নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়ার ঘটনার তদন্তের আর্জি শুনলো না শীর্ষ আদালত

নন্দীগ্রামে গত ১০ মার্চ এক ঘটনার জেরে আহত হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ওই ঘটনার CBI-স্তরের তদন্ত দাবি করে মামলা হয় শীর্ষ আদালতে৷
সুপ্রিম কোর্টে শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আবেদন শুনতে অস্বীকার করে জানিয়েছে, আবেদনকারী ইচ্ছা করলে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলা করতে পারেন।

নন্দীগ্রামে সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখতে CBI তদন্তের আর্জি জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন তিন আইনজীবী, শুভম অবস্তি, আকাশ শর্মা এবং সপ্তর্ষি মিশ্র৷ আদালতে পেশ করা হলফনামায় বলা হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন , নন্দীগ্রামে সেদিন তাঁর ওপর হামলা হয়েছিল৷ এই অভিযোগের সত্যতা কতখানি, তা জানার জন্য CBI তদন্তের প্রয়োজন৷ শীর্ষ আদালতে এই মামলায় নির্বাচন কমিশন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, CBI এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে পক্ষভুক্ত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে পায়ে চোট পেয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার পরইমমতা নেত্রী অভিযোগ করেছেন, পূর্ব পরিকল্পনা করে ৪-৫ জন এসে তাঁর গাড়ির দরজা আচমকা ধাক্কা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল। তাতেই তিনি আহত হয়েছেন। তৃণমূলের তরফে নির্বাচন কমিশনে মুখ্যমন্ত্রীর উপর এই হামলার অভিযোগও জানানো হয়।
ওই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যপালের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং DGP নীরজনয়ন। রিপোর্ট যায় নির্বাচন কমিশনেও। কিন্তু কমিশন ওই রিপোর্টে সন্তুষ্ট না হয়ে, ঠিক কীভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে চোট লেগেছিল, তার বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করে। ভিডিও ফুটেজ, স্থানীয় পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতে রিপোর্ট তৈরি হয়।
এরপর দু’টি রিপোর্ট খতিয়ে দেখে কমিশন জানায়, নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর কোনও হামলা হয়নি। পর্যবেক্ষকদের মতামতেই আস্থা প্রকাশ করে কমিশন। নির্বাচন উপলক্ষ্যে এ রাজ্যে নিযুক্ত পর্যবেক্ষক ও মুখ্যসচিবের রিপোর্টের ভিত্তিতে কমিশন স্পষ্ট জানায়, নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া গ্রামে মমতার পায়ে লাগার ঘটনা নেহাতই দুর্ঘটনা ছিল। কোনও হামলা হয়নি। কমিশন জানায়, “মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার রক্ষীদের গলদের জেরেই আঘাত পেয়েছিলেন মমতা। কমিশনের বক্তব্য, “মুখমন্ত্রীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ দায়িত্বে থাকা আধিকারিক বিবেক সহায়। নিরাপত্তা অধিকর্তা-সহ ডিএম, এসপিও ব্যর্থ। নন্দীগ্রামের মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিই জানতেন না বিবেক সহায়। মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি জানতেন না ওই জেলার শীর্ষতম আধিকারিকরা৷ । ব্যবহার করা হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর বুলেটপ্রুফ গাড়িও।”
এর পরই বিষয়টি শীর্ষ আদালত পর্যন্ত গড়ায়৷ শুক্রবার সেই মামলা শুনতে রাজি হয়নি সুপ্রিম কোর্ট ৷ আদালত বলেছে, আবেদনকারী ইচ্ছা করলে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলা করতে পারেন।

আরও পড়ুন-‘কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে প্রচার বন্ধের প্রস্তাব দিচ্ছে ওরা’, গুরুতর অভিযোগ মমতার

Advt

Previous articleজম্মু ও কাশ্মীরে রাতভর গুলির লড়াইয়ে খতম ৫ জঙ্গি
Next articleসর্বশ্রেষ্ঠ টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজন করবে ভারত, জানাল বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের