খাওয়ার সময় নেই, সারাদিন জ্বলছে চিতা, দিল্লির শ্মশানে শ্মশানকর্মীদের মর্মস্পর্শী কাহিনী

করোনার(coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেহাল দশা ভারতের। আক্রান্তের সঙ্গেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। চিকিৎসা পরিষেবা দিতে ভগ্নস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্ত পায়ে দাঁড় করাতে দিবারাত্র পরিশ্রম করে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা(health worker)। এর বাইরে মৃত করোনা রোগীদের সৎকারের জন্য নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন শ্মশান কর্মীরাও(Cremation worker)। সম্প্রতি তেমনি ছবি উঠে এলো দিল্লির একাধিক শ্মশান থেকে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চিতা জ্বলছে। অন্যদিকে মৃতদেহ সৎকার করতে লাইনও বেড়ে চলেছে ক্রমাগতভাবে। চাপ এতটাই যে বাড়ির পথ ভুলেছেন কর্মীরা। কাজের ফাঁকে কোনমতে স্নান খাওয়া সেরে ফের কাজ। কিছুক্ষণের জন্য শ্মশানেই ঘুম। এটাই এখন দৈনন্দিন ছবি হয়ে উঠেছে দিল্লির শ্মশানে থাকা শ্মশান কর্মীদের জীবনের।

দিল্লির শ্মশানে শ্মশান কর্মী বা ডোম হিসেবে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, সারাদিনে খাওয়ার সময়টুকু মিলছে না। মৃতদেহ সৎকারের চাপ এতটাই। ভোর পাঁচটায় উঠে আগের দিনের পোড়ানো দেহের ছাই সংগ্রহ করে শ্মশানঘাট পরিষ্কার করা হয়। ১০টা থেকে সত্‍কার প্রক্রিয়া শুরু হয়। মূলত দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ খাবারের সময় থাকে, কোনওদিন সুযোগ পেলে সেই সময়ই খাবার খেয়ে একটু ঘুমিয়ে নেন তাঁরা। ফের রাত অবধি চলতে থাকে একটানা চিতা সাজানো দেহ সরকারের কাজ।

এত পরিমাণে মৃতদেহ আসতে শুরু করেছে যে একটানা কাজ করতে গিয়ে সুরক্ষা বলয় বলতে শুধুমাত্র মাস্কেই ভরসা করতে হচ্ছে। অত্যধিক গরমে প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই গলে যায়। ফলে উপায় নেই। একমাত্র অবলম্বন মাস্ক হলেও জ্বলন্ত চিতার ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে আসে সর্বদা। তারই মাঝে চলছে লাগাতার মৃতদেহ পোড়ানোর কাজ।

আরও পড়ুন:প্রতিদিন দিল্লিকে ৭০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন দিতে হবে কেন্দ্রকে, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

দিল্লির গাজীপুর শ্মশানে কর্মরত ১৯ বছরের এক যুবক জানান, করোনা সংক্রমনের সময় মৃতদেহের চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে গত বছর ৫ জন কর্মী কাজ ছেড়ে চলে যান। তবে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে কিছু হলে তো চলবে না আমাদের। তাই কঠিন এই পরিস্থিতি সামাল দিতে যতখানি সম্ভব অনবরত কাজ করে যাচ্ছি আমরা। শ্মশানে করোনায় মৃত রোগীর দেহ কতটা বেড়ে গিয়েছে তা বোঝাতে ওই কর্মী জানান, বিগত দু মাসে মাত্র তিনবার বাড়ি গিয়েছেন তিনি। দিনে ২৪ ঘন্টায় শ্মশানে থাকতে হচ্ছে। দিল্লির পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ থেকেও আসছে করোনা রোগীর মৃতদেহ। পরিস্থিতি এমন যে মাসিক ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করা কর্মীরা এখনো টিকা নিতে যাওয়ারও সময় পাননি।

Advt

Previous articleপ্রতিদিন দিল্লিকে ৭০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন দিতে হবে কেন্দ্রকে, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
Next article২৪ ঘণ্টায় দেশ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ১৪ হাজার ১৮৮, মৃত্যু ৩,৯১৫