দীনেশ ত্রিবেদির ‘অন্তরাত্মা’, কণাদ দাশগুপ্তর কলম

কণাদ দাশগুপ্ত

‘অন্তরাত্মা’র ডাকেই তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কছিন্ন করতে চলেছেন দীনেশ ত্রিবেদি৷ তিনি নিজেই একথা জানিয়েছেন৷

দীনেশ ত্রিবেদির অত্যন্ত স্পর্শকাতর ‘অন্তরাত্মা’ ২০২১ সালেই যে প্রথমবার ডাক দিয়েছে, তা একেবারেই নয়৷

‘অন্তরাত্মা’র ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৮০ সালে দীনেশ ত্রিবেদি রাজনীতির দুনিয়ায় পা রাখেন৷ যোগ দেন জাতীয় কংগ্রেসে৷ কংগ্রেসের সভানেত্রী তখন ইন্দিরা গান্ধী৷ ১৯৮৪-তে প্রয়াত হন ইন্দিরাজি৷ তখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি কংগ্রেসের সভাপতিও হন রাজীব৷ সেদিন রাজীব গান্ধী সরকারে অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদ দেওয়া হয়েছিল বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং-কে৷
১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার নেতাও ছিলেন ভিপি সিং। কিন্তু মেয়াদ শেষের আগেই ইস্তফা দেন বিশ্বনাথ প্রতাপ৷ এরপর ১৯৮৮ সালে তিনি জনতা পার্টির বিভিন্ন দলকে একত্রিত করে ‘জনতা দল’ গঠন করেন। ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে, জনতা দল বিজেপির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে এবং বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন।

এরপরেই দ্বিতীয়বার ‘অন্তরাত্মা’র ডাক শোনেন দীনেশ ত্রিবেদি৷ সেই ডাকে সাড়া দিয়ে দীনেশজি যোগ দেন বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং-এর ‘জনতা দল’-এ৷ বিশ্বনাথ প্রতাপের সৌজন্যে
১৯৯০ সালে ওই জনতা দলের প্রার্থী হিসাবেই গুজরাত থেকে রাজ্যসভার সদস্য হন দীনেশ ত্রিবেদি, ‘অন্তরাত্মা’র ডাকেই৷ এভাবেই চলে ১৯৯৮ পর্যন্ত৷

১৯৯৮ সালে তৃতীয়বার দীনেশ ত্রিবেদির মনে ফের সক্রিয় হয় ‘অন্তরাত্মা’à§· ওই ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে৷ তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবেই ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন৷ ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে বারাকপুর কেন্দ্র থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হন৷
২০০৯ সালেই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী হিসাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান পান৷ ২০১১ সালে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই দীনেশ ত্রিবেদি’কেই রেলমন্ত্রী করার সুপারিশ করেন দলনেত্রী à§· সহজেই দেশের রেনমন্ত্রী হয়ে যান দীনেশ ত্রিবেদি৷
এরপর ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে দীনেশ ত্রিবেদির অন্তরাত্মা সম্ভবত সেভাবে সাড়া না দেওয়ায় বারাকপুরে পরাজিত হন৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে পরাজিত দীনেশকে রাজ্যসভায় পাঠান৷
আর এই ২০২১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি, চতুর্থবার সেই ‘অন্তরাত্মা’র ডাকেই তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন ত্রিবেদি৷

ওই ‘অন্তরাত্মা’ আগামীদিনে এই দীনেশ ত্রিবেদিকে পঞ্চমবার ডাক দিতে পারেন খুব তাড়াতাড়ি৷

তখনই জানা যাবে দীনেশ ত্রিবেদির ‘অন্তরাত্মা’ বা Inward spirit পঞ্চমবারের জন্য তাঁকে কোন দলের ঘাটে নিয়ে গিয়ে ফেলে à§·

আরও পড়ুন- মোদির ‘আন্দোলনজীবী’র প্রত্যুত্তরে রাম মন্দির আন্দোলনের প্রসঙ্গ টানলেন টিকাইত