বাংলা সাহিত্যের অপূরণীয় ক্ষতি :শঙ্খ ঘোষের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গুণীজনেরা

বুধবার সকালে জাগতিক ভুবন থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন কবি শঙ্খ ঘোষ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গৃহবন্দি ছিলেন বেশ কিছুদিন।  চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে জয়ী হল মারণভাইরাস। বাঙালি হারাল এক কীর্তিমান কবিকে। শোকে মুহ্যমান তাঁর গুণমুগ্ধরা। ব্যক্ত করলেন হৃদয়ের যন্ত্রণার কথা:

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (Shirshendu Mukhopadhyay): মাথার ওপর থেকে ছাদ সরে গেল। ৬০ বছরের পরিচয় আমাদের । আমাদের দুজনের বাড়ি অনেকটা দূরে ছিল। দেখা হত সভা-সমিতিতে। শঙ্খদা খুব কম কথা বলতেন । হয়ত কোনও সভায় উনি সভাপতি হয়েছেন আর আমি বক্তা। অনেকবার দেখেছি উনি সভাপতির বক্তব্য না রেখেই মঞ্চ ছাড়তেন। গল্প করার সময় মজা করে আমি অনেকবার বলেছি, শঙ্খদা, এমন বোবা সভাপতি কিন্তু আমি কোথাও দেখিনি। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ওনার পড়াশোনা ছিল প্রচুর। খাদ্যরসিক ছিলেন না একদমই। বরং খাওয়ার ব্যাপারে চিরকাল সংযমী ছিলেন। ধুতি-পাঞ্জাবি ছাড়া কিছু পরতেন না। মোবাইল ছিল না,  অথচ প্রত্যন্ত গ্রাম  থেকে আসা কবিদের কবিতাও শুনতেন চুপ করে। অসম্ভব স্মৃতিশক্তি ছিল, চট করে কিছু ভুলতেন না।

জয় গোস্বামী (Joy Goswami) : ৪৫ বছরের যোগাযোগ আজ ছিন্ন হল। বড্ড অসহায় ও শোকগ্রস্ত বোধ করছি।  এক মহা বটবৃক্ষের পতন হল। তিনি ছিলেন জাতির বিবেক।  শঙ্খ ঘোষের কবিতা অনেককে অনেকভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।  আমি যে কী হারালাম আমিই জানি। বাংলা সাহিত্য জগৎ কী হারাল, সেটাও বাংলা সাহিত্যই জানে।

 

ব্রাত্য বসু  (Bratya Basu):   একটা যুগের অবসান হল। আমি তাঁর ছাত্র ছিলাম। তিনি আমার শিক্ষক। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর কাছে পড়েছি, ক্লাস করেছি। তাঁর শান্ত কণ্ঠস্বর, মৃদু ভাষণ তাঁর ব্যক্তিত্ব…এ কোনোদিনও ভোলার নয়।। তাঁর কবিতার মধ্যে দিয়ে আমাদের কৈশোর, যৌবন কেটেছে। তিনি আমাদের মধ্যে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন।

কৌশিক সেন (Koushik sen) :  বিরাট বড় ক্ষতি হল। শঙ্খবাবুর চলে যাওয়াটা সত্যিই বড় ক্ষতি। আক্ষরিক অর্থেই অপূরণীয় ক্ষতি। যা কোনদিনই পূরণ হওয়ার নয়।

 

 

রুদ্রপ্রসাদ (Rudra prasad): আমি অনাথ হলাম। তাঁর কাছে আমার ঋণের শেষ নেই। আমার সংগঠনকে উনি  নানাভাবে নীরবে সাহায্য করতেন। তাঁর সৃষ্টির মধ্যেই তিনি বেঁচে ধাকবেন। Long Live Shankhada

 

পবিত্র সরকার  (Pabitra Sarkar): তিনি প্রকৃতই প্রতিবাদী ছিলেন। তিনি দল-মতের ঊর্ধ্বে গিয়ে  প্রতিবাদ করতে দ্বিতীয়বার ভাবতেন না। সিঙ্গুর, মরিচঝাঁপি তাঁকে অশেষ দুঃখ দিয়েছিল। শান্তির মিছিলে, সম্প্রীতির মিছিলে বহুবার তিনি রাজপথে পা রেখেছেন। তিনি মানবদরদী ছিলেন। কত মানুষকে যে কতভাবে তিনি নীরবে সাহায্য করেছেন, তা অনেকেই জানেন না।

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়  (Parambrata Chatterjee):  “অকল্পনীয় অভাবনীয় অপূরণীয় ক্ষতি … ভালো থাকবেন কবি … ” লিখেছেন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।

Advt

Previous article‘এটাই হয়ত শেষ সকাল’, ফেসবুকে পোস্ট করার পরের দিনই মৃত্যু কোভিড পজিটিভ চিকিৎসকের
Next articleতৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়া করেই রাহুল গান্ধীর সভা বাতিল: দিলীপ