বিজেপি কর্মী খুনের ভিডিও আদতে ব্রাজিলের! সতর্ক হওয়ার অনুরোধ আইটি সেলকে

রাজ্যে  ভোট গণনার পরেও গোলমাল থামার নাম নেই। বরং ভোটের ফল বের হওয়ার পর সন্ত্রাস আরও বেড়েছে। যার বলি হতে হচ্ছে শাসকদলের কর্মী সমর্থকদের ।

দিনকয়েক আগে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় ৷ যেখানে দেখা গিয়েছিল একদল দুষ্কৃতীর বেধড়ক মারে প্রাণ যায় এক ব্যক্তির ৷ বিজেপি দাবি করেছিল , উত্তম ঘোষ নামে ওই মৃত ব্যক্তি তাঁদের দলের কর্মী ৷ আরও এক ধাপ এগিয়ে, উত্তরপ্রদেশের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সভাপতি অমিত সিং সেই ভিডিওটি টুইটারে শেয়ার করেন ৷ শুধুমাত্র শেয়ার করেই থেমে থাকেননি তিনি । যাচাই না করেই দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো মৃত উত্তম ঘোষের স্ত্রীর বয়ানে লিখে দেন, তৃণমূলের কর্মীরা আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে টানতে টানতে নিয়ে যায় ৷ তাঁকে জয় শ্রীরাম বলতে বলে ৷ মারতে মারতে বলছিল, কোথায় এখন বিজেপির লোকেরা ? কোথাও এখন হিন্দুরা ? আমার স্বামীকে ওরা মেরে ফেলল ৷ ভিডিওটি ফেসবুকেও শেয়ার করা হয় ৷ হ্যাশট্যাগ দেওয়া ছিল #BangalBurning ৷
এরপর ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে ক্রমেই প্রকাশ্যে আসে আসল তথ্য। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, এই ভিডিওটির সঙ্গে রাজ্যের নির্বাচনের কোনও যোগসূত্রই নেই।
সুদূর ব্রাজিলে ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর জার্নাল ডি ব্রাসিলিয়া, আর- ৭, এসকুরিয়া ডায়েরিও, মোনোলিটোস পোস্টের মতো ব্রাজিলের একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ৷
এমনকি এই দেশের ঘটনাও নয় ৷ ঘটনাস্থল ছিল ব্রাজিলের সিয়েরা এলাকার প্রাইয়া ডু ফরটালেজা ৷
পুলিশ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল যে ওয়েসলি টিয়াগো ডি সউসা কারভালো নামক ব্যক্তিকে কুড়ুল, পাথর ও বাগান পরিচর্যার সামগ্রী দিয়ে আক্রমণ করেছিল দুষ্কৃতীরা ৷

ভিডিওটি ভুয়ো প্রমাণিত হওয়ার পর মুখ লুকানোর জায়গা নেই বঙ্গ বিজেপির ৷ বিজেপি মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদারের সাফাই, ‘ভোট পরবর্তী হিংসার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার সময় আরও সতর্ক হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ও আইটি সেলের ইনচার্জ অমিত মালব্যকে অনুরোধ করেছে বঙ্গ বিজেপি ৷ যাতে সঠিক ভিডিও শেয়ার করা হয়, সেই অনুরোধও করা হয়েছে ৷
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে শুধুমাত্র সাফাই দিয়েই কী হাত ধুয়ে ফেলা যায়। যেখানে ভুয়ো ভিডিও ছড়ানোর জন্য শুক্রবারই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, সেখানে একটি সর্বভারতীয় দলের পক্ষ থেকে এই ভুয়ো ভিডিও যারা প্রচার করলেন তাদের কী শাস্তি হবে?
এই বিষয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন মুখ্য সচেতক তথা পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেছেন, বিজেপির কাজই হল মিথ্যে প্রচার করা । মিথ্যে প্রচার করে, মিথ্যে দেখিয়েই বিজেপি ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল । কিন্তু বাংলার মানুষ তাঁদের ছুড়ে ফেলে দিয়েছে । এইরকম মিথ্যা ভিডিও প্রচার করে হিংসা ছড়াতে চাইছে বিজেপি । রাজ্যের মানুষ ওদের প্ররোচনায় পা না দিয়ে সত্য খুঁজে বের করবছেন । আর তখনই বেআব্রু হয়ে যাচ্ছে বিজেপির মিথ্যাচার ।

Advt

Previous articleসাংসদ পদে ইস্তফা দিলে জেতা অসম্ভব, দিল্লির চাপে বিধায়ক- শপথ নিলেন না নিশীথ-জগন্নাথ
Next articleএকদিনে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ছাড়াল ১৯ হাজার, বাড়ল সুস্থতার হারও