‘ব্লেম-গেম’ চালু, কোন পথে ঘুরে দাঁড়াবে দল, দিল্লিকেই বলতে হবে, সরব রাজ্য বিজেপি

এমন হওয়ারই কথা ছিলো৷ দল মুখ থুবড়ে পড়ার পরই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকেই আঙুল তোলা শুরু করেছেন বঙ্গ- বিজেপি-র নেতারা।

দিল্লির নেতারা বলেছিলেন, ‘ইস বার, দো’শো পার’৷ ২০০-তো বহুদূর, বিজেপি কোনওক্রমে ৭৭-এ এসে ঠেকেছে৷ এই পতনের পরই নিজেদের দায় এড়িয়ে, নিজেদের যোগ্যতা কতখানি, তা ভুলে রাজ্য বিজেপি ‘ব্লেম গেম’ চালু করে দিয়েছে৷

এখনও সরাসরি মুখ না খুললেও রাজ্য নেতারা এই লজ্জাজনক ফলের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে আঙুল তোলা শুরু করে দিয়েছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতা বলতে শুরু করেছেন, ‘‘বাংলা দখল করতে দিল্লি যাদের সেনাপতি করে পাঠিয়েছিলো, জিতলে তো এতক্ষণ তাঁরাই ক্রেডিট নিতেন। এখন হারের দায়ও তাঁদেরই নিতে হবে।’’

রাজ্য বিজেপির এহেন মন্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহদের ভূমিকা নিয়েও তাদের প্রশ্ন আছে৷ কিন্তু সতর্কভাবে দুই শীর্ষনেতার নাম উচ্চারণ না করলেও আঙুল তোলা হয়েছে রাজ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩ নেতার দিকে৷ RSS নেতা প্রদীপ যোশি, বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিব প্রকাশ এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্যের দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে ফাঁসিকাঠে তোলা শুরু হয়েছে৷ বঙ্গ-বিজেপি নেতারা এইভাবেই দিল্লির ঘাড়ে দায় চাপিয়ে নিজেরা হাত ধুয়ে নিতে চাইছেন৷

নীলবাড়ি দখল করতে
দিল্লির নেতাদের নির্দেশ বাংলায় কার্যকর করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো ওই কৈলাস, প্রদীপ, শিব-কেই৷ এই দায়িত্ব তাঁরা পালন করেছেন গত কয়েক বছর ধরেই। পরাজয়ের পর রাজ্য বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, অন্য দল থেকে বিজেপি-তে কারা যোগ দেবেন, তা চূড়ান্ত করা থেকে কোন কেন্দ্রে কে প্রার্থী হবেন, সবই ঠিক করেছেন এই তিনজন৷ রাজ্য নেতাদের পাত্তাই দেওয়া হয়নি৷ আজ দলের এই ঘোর দুর্দিনে, এনাদের দায় এড়ানো মেনে নেওয়া সম্ভব নয়৷ পতনের জন্য এঁরাই দায়ি৷
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য ‘ম্যানেজ’ করা মন্তব্য করেছেন৷ বলেছেন, ‘‘যে কোনও রাজ্যে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিই নেয় বিজেপি।আজ ফল খারাপ হয়েছে বলে কাউকে দোষারোপ করা বোধহয় ঠিক হবেনা।’’

রাজ্যের শীর্ষ পদাধিকারি হিসাবে দিলীপ ঘোষ ভারসাম্য বজায় রাখা এমন বার্তা দিলেও রাজ্য বিজেপি-র একাধিক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘স্থানীয় নেতাদের গুরুত্ব না দিয়ে সব ক্ষেত্রেই দিল্লি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছেন৷ এই কাজ করেছেন ওই তিনজন৷ প্রার্থী তালিকা তৈরির ক্ষেত্রেও এঁরা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে যাকে তাকে প্রার্থী করেছেন। তখন এসব মেনে নিতে হয়েছে বাধ্য হয়ে। এখন তো এরা অন্য দায়িত্ব নিয়ে রাজ্য থেকে চলে যাবেন। কিন্তু হারের ফল তো ভুগতে হবে আমাদের।’’

বঙ্গ বিজেপি নেতারা খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘‘দলের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই ৩ জনের নির্দেশকেই আমরা মেনেছি৷ এঁরাই তো আমাদের কাছে মোদি-শাহ ছিলেন। এখন রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে গেলে হবে না৷ এই তিনজনকেই আজ বলতে হবে কোন পথে ঘুরে দাঁড়াবে দল। কী ভাবে বাঁচবেন কর্মী, সমর্থকরা। দলকে বিপর্যয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে ভিন রাজ্যে এরা ভেগে গেলে, আমাদেরও অন্য কিছু ভাবতে হবে”৷

আরও পড়ুন:করোনার কারণে স্থগিত চলতি মরশুমের আইপিএল, জানালেন রাজীব শুক্লা

Advt

Previous articleকরোনার কারণে স্থগিত চলতি মরশুমের আইপিএল, জানালেন রাজীব শুক্লা
Next articleদেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৪ লক্ষ ৫০ হাজার ছুঁইছুঁই, একদিনে করোনায় মৃত্যু ৩৪৪৯ জনের