বড় মাপের অভিযোগ উঠলো বাম-কংগ্রেস জোট শরিক আব্বাস সিদ্দিকির ISF-এর বিরুদ্ধে ৷

এই অভিযোগ ঠিক প্রমানিত হলে নিশ্চিতভাবেই আব্বাস সিদ্দিকির ( Abbas SIDDIQUI) দলের এক সিদ্ধান্তে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে গোটা সংযুক্ত মোর্চাকেই৷ ইতিমধ্যেই অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে৷ কমিশনের পদক্ষেপের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল৷ কমিশনের আইনি ব্যাখ্যা না পেলে, ‘অন্য ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে৷

প্রাথমিকভাবে রাজ্যের ২০ বিধানসভা আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির দল। এই তালিকায় বলা আছে, রায়পুর কেন্দ্রে দলের প্রার্থী মিলন মাণ্ডি।

অথচ ওই মিলন মাণ্ডি কমিশনে যে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছে, সেখানে নিজেই হলফনামার মাধ্যমে জানিয়েছেন, উনি বিহারে নথিভুক্ত রাজনৈতিক দল
“রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিস পার্টি”-র তরফে রায়পুর কেন্দ্র লড়াই করছেন৷ প্রশ্ন উঠেছে, মিলন মাণ্ডি তাহলে কোন দলের ? আব্বাসের ‘ইণ্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’-এর? না’কি, ‘রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিস পার্টি’-র ? অন্য দলের এক প্রার্থীকে, নিজের দলের দলের প্রার্থী হিসাবে চালালেন কেন আব্বাস সিদ্দিকি?

প্রশ্ন উঠেছে,
◾মিলন মাণ্ডির নাম ISF-এর প্রার্থী তালিকায় থাকার পরেও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে মিলন মাণ্ডির নাম ‘রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিস পার্টি’-র প্রার্থী হিসেবে কেন জ্বলজ্বল করছে ?

◾মিলন মাণ্ডি কি ISF-এর প্রার্থী হিসেবে কোনও কাগজপত্রই কমিশনে জমা দেন নি?

◾ISF ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, ওই দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘খাম’৷ অথচ নির্বাচন কমিশনের নথিতে ‘খাম’ প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে বিহারের ‘রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিস পার্টি’-কে৷

◾ তাহলে এই ‘খাম’ প্রতীক কি
ISF-কে আদৌ বরাদ্দ করা হয়নি ? ISF নেতৃত্ব কি অসত্য বিবৃতি দিয়েছে ? সেক্ষেত্রে প্রশ্ন, ‘খাম’ প্রতীকটি আসলে কার?

◾’খাম’ প্রতীকটি তাদের বরাদ্দ করা হয়েছে, কমিশনের ইস্যু করা এ সংক্রান্ত কোনও নথি
ISF-এর হাতে আছে?

◾ তর্কের খাতিরে এখন ISF বলতে পারে, এই দল বিভিন্ন দলিত, আদিবাসী ও মুসলিম রাজনৈতিক দলের ফ্রন্ট৷ কিন্তু প্রশ্ন, তা কীভাবে সম্ভব? ISF নিজেই একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ রাজনৈতিক দল৷ এমনই বলেছেন আব্বাস৷ আব্বাসের কথায় স্পষ্ট, ISF কোনও ‘ফ্রন্ট’ নয়। একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল অন্যান্য একাধিক রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত হতে পারে?

◾একাধিক দল নিয়ে গঠিত বামফ্রন্ট বা সংযুক্ত মোর্চা৷ ফ্রন্ট বা মোর্চা এককভাবে কোনও একটি রাজনৈতিক দল নয়। ফ্রন্ট বা মোর্চায় একাধিক রাজনৈতিক দল থাকে৷ এ রাজ্যে যেমন বামফ্রন্ট বা সংযুক্ত মোর্চা আছে৷
ISF-তো একটি রাজনৈতিক দল, তাহলে ওই দলের অন্দরে আলাদা অস্তিত্ব নিয়ে একাধিক অন্য দল থাকে কীভাবে ? যদি সত্যি থেকে থাকে, তাহলে সেই পদ্ধতি কি নির্বাচন কমিশনের আইনে বলা আছে ?
নির্বাচন যখন দোরগড়ায়, সংযুক্ত মোর্চা যখন প্রবল উৎসাহে প্রচারে নেমে পড়েছে, তখন মোর্চার এক শরিক, ISF- এর বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর এই অভিযোগ প্রমানিত হলে, অস্বস্তিতে পড়বে সিপিএম, কংগ্রেস, উভয়েই৷ এমনকী মোর্চার অস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে ৷
এখন দেখার, নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ করে৷ সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল৷
আরও পড়ুন- মৌখিক প্রতিশ্রুতি আর নয়, ইস্তেহারেই থাকুক ফ্লাইওভার তৈরির কথা