ভাঙনের মুখে গেরুয়া শিবির, বিধায়কদের ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপি, লাইনে দলবদলুরাও

সরকার গড়ার দাবিদার বিজেপি আটকে গিয়েছে ৭৭-এ৷

তার উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) এক কৌশলি মাস্টারস্ট্রোকে এই ৭৭ বিধায়ককের (BJP MLA) বড় একটি অংশকে কতদিন পদ্ম-পতাকার তলায় রাখতে পারবে গেরুয়া নেতারা, এখনই তা নিয়ে ঘুম উড়েছে বিজেপি’র৷

বড় মনের পরিচয় দিয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেছেন, ‘বিজেপি থেকে যাঁরা তৃণমূলে ফিরতে চান, তাঁদের স্বাগত’৷ আর এর পরই বিজেপি নেতারা গভীর দুশ্চিন্তায়৷ ভোটের মুখে যে উল্লাসে বিজেপি একের পর এক তৃণমূল ভাঙ্গিয়েছে, তা এখন ব্যুমেরাং হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা ৷

২০১৬-র ৩ আসন ২০২১-এ ৭৭ হয়েছে বিজেপি৷ কিন্তু টানা ৫ বছর এই ৭৭ বিধায়ককে দলে রাখতে পারবে কি’না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে৷ সন্দেহের কারন, ফলপ্রকাশের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বিজেপির সদ্যনির্বাচিত একাধিক বিধায়ক গোপনে শাসক দলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন৷ তৃণমূল নেতৃত্ব সব কিছু খতিয়ে দেখে এবং ওই বিধায়কের কেন্দ্রের স্থানীয় নেতৃত্ব সেভাবে আপত্তি না জানায়, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই বেশ কিছু বিজেপি বিধায়ককে তৃণমূলের পতাকাতলে দেখা যেতে পারে৷ ভোটের ফলে এমনিতেই মুষড়ে পড়া বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বের কাছে এখন নতুন সমস্যা, নির্বাচিত বিধায়কদের ধরে রাখা৷ এই আবহে বুধবারই বিজেপি তড়িঘড়ি নব নির্বাচিত বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা৷ নিউটাউনের একটি হোটেলে এই বৈঠক হবে৷ এই বৈঠকে দলীয় বিধায়কদের নানা আশ্বাসও দেওয়া হবে, যাতে তাঁদের একাংশ দলবদল না করেন৷

পাশাপাশি,ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বেশ কিছু নেতা এবার পদ্ম-প্রতীকে প্রার্থী হয়েছিলেন এবং বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন৷ এই দলবদলুদের একাংশও এখন জোরদার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূলে ফেরার৷
শাসক দলের সবুজ সংকেত পেলে আর এক মুহুর্তও দেরি না করে এরা সদলবলে যোগ দেবেন তৃণমূলে৷

ফলপ্রকাশের পর বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রক্রিয়াও চালু হয়ে গিয়েছে ৷ ইতিমধ্যেই গাদা গাদা বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে তৃণমূলের শীর্ষস্তরের নেতাদের কাছে৷ কেউ গোপনে মেসেজ পাঠাচ্ছেন, কেউ আবার প্রকাশ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত হয়েছেন সংবাদ মাধ্যমে৷ দলবদলুদের অধিকাংশই এখন এই পথের পথিক৷ তবে তৃণমূলের মধ্যেই কথা উঠেছে, যারা মন্ত্রী, জেলা পদাধিকারী বা অন্য দায়িত্বে ছিলেন এবং যারা মোদি বা শাহের কাছ থেকে পদ্ম- পতাকা নিয়েই মমতা বা তৃণমূলকে তুলোধনা করেছেন, নাম উল্লেখ করে ব্যক্তিগত কুৎসা করেছেন, তাঁদের দলে ফেরানো যাবে না৷ তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন স্বয়ং দলনেত্রীই৷

Advt

Previous articleশপথ গ্রহণের আগে টিম প্রশান্ত কিশোরকে ধন্যবাদজ্ঞাপন মমতার
Next articleতন্ময়ের বক্তব্য অনুমোদন করল না সিপিএম, চাওয়া হবে ব্যাখ্যা