Saturday, May 17, 2025

বিজেপির ‘বিভাজন নীতি’ বুমেরাং, বঙ্গে গেরুয়ার ব্যর্থতার কারণ তুলে ধরল সমীক্ষা

Date:

ঊনিশে à§§à§® আসন পেয়ে বিজেপির দাবি ছিল, “ঊনিশে হাফ, একুশে সাফ”। স্লোগান অনুযায়ী লড়াইয়ের ময়দানে নেমে অবশ্য কোনো খামতি রাখেনি গেরুয়া শিবির, দিল্লির(Delhi) প্রায় সমস্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল বঙ্গ যুদ্ধের সেনা হিসেবে। তারপরও শোচনীয় পরাজয়। ডবল ইঞ্জিনের স্বপ্নকে ভেঙেচুরে ডাবল সেঞ্চুরি পার করে পাঁচ বছরের জন্য ফের বাংলার মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এত স্ট্র্যাটেজি, এত টাকা খরচ, মোদী- অমিত শাহের মতো নেতৃত্বদের ডেইলি প্যাসেঞ্জার হয়ে যাওয়ার পরও ১০০-র গণ্ডি পার করতে পারেনি বিজেপি(BJP)। থমকে গিয়েছে à§­à§­-এ। এমনকি যে লোকসভা কেন্দ্র গুলিতে ঊনিশে বিজেপি জিতেছিল সেখানেও চূড়ান্ত খারাপ ফল। গেরুয়া শিবিরের এহেন ব্যর্থতার পিছনে সম্প্রতি একাধিক কারণ প্রকাশ্যে আনল ভোটবিন্যাস নিয়ে গবেষণা করা সংস্থা লোকনীতি-সিএসডিএস(CSDS)। সেখানেই উঠে এলো একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

এই সমীক্ষক সংস্থার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে সামগ্রিকভাবে গরিব নিম্নবর্গ এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ভোট বিজেপি তুলনায় অনেক বেশি পেয়েছে তৃণমূল। পাশাপাশি মুসলিম ভোটের সিংহভাগ এবং হিন্দু ভোট বেড়েছে ঘাসফুল শিবিরের। সমীক্ষক সংস্থার দাবি, বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির লক্ষ্য ছিল বিভাজনের মাপকাঠিতে ভোট করা। দেশের একাধিক রাজ্যে এই ছক কষেই বাজিমাত করেছে গেরুয়া শিবির। তবে বঙ্গে এই সূত্রে অংক মেলেনি। বিজেপির সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে মেনে নেয়নি বাংলার মানুষ, উল্টে এই নীতি বুমেরাং হয়েছে বিজেপির জন্য। যার ফলে এই ভরাডুবি। হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে বিপুলসংখ্যক মানুষ ভোট দিয়েছে তৃণমূলকে।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে ৩২ শতাংশ হিন্দু ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। একুশের নির্বাচনে সেই ভোট বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ শতাংশে। এবং সবচেয়ে বড় বিষয় হলো নিম্নমধ্যবিত্ত মহিলারা ঢেলে ভোট দিয়েছে তাদের প্রিয় মমতা দিদিকে। সমীক্ষক মহলের দাবি, রাজ্যে নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রচারে নামা বিজেপির প্রতিশ্রুতি বাংলার মহিলাদের কাছে ঠেকেছে ‘মদ্যপের মুখে মদ্যপান বিরোধী ভাষণ’-এর মত। হাথরস সহ বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তর প্রদেশে একের পর এক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা বঙ্গ বিজেপির নারী সুরক্ষা নিয়ে ভাষণে বিশ্বাস জোগাতে পারেনি । ২০১৯ সালের তুলনায় গরিব হিন্দু ভোট বিজেপি এবার খুইয়েছে। বঙ্গে à§­à§­ টি আসন পাওয়া বিজেপির বেশিরভাগ ভোট উচ্চবিত্ত ও ধনী সম্প্রদায়ের মানুষের। আর্থিকভাবে দরিদ্রতম অংশের ভোট তৃণমূল পেয়েছে ৫০ শতাংশ। বিজেপি ৩৬ শতাংশ। নিম্নবর্গের ভোট তৃণমূল পেয়েছে à§«à§§ শতাংশ। বিজেপি à§©à§« শতাংশ। মধ্যবিত্ত সমর্থন তৃণমূল পেয়েছে ৪৭ শতাংশ। বিজেপি পেয়েছে ৪০ শতাংশ। ধনী ও উচ্চবিত্তদের ৪৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি। আর তৃণমূল পেয়েছে ৪০ শতাংশ। ২০১৯ সালে কিন্তু ধনীদের à§«à§§ শতাংশ ভোট তৃণমূল পেয়েছিল বলে লোকনীতি সিএসডিএস সমীক্ষা জানাচ্ছে।

