আব্বাসের আবদার মেটাতে আলিমুদ্দিনে মধ্যরাত পর্যন্ত বৈঠকের পরও মিললো না রফাসূত্র

বাম-কংগ্রেসের সঙ্গেই জোটের (Alliance) জটে আটকে আব্বাস সিদ্দিকির (Abbas Siddique) দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট বা আই এস এফ (ISF)। গতকাল, বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ম্যারাথন বৈঠকের পরেও আসন রফা নিয়ে মিললো না কোনও চূড়ান্ত রফাসূত্র। ফুরফুরা শরীফের পীরজাদার আবদার মেটাতে ছিল এই বৈঠক। ফলে বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) আগে বাম (Leftfront), কংগ্রেস (Congress) এবং আইএসএফ-এর মহাজোট নিয়ে জটিলতা অব্যাহত। বুধবার রাত ৮টা থেকে আলিমুদ্দিনের সিপিএম (CPIM) রাজ্য সদর দফতরে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক হয়। আব্বাস সিদ্দিকি অবশ্য এই বৈঠকে ছিলেন না। তাঁর ভাই তথা দলের চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকি (Nawshad Siddique) হাজির ছিলেন বৈঠকে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ছিলেন আবদুল মান্নান এবং প্রদীপ ভট্টাচার্য ছিলেন এবং সিপিএমের তরফে মহম্মদ সেলিম ও বিমান বসু।

গত মঙ্গলবার বিমান বসু-অধীর চৌধুরীরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাম-কংগ্রেস আসন রফা চূড়ান্ত। তবে আব্বাসের দল-সহ আরও কিছু দলকে নিয়ে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী তাঁরা। সেই কারণেই আসন বন্টন নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা এখনই করতে চাইছেন না তাঁরা। তারপরই আব্বাস সিদ্দিকি জানিয়ে দেন, যতগুলি আসন তাঁরা দাবি করছেন, ততগুলো না দিলে একলা চলবেন। সেক্ষেত্রে কারও ঘর ভাঙলে তিনি বা তাঁর দল দায়ী নয়। আব্বাসের “আবদার” মেটাতেই ফের তরিঘড়ি জোট বৈঠকে বসে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব।

২৯৪-এর মধ্যে ২৩০টি আসনে বাম-কংগ্রেসের রফা চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বাকি ৬৪ আসনের মধ্যে আব্বাসের দলের দাবি ৫৫ থেকে ৬০। খুব কম হলে অন্তত ৪৫। কিন্তু সিপিএম-কংগ্রেস ২৫টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি নয়। আবার সেই আসনগুলির মধ্যে মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং দুই দিনাজপুরে বেশ কিছু আসন দাবি করেছেন আব্বাস। যেখানে আবার কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে মনে করা হয়। ফলে সমাধান সূত্র বের করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে জোট ম্যানেজারদের।

সবমিলিয়ে জটিল অঙ্কে আটকে জোট। অন্তত আব্বাসের আবদার মেটাতে কপালে ভাঁজ পড়েছে জোট ম্যানেজারদের। আসরে নামেন আব্দুল মান্নান ও মহম্মদ সেলিম। আব্বাসের দলকে নিয়েই জোট বেঁধে বিধানসভা ভোটে লড়াই করার ব্যাপারে আশাবাদী বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব। এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের আগে রফা সূত্র বের করে নিতে চাইছে তাঁরা।

এদিকে, গতকাল ম্যারাথন বৈঠক শেষে রাত প্রায় সাড়ে এগারোটার নাগাদ বাইরে বেরিয়ে আবদুল মান্নান জানান, উত্তরবঙ্গের কোন কোন আসন পীরজাদার দলকে ছাড়া হবে তা নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। বিশেষ করে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। কংগ্রেস এদিন আব্বাসের ভাইকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২০১৬-তে জেতা আসন কোনওমতেই ছাড়া হবে না। একইসঙ্গে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আব্বাসের দলের কাছে তারা কোন কোন আসন চান সে বিষয়ে লিখিত আকারে জানাতে বলা হয়েছে। মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরেও জটিলতা তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে তিন জেলায় ১২ থেকে ১৫টি আসন দাবি করেছে আইএসএফ।

সূত্রের খবর, আজ বৃহস্পতিবার ফের আব্বাসের দলের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসবে কংগ্রেস। সেখানে থাকবে না সিপিএমের কোনও প্রতিনিধি। জানা গিয়েছে, সিপিএমের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে সন্তুষ্ট আব্বাস। জোটের জট আটকে কংগ্রেস এবং আই এস এফ-এর মধ্যে।

Advt

Previous articleএক সপ্তাহের বিরতিতে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে আজ কলকাতায় অমিত শাহ
Next articleসাধন-কন্যা শ্রেয়ার হোর্ডিং সরলো! কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বদলে গেল বসিরহাটের ছবি