Monday, August 25, 2025

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ( Abhishek Banerjee) নয়, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ( Ex Meyor) এবং রাজ্যের মন্ত্রী (WB Minister) ফিরহাদ হাকিম ( Firhad Hakim) মুখ খুললেই তাঁকে তুলোধোনা করছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। আক্রমণ করছেন ধারালো ভাষায়, সঙ্গে যুক্তি। পাল্টা ফিরহাদ যা বলছেন, রাজনৈতিক মহল বলছে, মনে হচ্ছে পাড়ার চায়ের দোকানের কোনও কাল্টু-বল্টু যেন জবাব দিচ্ছেন। ফলে ববির বিরুদ্ধে শুভেন্দুর মন্তব্য মিম হয়ে ঘুরতে শুরু করেছে সামাজিক মাধ্যমে।

কী যুক্তি দিচ্ছেন শুভেন্দু যার জন্য বেজায় অস্বস্তিতে পড়ছে তৃণমূল নেতৃত্ব?

১. বছর কয়েক আগে, পাকিস্তানের এক সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ফিরহাদ। সেই কথোপকথনেই ববি রীতিমতো বুক ফুলিয়ে বলেছিলেন, আমার এলাকাটাকে (পড়ুন খিদিরপুর) আমি মিনি পাকিস্তান (Mini Pakistan) বানিয়ে রেখেছি। এই বক্তব্য প্রকাশ্যে এনে খোঁচা মারা শুরু করেছেন শুভেন্দু।

২. শুভেন্দু জনসভায় রীতিমতো রসিয়ে বলছেন, কে আমার বিরোধিতা করছে? কে বলছে আমি বিশ্বাসঘাতক? যে দলের সব পদ ছেড়ে এসে বিজেপিতে এসেছে, সে! নাকি যে মনোনয়ন না পেয়ে মিছিল নিয়ে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ি ঘেরাও করেছিল, হামলা চালিয়েছিল, ঢিল মেরেছিল, সে!

৩. শুভেন্দুর প্রশ্ন, কেন ফিরহাদ হাকিমই কলকাতার মেয়র হবে? পুরমন্ত্রী থাকার পরেও কেন মেয়র? উত্তর কলকাতার কেউ কেন কোনওদিন সেই পদ পাবে না? সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Shovon Cjattrja, শোভন চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, সকলে দক্ষিণ কলকাতার লোক। সিপিএমের আমলে প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় তবু উত্তর কলকাতা থেকে মেয়র হয়েছিলেন। কেন অতীন ঘোষ বা অন্যরা উত্তর কলকাতার মানুষ হওয়ার কারণে মেয়র হবেন না! অথচ তাদে যোগ্যতা রয়েছে ষোলো আনা?

এই তিন যুক্তি দিয়েই শুভেন্দু ক্ষান্ত থাকেননি। পাল্টা উত্তর কলকাতার যুব এবং প্রতিষ্ঠিত তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন, বোঝাচ্ছেন। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আওয়াজ তোলার প্রস্তুতি চলছে। স্লোগানও তৈরি… কেন দক্ষিণ বারবার/ মেয়র দেবে এবার উত্তর। এই লড়াই যে শুভেন্দু তাঁর পুরনো দলের মধ্যে বাধিয়ে দিতে সফল, তা উত্তরে কান পাতালেই বেশ মালুম হবে। শুভেন্দুর সুরে তাঁরা বলছেন, উত্তর কলকাতার নেতারা কি বানের জলে ভেসে এসেছে?

উল্লেখ্য, নারদা স্টিং অপারেশনে কাগজে মুড়িয়ে টাকা নিতে যেমন শুভেন্দুকে দেখা গিয়েছে, তেমনি ববিকেও ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে স্যান্ডো গেঞ্জিতে। ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে, কলকাতার সদ্য প্রাক্তন মেয়র বলছেন, এতো কম টাকা (পড়ুন ৫ লক্ষ) আমি নিই না। আমার ছেলেরা নেয়। ফলে দু’জনের বিরুদ্ধেই একই অভিযোগ। সেই জ্বালায় দুজনেই জ্বলছেন।

তবে এখানেই শেষ নয়। ববির জন্য আরও বেশ কিছু দাওয়াই ভেবে রেখেছেন শুভেন্দু। লোহা-বল্লম-তীর তুলে রেখেছেন। সময় এলেই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরবে। দেখার, কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক সেই ধাক্কা কীভাবে সামলান!!

 

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...
Exit mobile version