এর পাশাপাশি আরো যে কারণগুলি উঠে আসছে তার মধ্যে অন্যতম। রাজ্যের নেতাদের গুরুত্ব না দিয়ে বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কে অজ্ঞ কেন্দ্রীয় নেতাদের বাংলা চষে বেড়ানো ভালো চোখে নেয়নি সাধারণ মানুষ। নির্বাচনে ধাক্কার অন্যতম একটি কারণ দল বদলুদের ভিড়। বেশিরভাগ জায়গাতেই দেখা গিয়েছে দলবদলু প্রার্থীরা গোহারা হেরেছে তৃণমূলের প্রার্থীর কাছে। সংস্থার দাবি, মুসলিম ভোট নিজেদের দখলে রাখা তো বটেই হিন্দু ভোটের অধিকাংশ তৃণমূলের পেয়ে যাওয়া বিজেপির শোচনীয় ব্যর্থতা প্রমাণ করে। অন্যদিকে মহিলা ভোটের হিসাব যদি দেখা যায়, তবে গরিব মহিলাদের ভোট তৃণমূল পেয়েছে ৫২ শতাংশ। নিম্নবর্গের মহিলাদের ভোট পেয়েছে ৫৫ শতাংশ। মধ্যবিত্ত পরিবারের মা ও বোনেদের ভোট পেয়েছে ৪৫ শতাংশ। অবশেষে রাজ্যে সম্প্রীতির স্থিতাবস্থা, উন্নয়ন এবং সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের যোগফল হল এই ভোটের গতিপ্রকৃতি।

আরও পড়ুন:পাঁচ রাজ্যেই ভরাডুবি, ফের প্রশ্নের মুখে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্ব

বঙ্গে নির্বাচনী হাল-হকিকত দেখে চূড়ান্ত হতাশ অমিত শাহ ইতিমধ্যেই ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে উঠে পড়ে লেগেছেন। গোটা বিষয়টি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। আর সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়গুলি। নির্বাচনী প্রচারে চাকচিক্য বজায় রাখলেও নিচু স্তরে শুরু থেকেই সাংগঠনিক দুর্বলতা একটি ছিল। সেটা আরও প্রকট হয়ে ওঠে দল বদলুদের ভিড়ে, জেলার নেতাদের আত্মতুষ্টিতে এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর অধিক নির্ভরতায়।

Related articles

এবার নাম বদলের রাজনীতি বিহারে! গয়া হল ‘গয়াজি’

বিজেপি জমানায় নাম বদলের রাজনীতি নতুন নয়। আর তার শীর্ষে অবশ্যই যোগি আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তর প্রদেশ। তবে এবার...

আইএমএ বাংলার নির্বাচন বাতিল ঘোষিত! দুমাসে কমিটি গঠনের নির্দেশ

চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (IMA) রাজ্যের ২০২৫-২৭ নির্বাচন প্রক্রিয়াকেই বাতিল করে দেওয়া হল কেন্দ্রীয় শাখার তরফে। নির্বাচন...

নির্দেশ দেখে পদক্ষেপ: ডিএ নির্দেশে প্রতিক্রিয়া চন্দ্রিমার

রাজ্য সরকারের কর্মীদের ২৫ শতাংশ ডিএ (DA) দেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। এক ঘোষণায় সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ৯...

টুটু বোসের ইস্তফা প্রসঙ্গে দেবাশিসের পাল্টা মুখ খুললেন সৃঞ্জয়

মোহনবাগানে(Mohunbagan) নির্বাচনের ডঙ্কা বেজে গিয়েছে। সেইসঙ্গেই চড়তে শুরু করেছে উত্তেজনার পারদ। এই মুহূর্তে অবশ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল...
Exit mobile version