নাড়ি বুঝতে নন্দীগ্রামের ব্লকে ব্লকে ঘুরবেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়

একুশের ভোটে শিরোনামে সেই নন্দীগ্রাম (Nandigram)। গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূল-বিজেপির রাজনীতি যে খাতে বইছে, তাতে এটা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে, আসন্ন বিধানসভা ভোটে সম্ভবত হাইভোল্টেজ লড়াই হতে চলেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। এই নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে তিনি যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে৷ রাজনৈতিক মহলের খবর, শুভেন্দুর শিবির বদলের পর নন্দীগ্রাম ও সংলগ্ন এলাকার বিস্তীর্ণ অংশে তৃণমূলের সংগঠন খানিকটা দিশেহারা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ।

এদিকে, গত ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে ওই কেন্দ্র থেকেই ভোটে লড়ার জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (MAMATA BANERJEE)৷ শুধু তাই-ই নয়, নন্দীগ্রামের জন্য প্রার্থী তালিকায় তাঁর নাম ঢোকানো যায় কি না, তা দেখার দায়িত্ব দিয়েছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বকসিকে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই বাংলার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে যায় জোর চর্চা। এই ঘোষণার মাধ্যমে মমতা বিজেপিকে জোর ধাক্কা দিয়েছেন বলেও আলোচনা শুরু হয়৷ ওদিকে নন্দীগ্রামেও শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতিও। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকেই তাঁর নামে দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছিল সেখানে।

ওদিকে, মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে লড়ার কথা ঘোষণা করতেই পাল্টা তাঁকে ‘হাফ লাখ ভোটে’ হারানোর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। এরপরই রাজ্যজুড়ে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি এবার নন্দীগ্রামে মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী হবেন শুভেন্দু? তাহলে কি এবারের বিধানসভা ভোটে গোটা দেশের ফোকাস হবে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে মমতা বনাম শুভেন্দুর লড়াই?
এবার সেই নন্দীগ্রামে নিজেদের শক্তি কতখানি, তা জানতে বিশেষ সমীক্ষা শুরু করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) নেতৃত্বে চলবে এই সমীক্ষা৷ সুব্রতবাবু ঘুরে ঘুরে কথা বলবেন নন্দীগ্রামের প্রতিটি ব্লকের সমস্ত কর্মীদের সঙ্গে। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee)। সেখানে ৩ দিন থাকবেন এবং নন্দীগ্রামের সর্বত্র ঘুরবেন তিনি। সুব্রতবাবু মঙ্গলবার বলেছেন, ”আমি নন্দীগ্রামে গিয়ে প্রত্যেক বুথে বুথে যাব। বাড়ি বাড়িও ঘুরে জনগণের মতামত শুনব। সেখানকার সামগ্রিক পরিস্থিতি বুঝব। তিনদিন থেকে যাবতীয় সমীক্ষা করার পর দলকে জানাবো আমার পর্যবেক্ষণ”।
দলের প্রচারের কাজে যাচ্ছেন না, শুধুমাত্র ‘পালস’ বুঝতে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন সুব্রত। দল প্রার্থী নির্বাচন করার পর প্রচারের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যে ২৯৪টি কেন্দ্র থাকতে শুধু নন্দীগ্রামেই বা কেন সমীক্ষা করতে হচ্ছে? এর উত্তর দিতে গিয়ে নন্দীগ্রামে মমতার ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তেই কার্যত সিলমোহর দেন সুব্রত। তিনি বলেছেন, ‘‘নন্দীগ্রামে যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়াবেন, তাই পরিস্থিতি দেখা দরকার। অনেক দিন ধরে নির্বাচন করাচ্ছি। তাই দলের হয়তো মনে হয়েছে ‘বেস্ট রিপোর্ট’ দিতে পারবো।’’ শুভেন্দুর হুঁশিয়ারিকে পাত্তা না দিয়ে সুব্রত বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের কোনও কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ দেওয়ার মতো কেউ নেই। শুভেন্দু যদি নিজে দাঁড়ায় এবং বলে ৫০ হাজার ভোটে হারাবে, তা তো বলতেই পারে। যে হেরে যায়, যার জামানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়, সে-ও তো জেতার কথাই বলে।’’

আরও পড়ুন- ফের বেলাগাম: দলীয় নেতা খুনে বিজেপিকে ‘গ্রামছাড়া’ করার হুঁশিয়ারি অনুব্রতর

Advt

Previous articleফের বেলাগাম: দলীয় নেতা খুনে বিজেপিকে ‘গ্রামছাড়া’ করার হুঁশিয়ারি অনুব্রতর
Next articleফের উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, সূচিতে ডুয়ার্স