকুল ছাপ ফেলতে পারেননি, লোক টানতেও পারেননি। সেই জায়গায় শুভেন্দু অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। সঙ্গে রয়েছেন অনুগামীরা, আর রাজনৈতিক মুখ হিসাবে তাঁকে সামনে রাখবে বিজেপি। ফলে শুভেন্দুর ছায়ায় ঢাকা পড়ে গিয়ে আপাতত ব্যাক বেঞ্চই ভবিষ্যত প্রাক্তন রেলমন্ত্রীর।

অন্যদিকে বিজেপিতে আদি ও নব্য বিজেপির লড়াই। এই লড়াইয়ে দিলীপ ঘোষ (BJP WB President Dilip Ghosh) একাই লড়ে যাচ্ছেন। তাঁকেও দেখতে হবে নব্য বিজেপি শুভেন্দুকে নিয়ে মাতামাতি। কিন্তু দিলীপ ঘোষ রাজ্য বিজেপি সভাপতি। তপন শিকদারের পর সবচেয়ে কার্যকরী সভাপতি। তাঁর হাত ধরে রাজ্য বিজেপির সাফল্য। শুধু তাই নয়, তিনি নিজেই নিজের এমন একটা ‘ঠোঁট কাটা’ ব্র‍্যান্ড তৈরি করেছেন, যাতে বিজেপির কর্মীরা উৎসাহিত হচ্ছেন, লোকের সমর্থন বাড়ছে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী-সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী দলে এলে তাঁকে নিয়ে মাতামাতিতে অল্প হলেও তিনি টাল খাবেন। কিন্তু জনভিত্তিতে তিনি শুভেন্দু হাওয়ার মাঝে নিজেকে ঠিক মানিয়ে নিয়ে আসল কাজটা করে যাবেন বলে আদি বিজেপি নেতাদের বদ্ধমূল ধারণা। আর তার চেয়েও বড় কথা, দিলীপ জানেন, দলের কোন সময়ে কোন ধরণের ব্যাটিং করতে হয়। প্রয়োজনে স্টান্স বদলাতে দেরি করবেন না।

ফলে শুভেন্দু স্রোতে আগামিদিনে বিজেপি ভাসলে সবচেয়ে বড় ক্ষতি মুকুল রায়ের মতো পরিযায়ী নেতাদের। তাঁদের এবার কথায় কথায় ‘রাজনৈতিক গোঁসা’ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আর শুভেন্দুদের মতো নব্য বিজেপির হাওয়ায় দিলীপ সামান্য টাল খেলেও তা সামলে নিয়ে চালিয়ে খেলবেন। এবং তাতে অনেক খড়কুটো উড়ে যাবে বলেই বিজেপির একটি মহলের নিশ্চিত ধারণা।

 

Previous articleএকটানা ৮ দিন অপরিবর্তিত পেট্রোল ও ডিজেলের দাম
Next articleশুভেন্দুর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি ধনকড়ের