বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া শান্তিতেই বঙ্গে শেষ ভোট অষ্টমী

দেশে বাড়তে থাকা করোনা পরিস্থিতির(Corona Situation) মাঝেই বৃহস্পতিবার রাজ্যের ৪ জেলার ৩৫ টি আসনে ছিল অষ্টম দফার নির্বাচন। সকাল থেকে কিছু বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া এদিন শান্তিতেই শেষ হল অষ্টম তথা শেষ দফার নির্বাচন পর্ব। এদিন সকাল থেকে মূলত অশান্তি খবর আসে বীরভূম(Birbhum) ও মুর্শিদাবাদ(Mursidabad) জেলা থেকে। পাশাপাশি অন্যান্য দফার তুলনায় শেষ দফায় কিছুটা হলেও কমলো ভোটদানের হার। শেষ পাওয়া খবরে, এদিন সন্ধে ৬টা পর্যন্ত শেষ দফায় ভোটের হার ছিল ৭৬.০৭ শতাংশ। বীরভূম ৮১.৮২, কলকাতা উত্তর ৫৭.৮৫, মালদহ ৮০, মুর্শিদাবাদ ৭৮.০৯ শতাংশ। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার ভোট অনেকটাই কম পড়েছে কলকাতাতে।

বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন শুরু হওয়ার কিছু পরেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি। চলে বোমা-গুলি। জলঙ্গি বিধানসভা কেন্দ্রের ঘোষপাড়ার ২৩৩ নম্বর বুথে তৃণমূলের(TMC) কর্মীরা অতর্কিতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ৷ ঘটনার জেরে জখম হন দু’জন। পাশাপাশি, দুপুরের দিকে মুর্শিদাবাদের ডোমকল এলাকায় প্রকাশ্য রাস্তায় বোমা হাতে দাপাদাপি করতে দেখা যায় দুষ্কৃতীদের(Antisocial)। যার জেরে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রচুর পরিমান বোমা উদ্ধার করে নিরাপত্তা বাহিনী(Central Force)।

এছাড়াও বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন এদিন উত্তপ্ত হয়ে উঠে কান্দির ৬ ও ১৮ নং ওয়ার্ড ৷ বিজেপি কর্মী কার্তিক সাহা ও তাঁর পরিবারকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ৷  ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায় ৷ বাইক ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল বিরুদ্ধে৷

এছাড়াও এদিন সকাল থেকে বীরভূমের নানুর, ইলামবাজার, লাভপুরের মতো একাধিক জায়গায় থেকে অশান্তির খবর আসে। ভোটের দিন তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইলামবাজার। ইলামবাজারে ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভীত-সন্ত্রস্ত ভোটারদের বুথে নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। পুলিশের সামনেই মারামারি শুরু হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বোলপুরের বিজেপি প্রার্থীই গোলমাল করেন। অভিযোগ অস্বীকার করেন বিজেপি প্রার্থী। জমায়েত হঠাতে লাঠি চার্জ করতে দেখা যায় বাহিনীকে। এছাড়াও বুধবার রাতে ইলামবাজার থানার বাতিকার গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ বদরুলের বাড়িতে বোমাবাজি করার অভিযোগ ওঠে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তার বাড়ি লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি বোমা ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। পাশাপাশি নানুর বিধানসভার অন্তর্গত বেজরা গ্রামে ১১২ নম্বর বুথের তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট দেবদাস সরকারের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।

শেষ দফার নির্বাচনে উত্তেজনা দেখা যায় শহর কলকাতাতে। সকাল প্রায় সাড়ে ৭টা নাগাদ মহাজাতি সদনের সামনে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। যদিও পরে নির্বাচনকমিশনের তরফ এ জানিয়ে দেওয়া হয় বোমাবাজির ঘটনা ঘটেনি কে বা কারা চকলেট বাজি ফাটিয়েছিল ওই এলাকায়। শুরুটা ঠিকঠাক হলেও বেলা গড়াতে না গড়াতেই উত্তেজনা ছড়ায় বেলেঘাটার রাজবল্লভপাড়ায়। তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ রীতিমতো রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করে। বাঁশ, লাঠি, হকি স্টিক, চ্যালা কাঠ। কিছুই বাদ যায়নি। চলে ইট-বৃষ্টিও। দুই শিবিরই একে অন্যের দিকে অভিযোগ তুলছে।

আরও পড়ুন:আত্মত্যাগ: করোনা আক্রান্ত নবীনকে বেড ছেড়ে বাড়িতে মৃত প্রবীণ আরএসএস সদস্য

এছাড়াও, এদিন ভোটের ডিউটিতে গিয়ে বীরভূমে তারাপীঠের মন্দিরে পুজো দিয়ে বিতর্কে জড়ান সিআরপিএফের(CRPF) আইজি। নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ঘটনায় রিপোর্ট তলব করল কমিশন। পাশাপাশি মালদা বিধানসভার ১৭০ নম্বর বুথে করোনা আক্রান্ত এক আশা কর্মীকে জোর করে ডিউটি করানোর অভিযোগ ওঠে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। যদি বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নেয় কমিশন। কোন সমাজের উদ্যোগে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় ওই মহিলাকে। সব মিলিয়ে নরমে-গরমে বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া বৃহস্পতিবার শান্তিতেই শেষ হয় রাজ্যে অষ্টম তথা শেষ দফার নির্বাচন।
Advt

Previous articleকোভিশিল্ডের পরে দাম কমল কোভ্যাকসিনের, রাজ্যকে কত দামে ভ্যাকসিন? জানাল ভারত বায়োটেক
Next articleরাজস্থান রয়‍্যালসের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে জয় পেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স