বিধানসভা নির্বাচনের চলছে শেষ দফা অর্থাৎ অষ্টম দফা৷ শেষ দফায় মোট ৩৫টি আসনে চার জেলায় ভোটগ্রহণ চলছে৷ বীরভূমে ১১টি, মুর্শিদাবাদে ১১টি, মালদায় ৬টি ও কলকাতার ৭টি আসনে নির্বাচন চলছে ৷ শেষ দফায় মোট বুথের সংখ্যা রয়েছে ১১ হাজার ৮৬০টি। এর মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি সংবেদনশীল বুথও। বুথে বুথে ভোটারদের লম্বা লাইন ৷ করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে ভোটগ্রহণ ৷

সকাল ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৩৭.৭৮ শতাংশ। বীরভূম ৩৮.০৪, কলকাতা উত্তর ২৭.৬৫, মালদহ ৪১.৬৭, মুর্শিদাবাদ ৪১.০১ শতাংশ। শেষ দফায় ভোটের দিন কলকাতায় বোমাবাজির ঘটনা ৷ সকাল প্রায় সাড়ে ৭টা নাগাদ মহাজাতি সদনের সামনে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বোমা ছোঁড়ার ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন।
এরই পাশাপাশি ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷ অভিযোগ করেছেন কাশীপুর- বেলগাছিয়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শিবাজী সিংহ রায়৷ তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে৷ শহিদ স্মৃতি সংঘ নির্বাচন কেন্দ্রে ১৩১ এবং ১৩৪ বুথে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উত্তর কলকাতার মানিকতলার বুথে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় । বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। কল্যাণ চৌবেকে ‘হেনস্থা’র অভিযোগও উঠেছে। অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থীকে ধাক্কা দেওয়া হয়, চলে হাতাহাতি। চৌবে হাতে চোট পেয়েছেন বলে জানান। তৃণমূলের অভিযোগ, সেখানে ঝামেলা করতে এসেছেন বিজেপি প্রার্থী।
শেষ দফা নির্বাচনে বেলেঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রে সকাল থেকে পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ার মত । গোটা এলাকায় টহল দিচ্ছে বেলেঘাটা থানার পুলিশ । যারা জমায়েত করছে লাঠি উঁচিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে । এমনকি, অবৈধ জমায়েতের অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ ৷ তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল বীরভূমের লাভপুরের পূর্ণগ্রাম এলাকা। দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয় ৷ বুথের সামনে জমায়েত করাকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ঘটনাস্থলে রয়েছে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী ।

লাভপুরে হাজরা পাড়ায় ১৪টি বোমা উদ্ধার হয়েছে ৷ বুথ থেকে মাত্র ১০০ মিটারের মধ্যে বোমা উদ্ধার হয় ৷ বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করার জন্য ঘটনাস্থলে রয়েছে বোলপুর থেকে সিআইডি-র বম্ব স্কোয়াডের প্রতিনিধিরা ৷ হরিহরপাড়ায় তৃণমূল সমর্থকদের বাড়ির সামনে বোমাবাজি ৷ বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে ৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি ৷ এদিকে, হোসেনপুর ১০২ নম্বর বুথ এলাকায় কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকের বাড়িতে দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগ উঠল।

তৃণমূল প্রার্থী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। বৃহস্পতিবার, সকালে চৌরঙ্গি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী নয়না মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউটের বুথে ঢুকতে গেলে তাঁকে বাধা দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাহিনীর জওয়ানরা নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি কে, কোন দলের প্রার্থী, ভোটের সময় কেন এখানে এসেছে বারবার এইসব প্রশ্ন করতে থাকে। নয়না নির্বাচন কমিশনের দেওয়া আইডেন্টিটি কার্ড দেখিয়ে বাহিনীর জওয়ানদের জবাব দিলেও তারা তা মানতে চায়নি বলে অভিযোগ।
কোভিড সুরক্ষাবিধি মেনে গণতন্ত্রের উৎসবে সামিল হওয়ার আবেদন করে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ টুইটে তিনি লেখেন, আজ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন ২০২১-র শেষ দফার নির্বাচন৷ করোনা সুরক্ষাবিধি মেনে আপনারা ভোট দিন ও গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল হন৷ বাংলার উন্নয়নের স্বার্থে ভোট দেওয়া আবেদন জানিয়ে বাংলায় টুইট করেন অমিত শাহও।

সকাল সকাল ভোট দিলেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী ৷ উত্তর কলকাতার কাশীপুর-বেলগাছিয়ার একটি বুথে ভোট দেন তিনি ৷ ভোট দিয়ে বেরিয়ে তিনি বলেন, “আমি এর আগে কোনওদিন এত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিইনি ৷ আমি নিরাপত্তারক্ষীদের অভিনন্দন জানাতে চাই ৷” ভোট শুরুর আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল নানুর ৷ নানুর বিধানসভার অন্তর্গত বেলুটি গ্রামে বিজেপি-র কর্মীদের মারধর ও বোমাবাজির অভিযোগ উঠল ৷ বিজেপির এজেন্টকে বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে ৷

নানুরের সিঙ্গি অঞ্চলের বেজরা গ্রামে ১১২ নম্বর বুথে বোমাবাজি । তৃণমূলের এজেন্ট দেবদাস সরকারের বাড়িতে বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ । ভেঙে দেওয়া হয় তাঁর বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা । ছিঁড়ে ফেলা হয় তৃণমূলের দলীয় পতাকা, ব্যানার । বিজেপির বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ তৃণমূলের ৷

এদিকে নজরবন্দি তাঁর কাছে নতুন কিছু নয়। অতীতের নির্বাচনেও কমিশনের কড়া ‘ম্যান মার্কিং’ ছিল বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জন্য। এ বারেও ৬০ ঘণ্টার জন্য নজরবন্দি তিনি।

শীতলকুচির সেই অভিশপ্ত ১২৬ নম্বর বুথে পুননির্বাচনে ফের উত্তেজনা, পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন তৃণমূল প্রার্থী। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে চলছে ভোটগ্রহণ ।

আরও পড়ুন:বেলাগাম পরিস্থিতি, দেশে একদিনে করোনায় মৃত্যু ৩ হাজার ৬৪৫ জনের
