করোনাকালেও বর্ষবরণের রাতে শিলিগুড়িতে উড়ল প্রায় ১০ কোটি টাকা! কিশোর সাহার কলম

কিশোর সাহা

প্রায় আট মাস ঘরবন্দি জীবনের পরে বর্ষবরণের রাতে যেন মুক্তির আলোয় ঝলমল হল শিলিগুড়ি। তাতেই এক রাতে শিলিগুড়িতে উড়ল প্রায় ১০ কোটি টাকা!

হ্যাঁ, শিলিগুড়ির বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের অনেকেই এমনই হিসেব দিয়েছেন। হোটেল, পানশালা, টি রিসর্ট, পা রাখার জায়গা ছিল না কোথাও। এমনকী, মাথা পিছু ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েও শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে চা বাগান ঘেরা একটি বেসরকারি রিসর্টে জায়গা পাননি অনেকে। রাতভর অনুষ্ঠান চলেছে অনেক জায়গাতেই। তবে পুলিশ জানাচ্ছে, সারা রাত মানুষ বর্ষবরণের উৎসবে মাতোয়ারা থাকলেও শিলিগুড়িতে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। রাস্তায় পুলিশের নাকা চেকিংয়ের কড়াকড়ির জেরে দুর্ঘটনাও ঘটেনি।

দেখা যাক ১০ কোটি টাকার হিসেবটা কোথা থেকে এল!

শিলিগুড়ির কাছের একটি সদ্য চালু হওয়া রিসর্টেই দেড়শোটি রুম রয়েছে। সব কটি রুম ছিল বুকড। অর্ধেকের বেশি বিহারের কিসানগঞ্জ ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা। রিসর্টের বাইরে রাতভর টাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে একাধিক লালবাতির গাড়ি। সবই বিহারের নম্বর প্লেট লাগানো। মনে রাখতে হবে বিহারে কিন্তু মদ নিষিদ্ধ। ওই রিসর্টে রুম বুক করলে ব্রেকফাস্ট তো ফ্রি। তার উপরে বর্ষবরণে ছিল তিন পেগ স্কচ ফ্রি! বাড়তি পেগ নিলে ১ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা অবধি দাম। সেখানেই প্রায় ১ কোটি টাকার লেনদেন।
শহরের সব পানশালাই মোটামুটি ছিল ভিড়ে ঠাসা। জিস্কো, সিঙ্গিং বার মিলিয়ে ২৮টি জায়গায় অন্তত ৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের একাংশের হিসেব। তা চাড়া শহর ও লাগোয়া এলাকার আরও ২৫টি হোটেল, রিসর্টে জমজমাট ভিড় দেদার করেছে।

কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থ বেঙ্গল শাখার চেয়ারম্যান সঞ্জিত সাহা জানান, তাঁরও অনেক জায়গায় আমন্ত্রণ ছিল। তিনি জানান, পারিবারিক কারনে কোথাও যেতে পারেননি। তবে বর্ষবরণের রাতে ওই পরিমাণ লেনদেন হওয়াটা ব্যবসার সূচকে শুভ বলে তিনি মনে করেন। দীর্ঘ কয়েক মাস মন্দার পরে ভাল লেনদেন হলে ক্ষতির বহর কিছুটা হলেও কমবে বলে তাঁর ধারণা।

বর্ষবরণের পরে নতুন ইংরেজি বছরের প্রথম দিনেও জমিয়ে ব্যবসা হয়েছে শিলিগুড়িতে। সিটি সেন্টারে পা ফেলার জায়গা ছিল না। অন্যান্য শপিং মলে ঠাসাঠাসি ভিড়। হোটেল, রেস্তোরাঁয় লাইন পড়েছে।
সব মিলিয়ে করোনার আবহেও এমন ব্যবসা হওয়ায় স্বস্তি হোটেল, রেস্তোরাঁ ও পানশালার মালিকদের অনেকেরই। তাঁরা অনেকেই জানিয়েছেন, মোটামুটি কোভিড বিধি মেনেই চলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, রাত বাড়ার পরে সে সব বিধি কতটা মানা হয়েছে তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় রয়েছে।

আরও পড়ুন- কোভিড বিধি মেনেই ভিড় শিলিগুড়ির ইসকন মন্দিরে

Advt

Previous articleকোভিড বিধি মেনেই ভিড় শিলিগুড়ির ইসকন মন্দিরে
Next articleমেলার প্রস্ততি দেখতে দু-দিনের গঙ্গাসাগর সফরে মুখ্যমন্ত্রী