এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিন বিজেপির সমর্থনে ট্যুইটের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন কঙ্গনা রানাউত। এনআরসি, সিএএ থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা, বহিরাগত, একের পর এক ইস্যুতে তিনি বেঁধেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বাংলায় অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে কঙ্গনার বিরুদ্ধে FIR কলকাতা পুলিশে। তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন আইনজীবী সুমিত চৌধুরী।অভিযোগ, ‘বাংলার আইনশৃঙ্খলার ভারসাম্য নষ্ট করতে চাইছেন কঙ্গনা’।তিনি মুম্বইয়ের বাসিন্দা। পেশায় রূপোলি পর্দার অভিনেত্রী। কিন্তু আপাতত তাঁর ট্যুইটার দেওয়াল জুড়ে শুধুই পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের তরজা।
তিনি টুইট কখনও পশ্চিমবঙ্গকে কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। আবার কখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘রাবণ’ বলে কটাক্ষ করেছেন অভিনেত্রী।
ভোটে জয়ী হয়ে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়তে চলেছে তৃণমূল। এই প্রেক্ষাপটেই একাধিক টুইট করেছেন কঙ্গনা। একটি টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশী আর রোহিঙ্গারাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল শক্তি। তথ্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুরা আর সংখ্যাগরিষ্ঠ নেই। আর বাঙালি মুসলিমরা হল ভারতবর্ষের মধ্যে সবচেয়ে সবচেয়ে গরীব। বাংলায় একটা কাশ্মীর তৈরি হচ্ছে।’ এখানেই থামেননি কঙ্গনা। একের পর এক টুইট করে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিঁধেছেন তিনি। আরামবাগে বিজেপির পার্টি অফিসে আগুন লাগানোর খবরের একটি টুইট রিটুইট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘আগামীদিনে বাংলায় রক্তস্নান হবে। সরকার হেরে যাওয়ার ভয়ে রক্ত পিপাসু হয়ে উঠবে।’
কখনও আবার অমিত শাহকে টুইটারে ট্যাগ করে বাংলায় বিজেপি কর্মীদের বাঁচাবার আবেদন জানিয়েছেন কঙ্গনা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের জয়লাভ ঘোষণা হওয়ার পর তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন কঙ্গনা। কিন্তু সেই টুইটেও ছিল তীব্র খোঁচা। একটি টুইট করে কঙ্গনা লেখেন, ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বাঘিনীর মতই লড়াই করেছেন এই বিধানসভা নির্বাচনে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামতে দেয়নি। সিএএ, এনআরসিকে আটকেছেন। মোদিকে খেলায় আহ্বান করেছেন। একেবারে খোলাখুলি শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছেন, তাঁদের ভোটার কার্ড দিয়েছেন। গণতন্ত্র এখানে রসিকতা। তবু আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্যালুট জানাচ্ছি। কারণ যদি ভিলেন হতেই হয় তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো হন। রাবণের মতো লড়াই করুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ী হওয়াই উচিত।’
এই সমস্ত টুইটের জেরেই মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ওই আইনজীবী। তিনি বলেছেন, ‘বাঙালি এবং বাংলার বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন কঙ্গনা রানাউত। বিজেপি-র পক্ষ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অশান্তি ছড়াতে চাইছেন কঙ্গনা। বাংলার আইনশৃঙ্খলার ভারসাম্য নষ্ট করতে এনআরসি এবং সিএএ-র সমর্থনে কথা বলে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি।’
সাসপেন্ড করা হয়েছে বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের টুইটার অ্যাকাউন্ট। অভিযোগ, অভিনেত্রীর করা কয়েকটি পোস্ট মাইক্রো ব্লগিং সাইট সংস্থার নীতি লঙ্ঘন করেছে।
এই বিষয়ে হাইকোর্টে একটি মামলাও করা হয়েছে ।