৪২ কিমি রেলপথের জন্য মোদি সরকারের বরাদ্দ মাত্র ১ টাকা! ‘সেরা প্রহসন’ বলছেন সুন্দরবনবাসী

১২ বছর আগের ক্যানিং-ঝড়খালি রেলপথের প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেটে মোদি সরকার বরাদ্দ করেছে মাত্র ১ টাকা! এই রেলপথের চাহিদা সুন্দরবনবাসীর দীর্ঘ দিনের। এবার কেন্দ্রীয় বাজেট শেষে তাঁরা জানতে পারলেন বারো বছর আগের প্রকল্প বাতিল হয়নি। তবে তার জন্য মাত্র ১ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত কেন নিল মোদি সরকার?

ক্যানিং-ঝড়খালি রেলপথের দাবিতে দীর্ঘ দিন আন্দোলন চালিয়েছেন লোকমান মোল্লা। তাঁর কথায়, “এই বরাদ্দ বুঝিয়ে দিচ্ছে, প্রকল্পটির কথা এখনও মাথায় রেখেছে কেন্দ্র। কিন্তু তা বোঝাতে গিয়ে যে পদক্ষেপ করা হল বাজেটে, তা শুধু হাস্যকরই নয়, এক অর্থে সুন্দরবনের মানুষের সঙ্গে নির্মম রসিকতা।” লোকমান মোল্লা জানান, এ বার নাগরিক মঞ্চ গঠন করা হবে। তারপর নাগরিক কনভেনশনের মধ্যে দিয়ে রেলপথের দাবিতে আন্দোলনের পথে হাঁটবেন সুন্দরবনবাসী।

আরও পড়ুন-বাঙালির আবেগ ছোঁয়ার চেষ্টায় বৃহস্পতিবার সাগর -নামখানায় অমিত শাহ

লোকমান মোল্লা আরও জানান, “ঝড়খালি পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ হলে একদিকে যেমন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা সরাসরি সুন্দরবনে আসতে পারতেন, তেমনই সুন্দরবনের লক্ষ লক্ষ মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মানোন্নয়ন ঘটবে। এই রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে তৎকালীন রেল দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী অধীররঞ্জন চৌধুরী, সুরেশ প্রভু, রাজেন গহিন থেকে শুরু করে বর্তমান রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে আবেদন করেছি, এমনকী এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছি। তবু কোনও লাভ হয়নি। এ বার বাজেটেও বঞ্চিত রইলেন সুন্দরবনবাসী। মাত্র ১ টাকা বরাদ্দ হয়েছে এই বাজেটে। এটাই বোধহয় এই শতাব্দীর সেরা প্রহসন।”

১৩ বছর আগে ক্যানিং-ঝড়খালি রেলপথের দাবিতে আন্দোলন চালিয়েছিলেন সুন্দরবনবাসী। তৎকালীন লোকসভার অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে গণস্বাক্ষর করে দাবি পেশ করা হয়। সুন্দরবনবাসীর সেই দাবি মেনে ২০০৯ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্যানিং থেকে ঝড়খালি পর্যন্ত রেললাইনের শিলান্যাস করেছিলেন। শুরু হয়েছিল কাজ। মাতলা নদীর উপরে রেলসেতু নির্মাণের জন্য ২১টি কংক্রিটের স্তম্ভও তৈরি হয়। কিন্তু ৪২ কিমি রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ আর কিছুই এগোয়নি।

Advt

আরও পড়ুন-পুরশুড়ার রোড-শো-তে জনজোয়ার: পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ কুণালের

রেল দফতর সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশে ইতিমধ্যেই ক্যানিং ঝড়খালি রেলপথ সার্ভের কাজ শেষ করেছে রেল দফতর। জমি অধিগ্রহণের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রেলসেতুর কাজ পুনরায় শুরু করা হয়েছে বলে লোকমানকে চিঠিতে জানানো হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে জমি অধিগ্রহণ করার আবেদন জানানো হলেও সে বিষয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ করা হয়নি বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে কিছু জানা যায়নি।

Previous articleন্যাশনাল লাইব্রেরিতে বৈঠক করবেন অমিত শাহ?
Next articleআজ রাতে আলিমুদ্দিনে জোট বৈঠকে সিদ্দিকির দলের সঙ্গে বসছে বাম-কংগ্রেস