বল্লভপুরে খুন্তি হাতে ‘পাশের বাড়ির দিদি’ মমতা

পাড়ার দিদির ইমেজে থাকতেই পছন্দ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (MamataBanerjee)। বীরভূম সফরে গিয়েও তার ব্যতিক্রম হল না। সোম-মঙ্গল দুদিন প্রশাসনিক ও জনসভা করার পরে বুধবার (Wednesday) সকালে পূর্ব পরিকল্পিত সূচি ছাড়াই তিনি পৌঁছে যান আদিবাসী গ্রামে। সেখানে গিয়ে সেই পাশের বাড়ির দিদির ইমেজেই বজায় রাখলেন।

বীরভূমের (Birbhum) ভোটের বড় নির্ধারক আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক। গত লোকসভা নির্বাচনে সেই ভো অনেকটাই ঝুঁকেছিল বিজেপি-র (BJP)। এখন সেটা ফিরিয়ে আনাই লক্ষ্য তৃণমূল (Tmc) নেত্রীর।

কী রাঁধছেন? প্রশ্ন উত্তরের অপেক্ষা না করেই বাড়িয়ে দিলেন হাত। অবিশ্বাসের চোখে প্রশ্নকর্তার দিকে তাকিয়ে বাড়ানো হাতের উত্তরে খুন্তি ধরাতে বাধ্য হলেন দোকানদার। খুন্তি হাতে আলু-বরবটির তরকারি রান্নায় হাত লাগালেন মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন:করোনা ভ্যাকসিন ট্রায়ালের দ্বিতীয় ডোজ নিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম

কলকাতা ফেরার আগে বুধবার দুপুরে হঠাৎই বীরভূমের বল্লভপুরের (Bollavpur) আদিবাসী গ্রামে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে প্রথমে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তিনি কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গে। জানতে চান তাঁদের অভাব-অভিযোগ।

পথ চলতে নজরে পড়ে রাস্তার পাশের ছোট্ট ঘুমটি দোকান। সেখানে তখন আলু-বরবটির তরকারি রাঁধছিলেন দোকানি। তাঁর থেকে খুন্তি নিয়ে নিজেই রান্নায় হাত লাগান মমতা। খুন্তি হাতে তরকারি নাড়তে নাড়তে মুখ্যমন্ত্রী দোকানদারকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করিয়েছেন কি না? এখনও তা বানানো হয়নি উত্তর শুনেই বললেন দ্রুত বানিয়ে নেবেন। খুন্তি হাতেই সঙ্গে থাকা জেলার শীর্ষ কর্তাদের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বলেন বিষয়টি দেখে নিতে। তরকারি রান্নায় হাত লাগানোর পাশাপাশি সেখানে চাও খান তিনি।

রাজ্যের কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে দেখে বিহ্বল গ্রামবাসীরা (Villagers) । কারণ এই পরিদর্শনের কথা কেউই আগে থেকে জানতেন না। মুখ্যমন্ত্রীর আসার খবরে গ্রামবাসীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে কাছে পেয়ে কেউ শোনান পানীয় জলের সমস্যা, কেউ বলেন পুকুর না থাকার কথা, কেউ বা গ্রামের ঘরের ঘরে বাথরুম না থাকার কথা বলেন। সব শুনে জেলার আধিকারিকদের সমস্যাগুলি দ্রুত মিটিয়ে ফেলার নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রামে ঢোকার পথে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখে আশ্বাস দেন মাসিক হাজার টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়ার বিষয়েও। আদিবাসীদের জন্য রাজ্য সরকারের দেওয়া সমস্ত প্রকল্পের কথা গ্রামের বাসিন্দাদের মনে করিয়ে দেন।

এমনিতেই বরাবর পাশের বাড়ির দিদির ইমেজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইউএসপি। এই প্রথম নয়, এর আগেও রাস্তার ধারে দোকানে চা বানাতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। এমনকী প্রথম যখন ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন ডাকসাইটে বামনেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে তখনও সাধারণ মানুষের বাড়িতে ঢুকে দাওয়ায় বসে মুড়ি খেয়ে ছিলেন তিনি। সেই ছবি যে এখনও অমলিন এদিন প্রমাণিত আদিবাসী গ্রামে গিয়ে। সেই ইমেজেই তিনি ফের একবার শান দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Previous articleঅচেনা নম্বরের ভিডিও কল আসছে, সাবধান থাকুন বলছে পুলিশ
Next articleবৈঠকে বসার আগেই আলোচনার বিষয় কেন্দ্রকে জানিয়ে দিলেন কৃষকরা