নেতাজির পর চৈতন্যকে অপমান, নবদ্বীপের সভায় দাঁড়িয়ে কুণাল বললেন, ক্ষমা চান নাড্ডা

যে পথ দিয়ে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার রথ গিয়েছিল শনিবার, রবিবার সেই নবদ্বীপধামে দাঁড়িয়ে নাড্ডাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন কুণাল ঘোষ। কাঠগড়ায় তুলে বললেন, একবার নেতাজিকে অপমান করেছে বিজেপি। দেশবরেণ্যের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জয়শ্রীরাম আওয়াজ তুলে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে নেতাজিকে। আর শনিবার আর একবার বাংলাকে অপমান করলেন নাড্ডা। বিজেপির সভাপতি নবদ্বীপ ধামে দাঁড়িয়ে বাংলার প্রথম বিপ্লবী চৈতন্য মহাপ্রভুর নামই করলেন না। এ তো বাংলার অপমান। স্বামীজিকে ঠাকুর বানালেন। হাতজোড় ক্ষমা চান জগৎ প্রকাশ নাড্ডা।

নদিয়ায় সরকার পাড়ার ক্লাব ময়দানে এদিনের সভা শুরুতেই জমিয়ে দেন বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এক সময় বলতেন আমরা ২৩৬, ওরা ৩৬। মানুষ তাঁকে ৩৬-এ নামিয়ে এনে রাজনৈতিক অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। উচিত শিক্ষা দিয়েছে। নরেন্দ্র মোদির অবস্থাও এমন হবে। আর এক সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও বলেন, বাইরে থেকে এসে যারা ভাবছেন বাংলা জয় করে নেবেন, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে।

প্রাক্তন সাংসদ ও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল এদিন নাড্ডার সফরকেই টার্গেট করেন। বলেন, কোন শিক্ষার কথা বলছে বিজেপি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ঐতিহ্যের দিকেও নজর দিচ্ছে। টোল-সংস্কৃত-বেদ-ঊপনিষদের শিক্ষাকেও সংরক্ষিত করেছেন। ৪২৬টি টোলকে সংস্কৃত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে তুলে দিয়েছেন। বাম আমলে হয়নি। তৃণমূল সরকার করেছে। যারা সংস্কৃতির কথা বলে কটাক্ষ করছে, তারা জানে না বাংলার সরকারের কাজ, আর বাংলার ইতিহাসের কথা। আপনাদের জ্ঞান দেখে লজ্জা হয়।

বিজেপিকে কার্যত ভণ্ডের সরকার বললেন কুণাল। বলেন, রাজ্যে সফরে এসে ক্যামেরার সামনে কৃষকদের বাড়িতে পাত পেড়ে খাচ্ছেন। আর রাজধানী দিল্লিতে কৃষকদের দাবি মানা হচ্ছে না। আড়াই মাস তারা পথে। তাদের জল, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট কেটে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ হামলা চালাচ্ছে। রাস্তায় পেরেক পুঁতে দেওয়া হচ্ছে। বাথরুম বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ কৃষকদের দমাতে পারেনি। এই তো বিজেপির কৃষকপ্রেম। ভণ্ড বিজেপিকে এক বিন্দুও বিশ্বাস করবেন না।

এদিনের সভা থেকে ফের কুণাল শুভেন্দু অধিকারী, শোভন চট্টোপাধ্যায়দের আক্রমণ করে বলেন, এরা সব পেয়ে এখন সিবিআই-ইডির ভয়ে শিবির বদল করছে। ওদের মুখে আর যাই হোক আদর্শ আর নীতির কথা মানায় না। সভামঞ্চ থেকে কুণালের ঘোষণা, তিন মাস পরে ফের ক্ষমতায় আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর রাজভবনে সেদিন লাল গোলাপ নিয়ে অভিনন্দন জানাতে গেটে দাঁড়িয়ে থাকবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেদিন বিজেপি নেতাদের মুখগুলো দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

 

Previous articleউত্তরাখণ্ডের যোশীমঠে তুষারধস, ১০ জনের দেহ উদ্ধার, মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা
Next article‘এক দেশ, এক গ্যাস গ্রিড’: হলদিয়ায় একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন নরেন্দ্র মোদির