গণনার আগের দিন রাজভবনে মিঠুন চক্রবর্তী! জল্পনা তুঙ্গে

বাংলার বহুচর্চিত হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election) ফল প্রকাশের (Result Out) আর মাত্র বাকি কয়েক ঘন্টা। রাত পোহালেই রবিবার সকাল ৮টা থেকে রাজ্যের ২৯২টি আসনে ফলাফল ঘোষণা হবে। বেলা যত গড়াবে, ছবিটা ততই পরিষ্কার হয়ে যাবে। আর বিকেলের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে বাংলার রায় কার দিকে। আগামী ৫ বছরের জন্য কাদের হাতে থাকবে বাংলার শাসন ক্ষমতা। কে বসবেন মুখ্যমন্ত্রীর (CM) কুর্সিতে। বুথ ফেরৎ সমীক্ষাগুলির (Exit Poll) অসম সম্ভাবনায় অবশ্য বাংলা দখলের লড়াই “মোদি” VS “দিদি” হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেরুকরণের এই নির্বাচনে মাঝে আর কোনও দল নেই। অর্থাৎ, বিজেপি (BJP) অথবা তৃণমূল (TMC), ক্ষমতায় আসতে চলেছে এই দুটি দলের মধ্যে থেকেই একটি দল,সেটা ফলাফল ঘোষণার আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ ধোপে টিকবে না, বরং অস্তিত্ব বিপন্ন হতে চলেছে সংযুক্ত মোর্চা নামক দুটি দলের, সেটাও একপ্রকার নিশ্চিত। অধিকাংশ এক্সিট পোলের ইঙ্গিত অনুযায়ী ফের ক্ষমতার আসছে তৃণমূল, তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তবে কেউ কেউ এগিয়ে রাখছে নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) দল বিজেপিকেও। যদিও বিজেপি প্রথমবারের জন্য বাংলায় ক্ষমতায় এলে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন সেটা একমাত্র “রাম জানে”!

বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারে এমন সম্ভাবনার বিষয়টি আঁচ করে চার লোকসভার সাংসদ (বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, নিশীত প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার) এবার পদ্ম চিহ্নে লড়াই করেছেন। আবার রাষ্ট্রপতি মনোনীত রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বিধানসভা ভোটে লড়েছেন। দীর্ঘদিন পর মুকুল রায় ভোটের ময়দানে। তাঁর জয় এক প্রকার নিশ্চিত বলেই মনে করা হচ্ছে। ভোটের ময়দানে দলবদলু শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো হেভিওয়েট নেতা। যদিও দু’জনেই হারাবেন বলে বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

ভোট পর্ব শেষের পরই বিজেপি ক্ষমতায় এলে কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী? অন্যান্য দফতরই বা পাবেন কারা? তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরে। ভোটে না দাঁড়ালেও দলের রাজ্যসভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের নাম প্রাথমিক আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে উঠে আসছে বলে জানা যাচ্ছে।

আর এই সবকিছুর মধ্যে মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) গণনার (Counting) ঠিক আগের দিন রাজভবনে (Raj Bhavan) যাওয়া নিয়েও জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আজ, শনিবার সকালে রাজ্যপালের (Governor) আমন্ত্রণে (Invite) রাজভবনে যান মিঠুন চক্রবর্তী। তাৎপর্যূর্ণভাবে রবিবারই প্রকাশিত হবে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election 2021) ফল। আর তার আগেই এ ভাবে মিঠুনের রাজ্যপালের (Governor) সঙ্গে সাক্ষাৎ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankar) ও মিঠুন চক্রবর্তীর মধ্যে এই সাক্ষাৎকার সম্পূর্ণ সৌজন্যমূলক। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে মিঠুনের পরিচয় বা জনপ্রিয়তার ব্যপ্তি অনেক বেশি। তাই সেই জায়গা থেকেই রাজ্যপাল ধনকড় “মহাগুরু” মিঠুনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে খবর। আর সেই আমন্ত্রণেই সাড়া দিয়ে রাজভবনে আসেন সুপারস্টার অভিনেতা।

উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদির ব্রিগেড সভায় বিজেপিতে অনুঠানিক ভাবে যোগদানের পর গত এক মাস ধরে রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ভোট প্রচার করতে দেখা গিয়েছে মিঠুনকে। বিজেপির হয়ে প্রচার করলেও ভোটে লড়েননি তিনি। একটা সময় জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। টালিগঞ্জ এবং কাশীপুর-বেলগাছিয়া থেকে মিঠুন ভোটে লড়তে পারেন , এমন সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। বিশেষ করে যখন কলকাতায় বোনের বাড়ির ঠিকানায় ভোটার লিস্টে নাম তুলেছিলেন অভিনেতা। কিন্তু সেই জল্পনায় শুরুতেই জল ঢেলে দিন মিঠুন। তিনি জানিয়েছিলেন, ভোটে লড়বেন না। তবে বিজেপির সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে প্রচার থেকে শুরু করে যা যা করার সবই করবেন।

আরও পড়ুন:করোনা আক্রান্ত শিয়ালদহ সেকশনের ৭৫০ রেলকর্মী, বাতিল ৫৪ জোড়া লোকাল ট্রেন

কিন্তু ভোটে না লড়েও দল ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ৬ মাসের মধ্যে যে কোনও একটি আসন থেকে জিতে আসতে হবে। ফলে সেই ফর্মুলাতে এখনও অনেকেই মনে করছেন বিজেপি ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে চমক থাকতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন মিঠুন চক্রবর্তী। এদিন রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সেই জল্পনা আরও উসকে উঠেছে। তবে যাইহোক না কেন, প্রথম শর্তই হলো কমপক্ষে ১৪৮টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে বিজেপিকে। সেটা কি আদৌ সম্ভব? উত্তর মিলবে আর কয়েক ঘন্টা পরেই!

Advt

Previous articleকরোনা আক্রান্ত শিয়ালদহ সেকশনের ৭৫০ রেলকর্মী, বাতিল ৫৪ জোড়া লোকাল ট্রেন
Next articleমধ্যপ্রদেশে পরিত্যক্ত ট্রাক থেকে উদ্ধার ৮ কোটি টাকার কোভ্যাক্সিন