Friday, August 22, 2025

বঙ্গে ২০০ আসনের লক্ষ্য নিয়ে রণনীতি সাজালো পদ্ম, ৮ মন্ত্রীকে বাড়তি দায়িত্ব

Date:

Share post:

বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকে(Assembly election) পাখির চোখ করে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। তৃণমূলকে(TMC) ধরাশায়ী করে নবান্ন(Nabanna) দখলের লক্ষ্যে রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে কেন্দ্রীয় নেতাদের আনাগোনা। ‘মিশন বাংলা’কে মাথায় রেখে এবার নিজেদের রণনীতি সাজিয়ে ফেলল গেরুয়া শিবির(BJP)। বাংলায় পদ্ম ফোটাতে এবার বিজেপি শাসিত রাজ্য ও কেন্দ্রের আট মন্ত্রীর ওপর বাড়তি দায়িত্ব চাপালেন অমিত শাহ(Amit Shah) ও জেপি নাড্ডা(JP Nadda)। যে কোনও প্রকারে ২০০ আসন পেতে হবে এই উদ্দেশেই পশ্চিমবঙ্গের ৪২ লোকসভা আসনের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হল ৮ জন মন্ত্রীর উপর।

জানা গিয়েছে, যে ৮ মন্ত্রীদের উপর এই গুরুদায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন জলশক্তি বিষয়ক মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, সংস্কৃতি ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেল, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী মনসুখ ভাই মান্ডাভিয়া, পশুপালন প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়ান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায়, উত্তরপ্রদেশ উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য, এবং মধ্য প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। এই সমস্ত মন্ত্রীদের জানানো হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত মাসে অন্তত ১০ থেকে ১৫ দিন দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকসভা কেন্দ্রে সময় দেওয়ার জন্য। সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংগঠন কিভাবে আরও শক্তিশালী করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়ার জন্য। এই সমস্ত মন্ত্রীদের কাজ হবে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা। লোকসভা আসনের ওপর বিচার করে বিধানসভা কেন্দ্রের মূল সমস্যাগুলির ওপর আলোকপাত করা। এবং সম্ভাব্য প্রার্থী সম্পর্কে পূর্ণ তদন্ত করা।

জানা গিয়েছে, খোদ অমিত শাহ এই সমস্ত মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং তাদের দায়িত্ব কী হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন মন্ত্রীদের। পাশাপাশি এই সমস্ত কেন্দ্র ও রাজ্যের মন্ত্রীদের দায়িত্ব থাকবে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় রাখা এবং নিজ নিজ দায়িত্ব প্রাপ্ত লোকসভা কেন্দ্রের বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো। এই মন্ত্রীদের রিপোর্ট পাঠাতে হবে অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং সংগঠনের মহাসচিব বি এল সন্তোষের কাছে।

আরও পড়ুন:রাজনীতির স্বার্থেই কৃষকদের ব্যবহার, ফের বিরোধীদের তোপ মোদির

বিজেপি সূত্রের খবর, যে ৮ মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে কেন্দ্রীয় পর্যটন প্রতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেলকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এনার ওপর রয়েছে রাজ্যের ৬টি লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব। এগুলি হল কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাট। এর পাশাপাশি গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, বনগাঁ, দমদম বারাসাত কলকাতা দক্ষিণ ও কলকাতা উত্তরের। অর্জুন মুন্ডাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরের। সঞ্জীব বালিয়ান সামলাবেন জঙ্গিপুর, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ, কৃষ্ণনগর এবং রানাঘাট। মনসুখ ভাই মান্ডাভিয়া সামলাবেন মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, তমলুক, কাঁথি এবং ঘাটাল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায়ের দায়িত্বে ব্যারাকপুর, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর এবং ডায়মন্ড হারবার। উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য সামলাবেন হাওড়া, উলুবেরিয়া, শ্রীরামপুর, হুগলি, আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্র গুলির দায়িত্ব। নরত্তম মিশ্র কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বর্ধমান পূর্ব, দুর্গাপুর, আসানসোল, বোলপুর এবং বীরভূমের।

অবশ্য এই সমস্ত মন্ত্রীদের ঘাড়ে গুরুদায়িত্ব চাপানোর বিষয়ে দলের অভ্যন্তরেই নানা প্রশ্ন উঠেছে বলেও জানা গেছে। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দাবি এই সমস্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে অর্জুন মুন্ডা ছাড়া বাকি সমস্ত নেতৃত্বর পক্ষে পশ্চিমবঙ্গে কাজ করা যথেষ্ট কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কারণ বঙ্গের রাজনীতির সমীকরণ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র অবগত নন বাকিটা। মুন্ডা অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী ঝাড়খন্ডে কাজ করেছেন সেহেতু বঙ্গ রাজনীতি সম্পর্কে তিনি খানিকটা অবগত। তবে বাংলার মোর্চা এই সমস্ত কেন্দ্রীয় নেতা কতখানি সামাল দিতে পারবেন সে সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দিহান পশ্চিমবঙ্গের গেরুয়া নেতারাই।

spot_img

Related articles

রায় বেরোনোর পরেই জয়েন্টের তালিকা প্রকাশ: বোর্ডের কৃতিত্বে আনন্দ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

কলকাতা হাই কোর্ট ওবিসি সংক্রান্ত যে জট দীর্ঘদিন ধরে পাকিয়ে রাখার চেষ্টা করে চলেছিল, শুক্রবার তা প্রতিহত হয়...

বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীর পেনশনের আবেদনও খারিজ! আদালতে মুখ পুড়ল কেন্দ্রের

ইতিহাসকে বিকৃত করার বিজেপি-আরএসএসের যৌথ পরিকল্পনায় চরম দুর্দশা বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। নরেন্দ্র মোদি মুখে বাঙালি বিপ্লবীদের নাম নিলেও...

নতুন রঙ নতুন আনন্দ: বাংলার দুর্গাপুজোকে মোদির বন্দনায় কটাক্ষ তৃণমূলের

বাংলায় পুজো করতে গেলে আদালতের অনুমতি লাগে। প্রায় প্রতিদিন ছুটে ছুটে এসব প্রচার করে বেড়াচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা...

ইমান বেচলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী: শিখ সম্প্রদায়ের অপমানে নীরব রবনিতকে প্রশ্ন তৃণমূলের

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবনিত সিং বিট্টু  শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের সম্মানকে বাংলার বিজেপি নেতাদের সামনে বিক্রি করে দিলেন। নরেন্দ্র মোদির...