এবার নিজেদের ‘এলেম’ প্রমানের দায় শোভন-বৈশাখীর ঘাড়েই চাপালো বিজেপি

‘গ্র্যান্ড লঞ্চিং’ আর নয়, সোমবার নিজেদের ‘এলেম’ কতখানি তা প্রমান করার দায় শোভন- বৈশাখীর (Sovon- baishaki) ঘাড়েই চাপিয়ে দিয়েছে বিজেপি (bjp)৷

বার বার এই দুই অভিন্নহৃদয় বন্ধুর কাছে চরম অপদস্থ হয়ে এবার ঘুরে দাঁড়ালো বঙ্গ বিজেপি৷

বিজেপির পতাকা নিয়ে সোমবার কলকাতায় পদযাত্রায় সামিল হওয়ার কথা কলকাতার প্রাক্তণ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের৷ নিশ্চিতভাবেই তখন শোভনের পাশে থাকার কথা তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷

তবে এবার আর বিষয়টি এত সহজ থাকছেনা৷ এবার মাঠে নামার আগে বিজেপি ভালো করে ফিল্ডিং সাজিয়েছে৷ এবং বিরাট পরীক্ষার মুখে ফেলেছে শোভনবাবু এবং বৈশাখীদেবীকে৷ এই পদযাত্রার সাফল্য- ব্যর্থতার মধ্যেই দুই বন্ধুর অস্তিত্ব নির্ভর করছে৷ গত সপ্তাহের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এ বার শুধু সতর্ক থাকাই নয়, ওই কর্মসূচি থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখছেন দলের রাজ্য নেতারা। সূত্রের খবর, সোমবারের মিছিলে রাজ্যস্তরের কোনও নেতাই থাকছেন না। কলকাতা জোনের সব নেতাও থাকছেন না। সোমবার শোভন-বৈশাখীকে নিয়ে যে মিছিল, তা শুধুই দলের দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলার কর্মসূচি।

বেইজ্জত করার ছক এখানেই শেষ নয়, শোভন-বৈশাখীকে পাকাপাকিভাবে জলে ঠেলে ফেলার জন্য সোমবার দক্ষিণ কলকাতাতেই আরও একটি মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি। সেটা হবে দলের বস্তি উন্নয়ন শাখার নামে। তবে এই মিছিলের জন্য পুলিশের অনুমতি মেলেনি। শোভন-বৈশাখীর মিছিলের জন্য পুলিশ অনুমতি দিয়ে দিয়েছে বলেই জানিয়েছেন বিজেপির দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি শঙ্কর শিকদার। ওই মিছিল হবে গোলপার্ক থেকে সেলিমপুর পর্যন্ত, বাসস্টপের হিসাবে ধরলে মাত্র একটি স্টপেজ৷

শোভন-বৈশাখীর ‘এলেম’ কতখানি তা প্রমান করার দায় তাঁদের ঘাড়ে এভাবে চাপালেও এ বিষয়ে প্রকাশ্যে দলের কেউ মুখ খোলেননি৷ রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ স্তরের নেতা বলেন, ‘‘দলের যথেষ্ট মুখ পুড়েছে ওঁদের নিয়ে। দলকে রীতিমতো বিব্রত হতে হচ্ছে বার বার। এই অবস্থায় ওঁরা নিজেরাই দেখান, ওঁদের লোকবল কতটা।’’
প্রসঙ্গত, গত সোমবার শোভনের জন্য ঠিক এমন কর্মসূচিই তৈরি করেছিলো বিজেপি৷ কিন্তু দলকে চরম বিড়ম্বনায় ফেলে ওই কর্মসূচি এড়িয়ে যান তিনি৷ পরে অবশ্য তিনি জানিয়েছিলেন, বান্ধবী বৈশাখীর পা অনেকটাই ফুলে যাওয়ার জন্য তিনি বাড়ি থেকে বেরোতে পারেননি৷ বান্ধবীর পরিচর্যার দরকার ছিলো৷

গত সোমবারের রোড-শোর দায়িত্বে ছিলেন রাজ্যে বিজেপির বস্তি উন্নয়ন শাখার আহ্বায়ক রাকেশ সিং। আর তিনিই আগামীকাল, সোমবার আলাদা মিছিলের পরিকল্পনা করেছেন। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার আয়োজন করেও র‌্যালি ভেস্তে যাওয়ায় শোভনের উপর ক্ষুব্ধ রাকেশ।
গতদিনের মিছিলের রুট ছিলো আলিপুর চিড়িয়াখানার কাছে অরফানগঞ্জ রোড থেকে মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপির সদর দফতর পর্যন্ত। আগামী সোমবার সেই একই রুটে ফের মিছিল করতে চান রাকেশ। তবে পুলিশ জানিয়েছে গত ৪ জানুয়ারির মিছিল ঘিরে যে ভাবে যানবাহন চলাচলের সমস্যা হয়েছিল, তা মাথায় রেখেই কাজের দিন অর্থাৎ ১১ জানুয়ারি আর মিছিলের অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না। অবশ্য মিছিল করতে অনড় রাকেশ। শোভন-বৈশাখীকে চাপে ফেলতেই কি এই আলাদা মিছিল? জবাব এড়িয়ে রাকেশের বক্তব্য, ‘‘নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে আগেই মিছিলের পরিকল্পনা করি। ডিসেম্বর মাসেই পুলিশের কাছে এর জন্য আবেদন করে রেখেছি। গোলপার্ক থেকে সেলিমপুরের মিছিল পরে ঠিক হয়েছে।’’

এ দিকে বিজেপি সূত্রে খবর, রবিবার হেস্টিংস-এ দলের নির্বাচনী কার্যালয়ে গিয়ে শোভন-বৈশাখী বৈঠক করেছেন৷ সেখানে নাকি মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায় ছিলেন।

আরও পড়ুন- আইসিসিতে বোর্ডের প্রতিনিধি জয় শাহ, জানালেন এক বোর্ড কর্তা

Advt

Previous articleআইসিসিতে বোর্ডের প্রতিনিধি জয় শাহ, জানালেন এক বোর্ড কর্তা
Next article‘স্বাস্থ্যসাথী’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিজেপি নেতা, অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির