উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে কাজে গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের চকদাড়িবেরিয়ার যুবক সুদীপ গুড়িয়া। রবিবারের বিপর্যয়ের পর তাঁর বাড়ির লোক আর যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁর সঙ্গে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে আসার কথা ছিল সুদীপের। প্রায় এক বছর পর তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। পশ্চিমবঙ্গের আরও দু’জন শ্রমিক হলেন লালু জানা ও বুলা জানা। তাঁরাও নিখোঁজ।
উত্তরাখণ্ডের নির্মীয়মাণ ওই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘ওম মেটাল’ নামে একটি সংস্থার ঠিকাদার হিসাবে কাজ করেন মহিষাদলের লক্ষ্যা গ্রামের বাসিন্দা লালু জানা। কাজে যোগ দেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে ভাই বুলাকেও সেখানে নিয়ে যান তিনি। তারপর প্রতিবেশী যুবক চকদাড়িবেড়িয়ার সুদীপ গুড়িয়াকেও (২৭) কাজ দেন। তিন জনে একইসঙ্গে থাকতেন। কিন্তু শনিবারের পর থেকে তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
লালু ও বুলার ভাই বলেন,” ওঁরা গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসেছিল। লকডাউনে অনেক দিন কাজ বন্ধ ছিল। শনিবারই কথা হল। তারপরই কোনও খবর পাচ্ছি না। রবিবার থেকে আর যোগাযোগ করতে পারছি না।” লালু, বুলার বৃদ্ধ বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। একই অবস্থা সুদীপের বাড়ির লোকেরও। ঘরের একমাত্র রোজগেরে ছেলে। পশ্চিমবঙ্গে কাজ জোটেনি। তাই কাজের জন্যই চলে গিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডে। রবিবার সাধারণত ছুটিই থাকে। কিন্তু বাড়তি উপার্জনের জন্য রবিবার কাজ করতেন সুদীপ এমনটাই জানিয়েছেন সুদীপের বাড়ির সদস্যরা। মহিষাদলের ওই দুই বাড়ির পরিস্থিতি এখন উত্তরাখণ্ডের দুর্গতদের মতনই। ঘরের ছেলেদের খবর পাচ্ছে না এই তিন শ্রমিকের বাড়ির লোকেরা। কোথায় যাবেন? কী করবেন? তাঁদের ছেলেদের কীভাবেই বা খুঁজবেন বুঝতে পারছেন না তাঁরা। এখন শুধুই অপেক্ষা।
প্রসঙ্গত, হিমবাহ ভেঙে আছড়ে পড়ে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায়। যেখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে অলকানন্দা ও ধৌলিগঙ্গা নদী। তারপরই নদীতে জলেরস্রোত বেড়ে যায়। হুড়মুড়িয়ে পড়তে থাকে জল-পাথর-বরফ। সংলগ্ন এলাকা ভেঙে গুড়িয়ে নিয়ে যায় তীব্র জলোচ্ছ্বাস।
আরও পড়ুন-উত্তরাখণ্ডের তুষারধস : ত্রাণ তহবিলে ম্যাচ ফি দেওয়ার ঘোষণা পন্থের