রাতারাতি গেরুয়া শিবিরের “গুড বুক”-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য! নিন্দায় TMCP

রাতারাতি গেরুয়া শিবিরের “গুড বুক”-এ নাম লেখালেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের (University Of Calcutta) উপাচার্য (VC) সোনালী চক্রবর্তী (Sonali Chakraborty)! আরএসএস (RSS)-এর ছাত্র সংগঠন ABVP-এর পক্ষ থেকে “অভিনন্দন” ও “ধন্যবাদ”-এর ফুলঝুরি সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। কেউ কেউ লিখছেন, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তীকে বিজেপি (BJP) পরিবারে স্বাগত, জয় শ্রীরাম!” আবার কেউ কেউ লিখছেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তীকে অসংখ্য ধন্যবাদ, বিজেপি আপনার পাশে আছে, জয় শ্রীরাম!”

ঘটনার সূত্রপাত কোথায়?

গত, ১৬ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর দিন অতি জনপ্রিয় ও ভাইরাল ”টুম্পা সোনা” গানে উদ্দাম নাচের অপরাধে শাস্তি দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালযয়ের ৫ জন পড়ুয়াকে। স্কুল খুললেও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এখনও চালু হয়নি। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোয় অংশ নেন একাধিক ছাত্র ছাত্রীরা। এবিষয়ে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাঁরা পুজোর কোনও অনুমতি দেয়নি। তা সত্ত্বেও পুজো হয়েছে এবং পুজো চলাকালীন একদল ছেলে-মেয়ে টুম্পা সোনা গানের সঙ্গে উদ্দাম নাচ করে বলে অভিযোগ।

সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সকলের প্রশ্ন কীভাবে এরকম একটা ঘটনা ঘটল? বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে কীভাবে এমনটা হতে পারে? কেন কোনও শালীনতা বজায় রাখা হল না? প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে কোভিডের জন্য ক্লাস হচ্ছে না, সেখানে কীভাবে কোভিড বিধি নিষেধ না মেনে এরকম আয়োজন করা হল?

 

এই ঘটনায়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে জানান হয়েছে, যেহুতু তারা প্রত্যেকবছর পুজো করে, তাই এবছরও তারা পুজো করেছে।

নাচের ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তার তদন্ত করা হবে। ঠিক সেই মতোই বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠন করা সিন্ডিকেট শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিন্ডিকেট ইতিমধ্যে ৫ জনকে চিন্থিত করেছে। তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে। ২ বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না তাঁরা।

এরপরই নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাদের সমর্থকদের বহিষ্কার করেছেন উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী। শাসক দলের ছাত্রসংগঠনের সেই দাবি আরও জোরালো হয়, যখন দেখা যায় বিজেপি বিজেপি ও ABVP সমর্থকরা সোনালীদেবীকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ-এর জোয়ারে ভাসিয়ে দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, উপাচার্যকে বিজেপি পরিবারে স্বাগত বলে সরাসরি ফেসবুক পোস্ট করা হয়েছে। জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেওয়া হচ্ছে।

 

প্রতিবাদে সামিল হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকরাও। উপাচার্যকে ধিক্কার জানিয়ে তাদের বক্তব্য, ” কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজা করা কি অপরাধের? সরকার যখন পুজো করার পক্ষে তখন পুজো বন্ধ করে বিজেপির পালে হাওয়া দেওয়া এবং সরকারকে কালিমালিপ্ত করার প্রচেষ্টা কে ধিক্কার জানাই!”

এখানেই শেষ নয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আরও অভিযোগ, ভোটের মুখে উপাচার্যের হঠকারী সিদ্ধান্ত বিজেপির পালে হাওয়া দেওয়ার সামিল, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

Advt

Previous articleনির্বাচন কমিশন পরাধীন, চালাচ্ছে বিজেপি’, তীব্র কটাক্ষ অধীর চৌধুরি
Next articleবিজেপির ‘টলিউড বাঁচাও’ অভিযানে আজ পথে শিল্পী- কলাকুশলীরা