এবারের বিধানসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোটগ্রহণের শেষদিনের প্রচারে বরকত গণিখান চৌধুরীর (Bartak Ganikhan Chowdhury) গড় বলে পরিচিত মালদহে (Maldah) তৃণমূলের (Maldah) হয়ে প্রচারে ঝড় তুললেন মানস ভুঁইয়া (Manas Bhuiya), কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) এবং সুজাতা মণ্ডল খাঁ (Sujata Mandal Khan)। প্রচারে কুণাল বলেন, এখন তৃণমূলই আসল কংগ্রেস। তারাই ৩৪ বছরের বাম অপশাসনকে সরিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে। আর এখন যাঁরা কংগ্রেস, তাঁরা সব ভুলে বামেদের হাত ধরেছেন। তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, তাঁরা গণিখান চৌধুরীকে শ্রদ্ধা করেন। তিনি বেঁচে থাকলে কংগ্রেসের (Congress) এই সিদ্ধান্ত কখনওই মেনে নিতেন না। মালদহের কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হতে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন জানাতে আহ্বান জানান কুণাল ঘোষ।

প্রথম সভাটি কুণালরা করেন মালদহের ইংরেজবাজারে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর (Krishnendu narayan Chowdhury) সমর্থনে। এরপর, সভা হয় মহিষবাথানে প্রার্থী উজ্জ্বলকুমার চৌধুরীর (Ujjwalkumar Chowdhury) সমর্থনে। এই সভাটি করা হয় একেবারে আমবাগানের মধ্যে। ফলন্ত গাছের নীচে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দেন নেতা-নেত্রীরা। শেষ সভা তাঁরা করেন মালদহের মোথাবাড়িতে, তৃণমূল প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিনের (Sabina Yasmin) সমর্থনে। সাবিনা ইয়াসমিন জানান, রাজ্যসভার সাংসদ থাকাকালীন সাংসদ তহবিল থেকে ১০ লক্ষ টাকা একটি উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তাঁকে দিয়েছিলেন কুণাল। সেই জন্য এদিন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদকে ধন্যবাদ জানান সাবিনা। জনসভার পাশাপাশি এইসব জায়গায় বুথ ভিত্তিক কর্মিসভায় করেন মানস-কুণাল-সুজাতা।
কেন্দ্রের নীতির বিরোধিতায় সরব হন তৃণমূল মুখপাত্র। বলেন, দেশের মানুষের জন্য ভ্যাকসিন না রেখে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের সংকটের সময় ওষুধ, অক্সিজেন, চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে, তিনি বাংলার ভোটের প্রচার করতে দিল্লি থেকে ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন। শুধু তাই নয়, কুণাল অভিযোগ করেন, ওষুধ, অক্সিজেনের ব্যাপারেও পক্ষপাতিত্ব করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বাংলাকে বঞ্চিত করে অক্সিজেন-ওষুধ পাঠানো হচ্ছে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাটের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandopadhyay) কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন কুণাল।

বিজেপির (Bjp) সাম্প্রদায়িক বিভেদে রাজনীতির নিন্দা করেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, শুধু হিন্দু-মুসলিম ভাগই নয়, হিন্দুদের মধ্যেই জাতপাতের বিভাজন করছে গেরুয়া শিবির।

তৃণমূল নেতা তথা প্রার্থী মানস ভুঁইয়া বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলাতেও সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াতে চাইছে। রাজ্যের সাম্প্রদায়িক ঐক্য বজায় রাখতে তৃণমূলকেই তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান মানস ভুঁইয়া। তিনি বলেন, এবার রাজ্যে তৃণমূলের জয়ের পরে, আগামী লোকসভা নির্বাচনের কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে উৎখাত করা যাবে।

আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল খাঁ বলেন, তৃণমূলের গদ্দারা বিজেপিতে নাম না লেখালে 294 টি আসনে প্রার্থী দিতে পারত না গেরুয়া শিবির। সুজাতা অভিযোগ করেন, বিজেপি মেয়েদের সম্মান দেয় না। দেশের একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীকে উৎখাত করতে এখন উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তিন নেতা-নেত্রীই আত্মবিশ্বাসী যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন- ‘এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ফেরত নিন, সেফ হাউস করতে পারছি না’, কমিশনকে তোপ মমতার
